হাওড়া, 8 অগস্ট: ফের কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকায় দুর্নীতির অভিযোগ উঠল হাওড়া পৌরনিগমের বিরুদ্ধে । ঘটনার সূত্রপাত 2000 সালের ফেব্রুয়ারি মাসে । হাওড়া পৌরনিগমের (Howrah Municipal Corporation) অন্তর্ভুক্ত 22 নম্বর ওয়ার্ডে ঘটা করে চালু হয় 'গ্রিন হাওড়া, ক্লিন হাওড়া' প্রকল্প । এই প্রকল্পটি মুখ্য পরিকল্পনা হিসাবে গ্রহণ করা হয় পৌরনিগমের পক্ষ থেকে ।
অভিযোগ, 'স্বচ্ছ ভারত মিশন' একটি কেন্দ্রীয় প্রকল্প হওয়া সত্ত্বেও এর নাম পরিবর্তন করে নির্মল বাংলা করে দেওয়া হয় । পাশাপাশি এই প্রকল্পে পুরো হাওড়া জুড়ে জঞ্জালের ভ্যাট শূন্য শহর গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয় । আর তা কার্যকর করতে 'নীলু' ও 'পচু' নামে ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের দুটি করে বালতিও দেওয়া হয় । একটিতে পচনশীল দ্রব্য ও অপরটিতে অপচনশীল দ্রব্য ফেলার জন্য দেওয়া হয় । এছাড়াও পৌরনিগমের তরফে প্রতি বাড়ি থেকে জঞ্জাল তোলার জন্য 250টি টোটো গাড়ি কেনা হয় । অভিযোগ, ওই গাড়িগুলোর মধ্যে বর্তমানে মাত্র 20টি গাড়ির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে । বাকি গাড়িগুলোর কী হল তাঁর কোনও তথ্য পৌরনিগমের কাছেও নেই(Allegation of corruption against Howrah Municipal Corporation) ।
হাওড়া পৌরনিগমের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বিজেপির রাজ্য সম্পাদক উমেশ রাই বলেন, "গ্রিন হাওড়া, ক্লিন হাওড়া প্রকল্পের জন্য 250টি নতুন টোটো গাড়ি কেনা হয়েছিল । সেগুলোকে চলমান ভ্যাট বানিয়ে বাড়ি বাড়ি থেকে জঞ্জাল সংগ্রহ করাই ছিল উদ্দেশ্য । ওই গাড়িগুলো হাওড়ার টিকিয়াপাড়া এলাকাতে রাখা ছিল । এরপর হাওড়া গ্রিন হল না ক্লিনও হল না । মাঝখান থেকে অতগুলো টোটোর কোনো সন্ধান নেই পৌরনিগমের কাছে ।"
তিনি আরও অভিযোগ করেন, "ওই টাকা কে লুট করল তারও কোনো হদিশ নেই । চূড়ান্ত অব্যবস্থার মধ্যে হাওড়া শহর রয়েছে । সাফাইকর্মীরা তাঁদের পারিশ্রমিক পাচ্ছে না । কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় কাজের সরঞ্জাম পর্যন্ত নেই তাঁদের কাছে । এখন আবার নতুন করে গাড়ি কেনা হচ্ছে জঞ্জাল সাফাইয়ের জন্য ।"
উমেশ রাই বলেন, "হাওড়া পৌরনিগমের একটাই উদ্দেশ্য ৷ নতুন নতুন পরিকল্পনা এনে টাকা লুট কীভাবে করা যায়, কীভাবে কাটমানি খাওয়া যায় । তিনি বিস্ফোরক দাবি করে বলেন, এই ডাস্টবিন স্বচ্ছ ভারত অভিযান প্রকল্পে দেওয়া হয়েছিল এলাকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য । হাওড়া পৌরনিগমের হিসাবের কোনও অডিট রিপোর্ট নেই । প্রকৃত তদন্ত হলে অনেক আর্থিক কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসবে । আর এইসব দুর্নীতি ঢাকা দিতেই মাঝে মধ্যেই পৌর প্রশাসকমন্ডলীর পরিবর্তন হয় । অরাজনৈতিক লোকেদের পৌরনিগমে বসিয়ে প্রকৃত দুর্নীতি চেপে রাখা হয় ।"
আরও পড়ুন: বৃষ্টিতে ত্রিফলা বাতিস্তম্ভ বিভ্রাট থেকে বাঁচতে নতুন পরিকল্পনা হাওড়া পৌরনিগমের
যদিও যাবতীয় দুর্নীতির অভিযোগ শুনে পৌরনিগমের মুখ্য প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী বলেন, "বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য এই মুহূর্তে আমার হাতে নেই । তবে যখন সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে এই অভিযোগ উঠছে তখন বিষয়টি নিয়ে আমি তদন্ত করে দেখব । আর সেই তদন্তে যদি দেখা যায় জনসাধারণের অর্থের অপচয় হয়েছে তাহলে সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা পৌরনিগম করবে ।"