বর্ধমান: সকাল হতে না হতেই চায়ের দোকানে বিশুদার চায়ের দোকানে ভিড় উপচে পড়ে । শুরু হয় যায় বিশুদার হাঁকডাক । গণশা দুটো চা দিয়ে যা । ওই দিকের বেঞ্চে তাড়াতাড়ি চারটে লাল চা । ছোট্ট গণশা খদ্দের সামলাতে ব্যস্ত । রাতে বিছানায় শুতে না যাওয়া পর্যন্ত তার বিশ্রাম নেই । এরই মধ্যে চলে এসেছে দুর্গাপুজো । গণশা জানে পুজো আসছে কিন্তু দুর্গা পুজো সে কখনও দেখেনি । তাকে চায়ের দোকানে তো ছুটি দেওয়া হয় না । এরকমই অষ্টমীর দিন এক সকালে কাজের ফাঁকে চায়ের কেটলি হাতে নিয়ে গণশা পাশের পূজামণ্ডপে হাজির । অবাক চোখে মা দুর্গার দিকে তাকিয়ে থাকে । এই শিশুশ্রমের থিমই উঠে এসেছে বর্ধমানের পুজোতে ৷ ইচলাবাদের কিরণ সংঘের ভাবনায় অভিনবত্ব ৷ গণশার চোখে মা দুর্গা ৷ প্রতীকী শিশুশ্রমিক গণশা ৷
উদ্যোক্তা বলেন, ''মা দুর্গার দিকে তাকিয়ে গণশা ভাবতে থাকে তাহলে এটাই তার মা । মা-বাবাকে কোনদিন চোখে দেখেনি গণশা । পাড়ার লোকেরা অনাথ শিশুটিকে চায়ের দোকানে কাজ করতে দিয়ে যায় । সেই থেকে দোকান সামলাতে ব্যস্ত সে । মা দুর্গার দিকে তাকিয়ে তন্ময় হয়ে পড়ে সে । লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক সবাইকে দেখার পরে সে জানতে পারে ইঁদুর বাহনকে নিয়ে গণেশ বসে আছে । নিজের নামের সঙ্গে মিল থাকায় গণেশকে ভালো করে লক্ষ্য করে আর তখনই আনমনে গণেশের জায়গায় নিজেকে বসিয়ে কল্পনা করতে থাকে মায়ের কাছে বসে আছে সে ।''
বর্ধমান শহরে ইচলাবাদের কিরণ সংঘের থিম গণশার চোখে মা দুর্গা । শিশুশ্রম কীভাবে শৈশবকে সাঁড়াশি দিয়ে চেপে ধরে তা মণ্ডপের ভাবনায় তুলে ধরেছেন পুজো উদ্যোক্তারা । চায়ের দোকানের উপকরণ নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে মণ্ডপ ৷এখানে অসুর বধ বলতে শিশুশ্রম বধ করার কথা বলা হয়েছে ৷