বোলপুর এবং রানিগঞ্জ, 27 মার্চ : মূল প্রবেশপথ বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড করা , কোথাও আবার গরুর গাড়ির চাকা দিয়ে ব্যারিকেড । আর বাঁশগুলির গায়ে টানানো রয়েছে কাগ়জ ৷ যাতে বড় বড় অক্ষরে লেখা 'গ্রামে প্রবেশ নিষিদ্ধ'। এই চিত্রই ধরা পড়ল বীরভুম এবং পশ্চিম বর্ধমানের গ্রামগুলিতে ৷ কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে পশ্চিম বর্ধমানের জামুড়িয়া এবং বীরভূমের একাধিক গ্রামের গ্রামবাসীরা এই ভাবেই নিজেদের সচেতন নাগরিক হিসাবে প্রমাণ করলেন ।
কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাই একমাত্র পথ । তাই দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে । লকডাউনের তৃতীয় দিনে বীরভূম জেলার রাস্তাঘাট জনশূন্য । ইতিমধ্যেই জেলার বল্লভপুর ডাঙ্গা, সরকার ডাঙ্গা, মহম্মদবাজার, সিয়ানের ডিহিপাড়া, মোলডাঙ্গা, বালিপাড়া, আমডাঙ্গা প্রভৃতি গ্রামের প্রবেশপথ বাঁশ দিয়ে ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছে । এমনকি, লিখেও দেওয়া হয়েছে 'গ্রামে প্রবেশ নিষেধ'। বাইরের মানুষজন যাতে গ্রামে প্রবেশ করতে না পারে ও গ্রামের মানুষ যাতে বেশি বাইরে না যায় সে বিষয়ে সচেতন করার জন্যই নেওয়া হয়েছে এই ব্যবস্থা । এই বিষয়ে বীরভূমের গ্রামবাসী প্রহ্লাদ দুলুই জানান, "লকডাউন যতদিন চলবে ততদিন বন্ধ থাকবে গ্রামের মূল প্রবেশ পথ । সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য প্রশাসনিক সচেতনতা বেশ কিছুটা কাজে লেগেছে ।"
বীরভূমের গ্রামবাসীদের সুরে সুর মিলিয়ে পশ্চিম বর্ধমানের মনোজ মণ্ডল বলেন, " গ্রামে অনেক বহিরাগত মানুষজনের আনাগোনা হচ্ছিল । গ্রামের পাশে তৈরি হচ্ছে নতুন কলোনি । সেই কলোনিতে বাড়ি তৈরি করার জন্য ভিন রাজ্য থেকে মিস্ত্রি ও লেবার এসেছে । সেই সমস্ত লোকেরা গ্রামে আসা-যাওয়া করছে । তাই গ্রামের মানুষকে কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত রাখার জন্য গ্রামে ঢোকার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে । তিনি আরও বলেন আমাদের গ্রামে ছাড়াও পাশে গ্রামগুলিতে একই ছবি দেখা পাওয়া যাবে । সব গ্রামে ঢোকার রাস্তার মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে ।"
গ্রামের এই সচেতনতার ছবি আর রাজ্যের বিভিন্ন শহরে অসচেতন নাগরিকদের সচেতন করতে পুলিশের লাঠিচার্জের ছবি পাশাপাশি রেখে বলাই যেতে পারে যে সচেতনতার দিকে গ্রামবাসীরা শহরবাসীদের থেকে একটু এগিয়ে আছে ৷