হাওড়া, 11 জুন: মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনই সার ৷ এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হল না হাওড়ার পরিস্থিতি (Howrah Chaos) ৷ পয়গম্বর বিতর্ককে (Prophet Remarks Row) ইস্যু করে প্রতিবাদের জেরে অশান্তি ছড়িয়েছে জেলার নানা অংশে ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee) আন্দোলনকারীদের শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানালেও তাতে বিশেষ লাভ হয়নি ৷ এই অবস্থায় পরিস্থিতি যাতে নতুন করে আরও খারাপ না হয়, তা নিশ্চিত করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করল পুলিশ ও প্রশাসন ৷ হাওড়ার মহকুমাশাসক ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী 13 জুন সকাল 6টা পর্যন্ত এই এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকবে ৷ পাশাপাশি, আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ইতিমধ্যেই 50 জনেরও বেশি অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷
পুলিশের বক্তব্য, গুজব ঠেকাতেই ইন্টারনেট পরিষেবা সাময়িক বন্ধ রাখা হচ্ছে ৷ পাশাপাশি, জমায়েতের উপরেও রাশ টানা হচ্ছে ৷ কোথাও পাঁচজনের বেশি মানুষ একত্রিত হলেই পুলিশের কর্মীরা তাঁদের সেখান থেকে সরিয়ে দিচ্ছেন ৷ তবে, পুলিশ ও প্রশাসনের অবস্থান নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে বিরোধী বিজেপি ৷ তাদের বক্তব্য, যখন এলাকায় অশান্তি ছড়াল, তখনই কেন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হল না? কেন অশান্তি শুরু হওয়ার 72 ঘণ্টা পর ধরপাকড় শুরু করা হল?
আরও পড়ুন: Howrah CP-SP Transfer : হাওড়ায় অশান্তির পর সরানো হল সিপি ও গ্রামীণের এসপি-কে
বিজেপি নেতা উমেশ রাই এই প্রসঙ্গে বলেন, পুলিশের ব্যর্থতার কারণেই আজ জেলায় 144 ধারা জারি করতে হচ্ছে ৷ ইতিমধ্যেই আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ডোমজুড় থানা এবং স্থানীয় বিজেপি অফিসে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে ৷ যা নিয়ে সরব হয়েছেন গেরুয়া নেতারা ৷ এই আন্দোলনের সঙ্গে জিহাদের তুলনা করেছেন উমেশ রাই ৷ এই পরিস্থিতির জন্য রাজ্য়ের সরকারের উপরেই যাবতীয় দায় চাপিয়েছেন ওই বিজেপি নেতা ৷ প্রসঙ্গত, শুক্রবার দুপুর থেকে হাওড়ার পাঁচলা, রানিহাটি ও উলুবেড়িয়ায় নতুন করে অশান্তি ছড়ায় ৷ পরিস্থিতি সামাল দিতেই শুরু হয় ধরপাকড় ৷ এখনও পর্যন্ত উলুবেড়িয়ায় তিনজন, রাজাপুরে পাঁচজন, পাঁচলায় 22 জন, ডোমজুড়ে পাঁচজন এবং সাঁকরাইল থেকে 18 জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷ শনিবার ধৃতদের আদালতে পেশ করা হয় ৷ বিচারক সকলকেই 14 দিনের জন্য বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন ৷
এর পাশাপাশি, উপদ্রুত এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে টহলদারি শুরু করেছে পুলিশ ৷ মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তাবাহিনী ৷ পাড়ায় পাড়ায় মাইকিং করে বাসিন্দাদের শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানানো হচ্ছে ৷