আসানসোল, 13 মার্চ : ওষুধের নাম "ইনফ্লুয়েঞ্জা। শিবির করে সেই ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছে বাসিন্দাদের। শিবির যাঁরা চালাচ্ছেন, তাঁরা দাবি করছেন এই ওষুধ খেলে নাকি কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। সকাল থেকেই এ নিয়ে শোরগোল আসানসোলের হিরাপুর থানার 8 নম্বর বস্তি এলাকায় । লোকজন রীতিমত লাইন দিয়ে কোরোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক নিয়ে যাচ্ছিল । বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনাস্থানে হিরাপুর থানার পুলিশ এসে এই শিবির বন্ধ করে। পুলিশ জানিয়েছে স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে এই শিবিরের কোনও অনুমতি ছিল না। সেই কারণে শিবির বন্ধ হয়েছে।
আজ সকাল থেকেই হিরাপুর থানার 8 নম্বর বস্তিতে স্বাস্থ্য শিবির করা হয়। রীতিমতো বোর্ড লাগিয়ে মানুষজনকে ওষুধ খাওয়ানো শুরু হয়। বোর্ডে লেখা ছিল কোরোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক বিলি করা হচ্ছে। এলাকায় খবর যেতেই মানুষ জন্য ভিড় জমায় শিবিরে। প্রায় দেড় হাজার মানুষ দুপুর পর্যন্ত এই ওষুধ খেয়েছেন শিবিরে গিয়ে । শিবিরের দায়িত্বে থাকা আসানসোল পৌরনিগমের এক অস্থায়ী কর্মী ভারতী সিনহা জানান "আমি শিবিরের খবর পেয়ে স্বেচ্ছাশ্রম দিতে এসেছিলাম । এখানে বিহার থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এসেছেন । কোরোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক এখানে দেওয়া হচ্ছে । এটা খেলে কোরোনা ভাইরাস হবে না ।" বিহার থেকে আগত চিকিৎসক অমরজিৎ সিং নিজেকে সরকারি ডাক্তার বলে দাবি করেন ৷ তিনি জানালেন "ভারত সরকারের আয়ুষ্মান প্রকল্পে যে ওষুধ দেওয়া হয় এটি সেই ওষুধ । শুধু কোরোনা নয় অন্য যেকোনো ধরনের জ্বর এবং চিকেন-পক্স বা ভাইরাস ঘটিত রোগের প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে । শুধু তাই নয়, মনের মধ্যে রোগ নিয়ে যে আতঙ্ক হয় এই ওষুধ খেলে সেই আতঙ্ক দূর হবে।"
বাসিন্দারা রীতিমত হামলে পড়েন এই ওষুধ খেতে । দীর্ঘ লাইন দিয়ে বাসিন্দারা ওষুধ খান । স্থানীয় এক বাসিন্দা শিবানি বাউরি জানান "এখন চারিদিকে আলোচনা । কোরোনা নিয়ে শুনলাম, এখানে ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে তার প্রতিষেধক হিসেবে। তাই আমরা খেয়ে গেলাম।"প্রশ্ন উঠেছে এই শিবির কি আদৌ বিজ্ঞানসম্মত? যেখানে গোটা বিশ্বে কোরোনার প্রতিষেধক খুঁজতে চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা চেষ্টা করছেন, সেখানে এই ধরনের শিবির করে দাবি করা হচ্ছে যে "ইনফ্লুয়েঞ্জা" নামে এই হোমিওপ্যাথি ওষুধ খেলে নাকি কোরোনার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে । ঘটনার খবর পেয়ে হিরাপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থানে আসে । যাঁরা শিবির চালাচ্ছিলেন তাদের কাছে স্বাস্থ্য দপ্তরের অনুমতি পত্র দেখতে চান । কিন্তু তাঁরা কোনও ধরনের অনুমতিপত্র দেখাতে পারেননি । পুলিশ শিবির বন্ধ করে দেয়। এরা কারা, কোথা থেকে এসেছিল, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে হিরাপুর থানার পুলিশ ।