কলকাতা, 30 জুলাই : কোরোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাজ্যবাসীর অন্যতম অস্ত্র সাবান আর হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার । WHO-র পরামর্শ কোরোনার থেকে বাঁচতে বার বার সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে । আর যেখানে জল বা সাবান পাওয়া সম্ভব নয়, সেখানে ব্যবহার করতে হবে আলকোহল যুক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার । তাতে অ্যালকোহলের মাত্রাও নির্দিষ্ট করে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা । বলা হয়েছে, হ্যান্ড স্যানিটাইজারে থাকতে হবে 70% অ্যালকোহল । সেটির ব্যবহারে অনেকটাই নিরাপদে থাকা যাবে । ফলে দেদার হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করছেন কলকাতাবাসী । কিন্তু জানেন কি আপনার কেনা হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার অনেক ক্ষেত্রেই নকল ? আজ তার প্রমাণ মিলল । কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ বাজেয়াপ্ত করল 1400 লিটার নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার । ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে দু'জনকে।
কলকাতা শহরের ফুটপাতে এখন হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ারের রমরমা কারবার । পানের দোকান হোক কিংবা অন্য কোনও দোকান, সর্বত্রই বিক্রি হচ্ছে রং-বেরঙের হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার । এদিকে কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়ে দিয়েছে, হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার বিক্রির জন্য কোনও লাইসেন্সের প্রয়োজন নেই । অর্থাৎ, যে কেউ যে কোনও দোকানে বিক্রি করতে পারবেন কোরোনা মোকাবিলার এই অস্ত্র ।
কলকাতা পুলিশের কাছে খবর আসে বাজারে ব্যাপকভাবে ঢুকছে নকল হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার । সূত্র মারফত খবর পেয়ে আজ হেয়ার স্ট্রিট থানা এলাকায় তল্লাশি চালায় এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চ এবং গোয়েন্দা বিভাগের অ্যান্টি রাউডি সেকশন । 4 নম্বর এজরা স্ট্রিটের একটি দোকানে রাখা ছিল ওই স্যানিটাইজ়ার । বিভিন্ন ধরনের কনটেনারে সেগুলি রাখা ছিল । কারা ওই স্যানিটাইজ়ার তৈরি করছে, তার কোনও বিবরণ ছিল না কনটেনারে । ওই স্যানিটাইজ়ার দোকানের মালিক রাজিব পাঞ্জাবি এবং জিয়াউদ্দিন কোথা থেকে ওই স্যানিটাইজ়ার পেয়েছে তা বলতে পারেনি । তারপরেই গ্রেপ্তার করা হয় ওই দুইজনকে । বাজেয়াপ্ত করা হয় স্যানিটাইজ়ার ।
গোটা দেশে প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা । কলকাতা শহর তার ব্যতিক্রম নয় । এ রাজ্যে প্রতিদিন প্রায় আড়াই হাজার মানুষ কোরোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। তাদের অনেকে ভেবে পাচ্ছেন না কীভাবে আক্রান্ত হলেন । কারণ, তাঁরা নিয়ম মতো, কোথাও হাত লাগলে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করেছেন। মেনে চলছেন স্বাস্থ্যবিধি । তারপরেও কীভাবে ? সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেল হয়ত আজ । অসাধু ব্যবসায়ীদের চক্রে রাজ্যবাসীর প্রাণের ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে । ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে কোরোনা মোকাবিলার চেষ্টা । কলকাতা পুলিশের তরফে এই ধরনের অভিযান আরও চালানো হবে বলে জানানো হয়েছে ।