দুর্গাপুর, 2 সেপ্টেম্বর: ছেলে ও বউমার নিত্যদিনের অত্য়াচার সহ্য করতে না-পেরে চরম সিদ্ধান্ত নিলেন বৃদ্ধি দম্পতি (Elderly Couple Attempts Suicide) ! বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন তাঁরা ৷ তাতে বৃদ্ধ সফল হলেও গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁর বৃদ্ধা স্ত্রী ৷ পশ্চিম বর্ধমানের (Paschim Bardhaman) দুর্গাপুরের (Durgapur) এই ঘটনা সামনে আসার পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা ৷ অভিযুক্ত পুত্রবধূর দিকে একটা সময় তেড়েও যান তাঁরা ৷ তবে, পুলিশের হস্তক্ষেপে নতুন করে কোনও অঘটন ঘটেনি ৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রয়াত বৃদ্ধের নাম চিত্তরঞ্জন দাস ৷ তিনি দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ৷ সপরিবার থাকতেন দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপের রানা প্রতাপ রোডে ৷ তাঁর পরিবারে অন্য সদস্য বলতে রয়েছেন, চিত্তরঞ্জনের স্ত্রী লিপিকা দাস, ছেলে সঞ্জয় দাস এবং বউমা সোমা দাস ৷ সঞ্জয় ও সোমার একটি ছেলেও রয়েছে ৷ সেও একই বাড়িতে থাকে ৷
আরও পড়ুন: দম্পতির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, আত্মহত্যা বলে অনুমান পুলিশের
পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাতে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন চিত্তরঞ্জন ও লিপিকা ৷ শুক্রবার সকালে দীর্ঘক্ষণ তাঁরা ঘরের দরজা না খোলায় সন্দেহ হয় সঞ্জয় ও সোমার ৷ প্রতিবেশীরাও সব ঘটনা জানতে পারেন ৷ এরপর বৃদ্ধ দম্পতির ঘরের দরজা ভেঙে ফেলা হয় ৷ সেখান থেকেই চিত্তরঞ্জন ও লিপিকাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ সেখানেই চিত্তরঞ্জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা ৷ লিপিকা গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় তাঁকে দুর্গাপুরেরই একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৷
এদিকে, এই ঘটনার পর থেকেই অশান্তি শুরু হয় দাস দম্পতির পাড়ায় ৷ বাড়ির বাইরে প্রতিবেশীদের ভিড় জমে যায় ৷ তাঁরা জানান, দীর্ঘদিন ধরেই সঞ্জয় ও সোমা বৃদ্ধ দম্পতির পর অত্য়াচার চালিয়ে আসছিলেন ৷ এলাকার সকলেই এই ঘটনা জানতেন ৷ কিন্তু, পরিস্থিতির কোনও বদল হয়নি ৷ তবে, এদিন সোমা তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা কোনও অভিযোগ মানতে চাননি ৷
অন্যদিকে, সোমার বাবা মিহিরকুমার বিশ্বাস বলেন, "আমার জামাই সঞ্জয় দাস এই ঘটনার জন্য দায়ী ৷ আমার মেয়েকে আমার জামাই প্রচণ্ড জ্বালাতন করত ৷ গত 13 বছর ধরে আমরা এই অত্যাচার সহ্য করেছি ৷ আমার জামাই সেভাবে কোনও কাজ করত না ৷ আমার মেয়েকে শ্বশুরবাড়িতে ঠিকমতো খেতেও দেওয়া হত না ৷" পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ৷