দুর্গাপুর, 6 সেপ্টেম্বর : অশান্তি ছিল নিত্যদিনের বিষয় ৷ রবিবার রাতে তা মাত্রা ছাড়ায় ৷ পোষা কুকুরের বেল্ট স্ত্রীর গলায় পেঁচিয়ে খুন করে বসেন স্বামী ৷ তারপর আবার নিজেই যান থানায় আত্মসমর্পণ করতে ৷ অভিযুক্তকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর বাড়িতে আসে পুলিশ ৷ এসে দেখা যায়, সত্যিই খুন হয়েছেন মহিলা ৷
পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসা থানার বামুনাড়ায় একটি বহুতল আবাসনে থাকতেন ব্যাঙ্ক আধিকারিক বিপ্লব পরিদা ও তাঁর স্ত্রী ইপ্সা প্রিয়দর্শনী ৷ দুর্গাপুরের মামড়া বাজারের সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের আ্যসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার পদে কর্মরত বিপ্লব ৷ রবিবার রাতে ঘটনার পর বিপ্লব নিজেই মোটরবাইক চালিয়ে কাঁকসা থানায় যান ৷ কাঁকসা থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিককে বলেন, "আমি আমার স্ত্রীকে খুন করে এসেছি । আপনারা চলুন ।" সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ তাঁকে নিয়ে তাঁর ফ্ল্যাটে যায় এবং ঘরের দরজা খুলে দেখা যায়, বছর পঁয়ত্রিশের ইপ্সা প্রিয়দর্শনীর দেহ পড়ে আছে মেঝেতে ।
ওড়িশার কটকের বাসিন্দা বিপ্লব পরিদা জানান, 2019 সালে দুই বাড়ি থেকে দেখাশোনা করেই তাঁদের বিয়ে হয় । ইপ্সাও কটকের বাসিন্দা ৷ কর্মসূত্রে বামুনাড়ায় তাঁরা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন ৷ বিপ্লবের কথায়, "অশান্তি লেগেই থাকত । বিয়ের পর থেকেই এমন চলছে ৷" তাঁর অভিযোগ, সংসারের দিকে কখনওই নজর থাকত না ইপ্সার ৷ দু'দিন অন্তরই শপিংয়ের ঝোঁক ছিল তাঁর ৷ সেই খরচ জোগানো সব সময় সম্ভব হত না ৷ তা নিয়ে অশান্তি লেগেই থাকত ৷ তার উপর বেড়াতে যাওয়ায় বায়নাও লেগেই থাকত ৷ শেষ কিছুদিন ধরে ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে ভর্তি হওয়ার বায়না শুরু হয়েছিল ৷ বাড়িতে রান্নাবান্নার অনেকটাই বিপ্লবকেই সামলাতে হত কারণ ঘরকন্যার কোনও দায়িত্বই ইপ্সা নিতেন না বলে জানান অভিযুক্ত ৷ রবিবার অশান্তি এতটাই বেড়ে যায় যে উত্তেজিত হয়ে তিনি পোষা কুকুরের গলার বেল্ট দিয়ে স্ত্রীর গলায় ফাঁস লাগিয়ে খুন করেন ।
পুলিশের অনুমান, স্ত্রীর চাহিদা ও অত্যাচার দিন দিন বাড়ছিল ৷ তা আর সহ্য করতে না পেরেই বিপ্লব স্ত্রীকে খুন করেন ৷ কাঁকসা থানার পক্ষ থেকে ইপ্সার বাড়িতে খবর পাঠানো হয়েছে ৷ ইপ্সার বাপের বাড়ির লোকজন এলে আরও কিছু জানা যাবে । খবর দেওয়া হয় বিপ্লবের ব্যাঙ্কের শাখার ম্যানেজারকেও ৷ থানায় তিনিও উপস্থিতি হন ।
আরও পড়ুন : Murder : বচসা থেকে হাতাহাতির জেরে দুর্গাপুরে খুন, পলাতক অভিযুক্ত