আসানসোল, 2 ডিসেম্বর : ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে গোরু পাচার মামলায় ধৃত BSF কমান্ডান্ট সতীশ কুমারকে আজ আবার আসানসোলের CBI কোর্টে তোলা হল । এর আগে 18 নভেম্বর তাঁকে আদালতে তোলা হয়েছিল। তখন তাঁকে 14 দিনের CBI হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারক । আজ তাঁকে আবার কোর্টে তোলা হয়েছে । 14 দিনের CBI হেপাজতে থাকাকালীন, জেরায় কী তথ্য় উঠে এসেছে ? তা কোর্টে জানাবেন CBI গোয়েন্দারা ৷ পাশাপাশি সতীশ কুমারের আইনজীবী তাঁর জামিনের জন্য় দরবার করবেন ৷ তবে, তদন্তের স্বার্থে CBI তার বিরোধিতা করতে পারে বলে খবর ৷
অভিযোগ, 2015-17 সালে সতীশ কুমার যখন মালদাতে BSF কমান্ডান্ট হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন, তখনই তিনি গোরু পাচারকারীদের সঙ্গে জড়িয়ে যান ৷ সেই সময় তাঁর শ্বশুর তথা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেজ়ারার বাদলকৃষ্ণ সান্যালের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে 12.8 কোটি টাকা জমা পড়েছিল বলে আগের ট্রায়ালে উঠে এসেছিল। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সেই টাকার হদিস পাওয়া গেছে কি না, সে বিষয়েও জানা যেতে পারে ৷
অন্যদিকে, গ্রেপ্তার হওয়া গোরু পাচারকারী এনামূল হকের কম্পানিতে সতীশ কুমারের ছেলে চাকরি করত বলে খবর। সতীশ কুমারের ছেলের অ্যাকাউন্টেও হিসাব বহির্ভূত প্রচুর টাকা জমা পড়েছিল ৷ অনুমান করা হচ্ছে, গোরু পাচারের টাকাপয়সা লেনদেন করার জন্যই সতীশ কুমারের ছেলেকে নামকা ওয়াস্তে এনামূলের সংস্থায় কাজে ঢোকানো হয়েছিল । সূত্রের খবর, মালদায় সতীশ কুমার BSF কমান্ডান্ট থাকাকালীন পাচার হওয়া প্রায় কুড়ি হাজার গোরু আটক হয়েছিল। সেই গোরু যখন পরবর্তীকালে বিক্রি করা হয় সেখানেও নাকি প্রচুর টাকার গরমিল রয়েছে বলে অভিযোগ । জঙ্গিপুরে গোরু বিক্রি করার জন্য প্রতি গোরুতে BSF-কে 2000 টাকা দিতে হত বলে অভিযোগ উঠেছে।
2018 সালের 6 এপ্রিল এই মামলা শুরু হয়েছিল । তারপর থেকে সতীশ কুমারকে তিনবার নোটিস পাঠায় CBI। প্রথমবার নোটিস পাওয়ার পর তা এড়িয়ে যান সতীশ কুমার। দ্বিতীয় নোটিস পাওয়ার পর 32 দিন ধরে তিনি ছুটিতে ছিলেন বলে CBI-কে জানিয়েছিলেন BSF কমান্ডান্ট । ওই 32 দিন তিনি কলকাতায় থেকে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছেন বলে প্রথম শুনানিতে আদালতে জানিয়েছিলেন CBI এর আইনজীবী । তৃতীয় নোটিস পাওয়ার পর তিনি CBI এর কাছে যান এবং প্রায় 7 ঘণ্টা ধরে তাঁকে জেরা করা হয় ৷ তদন্তে অসহযোগিতা ও প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে CBI তাঁকে গ্রেপ্তার করে।