হাওড়া, 8 জুন: নবান্নের (Nabanna) নর্থ গেটে চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ (TET Agitation)। বুধবারের এই কর্মসূচি পূর্ব ঘোষিত হলেও বিক্ষোভকারীদের আটকাতে ব্য়বস্থাপনার অভাব ছিল স্পষ্ট ৷ কার্যত পুলিশের ব্যর্থতার কারণেই নিরাপত্তাবেষ্টনী পার করে নবান্নের পার্শ্ববর্তী বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত পৌঁছে যান বিক্ষোভকারীরা। এর ফলে নর্থ গেটের সামনে পুলিশের সঙ্গে চাকরিপ্রার্থীদের রীতিমতো ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে জোর করে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হলে চাকরিপ্রার্থীরা স্লোগান দিতে শুরু করেন। মহিলা পুলিশকর্মীদের সঙ্গে মহিলা চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য বিক্ষোভকারীদের অধিকাংশকেই গ্রেফতার করে শিবপুর থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযান ঘিরে অশান্তি ছড়ায় নবান্ন সংলগ্ন এলাকাতেও ৷
চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, 2014 সালে পরীক্ষায় পাশ করেছেন তাঁরা ৷ তারপর দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেলেও কপালে চাকরি জোটেনি ৷ এমনকী, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিলেও পরিস্থিতির কোনও বদল হয়নি ৷ এই পরিস্থিতিতে একপ্রকার বাধ্য হয়েই তাঁরা বিক্ষোভে সামিল হন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা ৷ তাঁদের বক্তব্য়, "আমাদের অবিলম্বে চাকরি দিতে হবে। চাকরি না পেলে খাব কী?" এদিন নবান্নের গেটের কাছে মিছিল করেন চাকরিপ্রার্থীরা ৷ তাঁদের মিছিল আটকাতে রাস্তায় নামে প্রচুর পুলিশ ৷
আরও পড়ুন: Job Aspirants Agitation : বারুইপুর কলেজের 'গ্রুপ ডি' ও 'গ্রুপ সি' চাকরিপ্রার্থীদের বিক্ষোভ
এদিন বিক্ষোভকারীদের তরফ থেকে একটি লিখিত বিবৃতি সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়েছে, 2020 সালের ডিসেম্বর মাসে, অর্থাত্ একুশের বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক থেকে ঘোষণা করেছিলেন, ৭ হাজার ৫০০ জন টেট উত্তীর্ণকে অবিলম্বে নিয়োগ করা হবে ৷ এরপর ভোট শেষ হলে গত বছরের জুন মাসে তিনি বলেছিলেন, 2022 সালের মার্চের মধ্যেই নিয়োগ সম্পন্ন হয়ে যাবে ৷ কিন্তু, মার্চের পর এপ্রিল, মে কেটে গিয়েছে ৷ অথচ, নিয়োগের নামগন্ধ নেই ৷ চাকরিপ্রার্থীরা প্রশ্ন তুলেছেন, "কেন এই নিয়োগে এত দুর্নীতির গন্ধ ? কেন টেট পাশ করা প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা আজ কলকাতার ফুটপাতে ?"
প্রসঙ্গত, এদিন যেভাবে নবান্নের নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেদ করে চাকরিপ্রার্থীরা সরাসরি ডোমজুড়ের দিক থেকে এসে নর্থ গেটে বিক্ষোভ দেখালেন, তাতে রাজ্যের প্রধান প্রশাসনিক ভবনের নিরাপত্তা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেল! সূত্রের একাংশের দাবি, হাওড়া স্টেশন চত্বরে মূল কর্মসূচি থাকলেও এদিন যে চাকরিপ্রার্থীরা নবান্নের সামনেও বিক্ষোভ দেখাতে পারেন, সেই সম্পর্কে নাকি পুলিশের কাছে খবরই ছিল না! এই বিষয়টিকে গোয়েন্দা বিভাগের ব্যর্থতা হিসাবেই দেখা হচ্ছে ৷