কলকাতা, 22 অগস্ট: গরু পাচার কাণ্ডে এ বার অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal) এবং তাঁর অনুগামীদের মোট 18টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সিবিআই-এর (CBI) আতস কাঁচের তলায় (Bank accounts of Anubrata Mondal)। তদন্ত নেমে সিবিআই গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, অনুব্রত মণ্ডলের এই বিপুল পরিমাণের সম্পত্তির উত্থান প্রায় 2014 সাল থেকে শুরু হয়েছে । অনুব্রত মণ্ডল শুধু নিজের নামে নয়, বরং তাঁর একাধিক অনুগামী ও আত্মীয়-স্বজনের নামে একাধিক জমি, বাড়ি ও বিভিন্ন কোম্পানির ফ্যাক্টরি কিনে রেখেছেন ।
তদন্তে নেমে এর আগে সিবিআই-এর গোয়েন্দারা অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর ঘনিষ্ঠের ফিক্সড ডিপোজিটের মোট 17 কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছেন । আর এ বার সিবিআই-এর নজরে রয়েছে মোট 18টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট । সূত্রের খবর, এই 18টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তদন্তে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিক এনে দিতে পারে সিবিআইয়ের গোয়েন্দাদের । তদন্ত নেমে সিবিআই গোয়েন্দারা প্রথমে মোট সাতটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংককে চিঠি পাঠান । সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ম্যানেজারদের সঙ্গে কথা বলে তদন্তকারী আধিকারিকরা জানতে পারেন যে, অনুব্রত মণ্ডলের আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে গরু পাচারের লভ্যাংশের টাকা পৌঁছে যেত । ফলে এখন সিবিআই-এর নজরে রয়েছে অনুব্রত মণ্ডল এবং তাঁর অনুগামীদের মোট 18টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট । প্রয়োজন হলে সেই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখবেন তাঁরা । ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথাও বলছেন গোয়েন্দারা ।
সম্প্রতি বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে গরু পাচার কাণ্ডে গ্রেফতার করে সিবিআই । তারপর থেকে দু দফায় সিবিআই হেফাজতে জেরা করা হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলকে । প্রথমদিকে অনুব্রত মণ্ডল সিবিআই জেরায় ভেঙে পড়লেও, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকার বার্তা শুনে ফের চাঙ্গা হয়ে ওঠেন অনুব্রত মণ্ডল । সিবিআই-এর অভিযোগ, অনুব্রত মণ্ডল তদন্তে একেবারেই সহযোগিতা করছেন না ।
আরও পড়ুন: কমান্ড হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর আজ ফের জেরা শুরু হবে অনুব্রতর
এ দিকে, বীরভূমের ভোলে বোম রাইস মিলে তল্লাশি অভিযানের পর এ বার শিব শম্ভু নামে অপর একটি রাইস মিলের হদিশ পেয়েছেন তদন্তকারীরা । আজ সকালে সেখানে সিবিআই-এর গোয়েন্দারা তল্লাশি অভিযান চালান এবং সেখানে যাঁরা আধিকারিক রয়েছেন তাঁদের সঙ্গে দফায় দফায় কথা বলছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা ।
আদালতে ইতিমধ্যেই অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে সিবিআই জানিয়েছে যে, অনুব্রত অত্যন্ত প্রভাবশালী এবং তিনি তদন্তে একেবারেই সহযোগিতা করছেন না । কিন্তু তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করাটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় । এরপরেই গত পরশু আসানসোলে সিবিআই-এর বিশেষ আদালতের তরফে বুধবার পর্যন্ত অনুব্রত মণ্ডলকে সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয় ।