কলকাতা, 16 অগস্ট: অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mondal) কথা মতো এককালে বীরভূমের পুলিশকর্মী থেকে পুলিশ সুপার (Superintendents of Police) পর্যন্ত বদলি হতেন । তাঁর প্রভাব এতটাই ছিল যে বীরভূম জেলার পুলিশ সুপার মানেই বলা হত কেষ্ট মণ্ডল অর্থাৎ অনুব্রত মণ্ডল । বীরভূমে কোন পুলিশ সুপার কাজ করবেন সেই সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্ত নাকি নিতেন বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলই । সূত্রের দাবি, তাঁর ইশারায় কাজ না করলেই ঘটে যেত অনর্থ ।
ইতিমধ্যেই বীরভূমে একাধিক জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে এবং এলাকার প্রশাসনিক ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, দেড় বছরের মধ্যে বীরভূম জেলায় প্রায় 12 জন পুলিশ সুপার বদলি হয়েছেন । 2015 সাল থেকে 2016 সালের মধ্যে এই 12 জন পুলিশ সুপারকে বদলি করা হয়েছে বলে খবর (12 Superintendents of Police transferred in 18 months in Birbhum) । আর এর কারণ অনুব্রত মণ্ডল ।
তবে এরম নজির আরও আছে । একদিনেই একই পদের জন্য ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে একাধিক আইপিএে পরিবর্তনেওর নজির আছে পশ্চিমবঙ্গে। কয়েক বছর আগে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের ডি আই জি (সিআইডি) পদে চার থেকে ছ'জন আইপিএসের বদল হয় খুব কম সময়ের মধ্যে।
সিবিআইয়ের অনুমান, গরু পাচারের নেটওয়ার্ক ঠিকঠাক রাখার জন্য অনুব্রত মণ্ডলের তৎকালীন দেহরক্ষী সায়গল হোসেন অনুব্রতর প্রভাব খাটাতেন (Cattle Smuggling Case) ৷ আর সেই প্রভাব খাটিয়ে একজন কনস্টেবল পদমর্যাদার পুলিশকর্মী হয়েও সায়গল রীতিমতো শাসানোর সুরে কথা বলতেন বীরভূম জেলার তৎকালীন একাধিক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে। কোন রাস্তা দিয়ে পাচার হবে, সেই সময় কোন পুলিশ অফিসার কোন জায়গায় কর্মরত অবস্থায় থাকবেন, সেই সমস্ত কিছুর নীল নকশা বা ব্লু প্রিন্ট তৈরি করতেন সায়গল হোসেন ।
আরও পড়ুন: জেরার জন্য সুস্থ অনুব্রত, সিবিআইকে জানাল কমান্ড হাসপাতাল
এই বিষয়ে রাজ্য পুলিশের প্রাক্তন এডিজি নজরুল ইসলামের দাবি, "অনুব্রত মণ্ডলকে বরাবর সমর্থন জুগিয়ে এসেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee) । এমনকি গ্রেফতারের পরেও অনুব্রত মণ্ডলের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন দলনেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী । ফলে অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিরকালেরই একটি ভালো সম্পর্ক রয়েছে । পুলিশ আধিকারিকরা ভালোভাবেই সেটা জানেন এবং অনুব্রত মণ্ডলকে চটানো মানে পরোক্ষভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চটানো । ফলে বীরভূম জেলায় থাকতে গেলে অনুব্রত মণ্ডলেরই কথা শুনে এবং তাঁর অঙ্গুলিহেলনে কাজ করতে হবে । যাঁরা করতে পারতেন না তাঁরা বদলি হয়ে গিয়েছেন ।" সব দেখে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজ্য পুলিশের এক উচ্চোপদস্থ আধিকারিকের প্রশ্ন,আইপিএস পোস্টিংয়ের একটি নিয়ম আছে ৷ বিশেষ পদ্ধতি মেনেই তা করতে হয়। নোটিফিকেশন জারিও করতে হয় ৷ এখন কি আর সেসব মানা হয় না ?