বর্ধমান, 13 জুলাই : দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) বৈঠকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি ৷ গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয় ৷ তারপরই প্রকাশ্যে নিজের ক্ষোভ ব্যক্ত করলেন জেলা যুব মোর্চার ভাইস প্রেসিডেন্ট ইন্দ্রনীল গোস্বামী ৷ ক্ষোভ প্রকাশ করতে গিয়ে কেঁদেও ফেলেন তিনি ৷ তাঁর সঙ্গে বেশ কিছু বিজেপি কর্মীও ক্ষোভ প্রকাশ করেন ৷ ঘটনার জেরে বিশৃঙ্খলা ছড়ায় বৈঠকে ।
মঙ্গলবার বর্ধমানের জেলা কার্যালয়ে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসেন দিলীপ ঘোষ । সেখানেই বাধে এই গন্ডগোল ৷ বৈঠক থেকে বিতাড়িত বিজেপি নেতার অভিযোগ, তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত ৷ দিলীপ ঘোষ তাঁর বাড়িতে গিয়ে একাধিকবার খাওয়া দাওয়াও করেছেন । কিন্তু ইদানীং বিজেপিতে যাঁরা যোগ দিয়েছে তাঁদেরই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক আসতে দেওয়া হচ্ছে । তাঁদের মতো কর্মীদের সম্মান দিচ্ছে না দল । এছাড়াও তিনি দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগও করেন ।
বিক্ষুব্ধ ইন্দ্রনীল গোস্বামী বলেন, "দিলীপ ঘোষ দীর্ঘদিন ধরে আমার বাড়িতে থেকেছেন-খেয়েছেন । নির্বাচনের সময় যখন দরকার ছিল তখন আমাদের দিয়ে কাজ করিয়ে নিয়েছেন । আর এখন কিছু তোলাবাজ বিজেপি কর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে । বিজেপি দল করতে গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস আমার বাড়িঘর সব ভাঙচুর করে দিয়েছে । এরপর আমি দল ছেড়ে চলে যায়নি । কিন্তু এখন বিজেপি দলে আমাকে সম্মান দেওয়া হচ্ছে না ।" এনিয়ে বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক এসআর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "এদিন কার্যকারিণী বৈঠকে নির্দিষ্ট কিছু নেতা-কর্মীদের ডাকা হয়েছে । সেই মতো তাঁকে ডাকা হয়নি । তাঁর বিষয়ে জেলা নেতৃত্বকে জানানো হবে ৷"
এসবের মধ্যেও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দিলীপ ঘোষ ৷ পশ্চিমবঙ্গে জঙ্গি প্রবেশ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) তীব্র কটাক্ষ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি ৷ বলেন, "পশ্চিমবঙ্গে এই প্রথমবার নয় ৷ এর আগেও জেএমবি (Jamaat-ul-Mujahideen Bangladesh), আল-কায়দা (Al-Qaeda) জঙ্গিরা ধরা পড়েছে । জঙ্গিরা এখানেই আশ্রয় নেয় । সারা দেশ থেকে উগ্রপন্থীরা এখানে এসে ঘাঁটি গাড়ে । পশ্চিমবঙ্গ আজ উগ্রপন্থীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে । রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা এই পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে । আসলে পুলিশকে রাজনৈতিক কাজে লাগানো হচ্ছে ৷ তার জন্যই এসব ঘটছে ৷"
সোমবার রাতে বর্ধমানের মঙ্গলকোট তৃণমূলের ব্লক সভাপতি খুন হয় সেই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল ওঠে বিজেপির দিকে । সেই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, "বিজেপি কোনও খুনোখুনির কালচারে বিশ্বাস করে না । পাঁচ বছরে বিজেপির 175 জন কর্মী খুন হয়েছেন ৷ আমরাই হিংসার শিকার । যারা হিংসার রাজনীতি করছে তাদের কাটমানি সিন্ডিকেট নিয়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আছে । তার ফলেই এই খুনের ঘটনা । তৃণমূল নিজেদের গুন্ডা-বদমাইশদের সামাল দিক । তাহলেই পশ্চিমবঙ্গে হিংসা কমে যাবে ।"
আরও পড়ুন : পূর্ণমন্ত্রী প্রাপ্তিতে বঞ্চিত বাংলা, বিজেপিকে খোঁচা তৃণমূলের; পাল্টা দিলীপের