আসানসোল, 17 অগস্ট: একদিকে যখন কলকাতায় 'নতুন তৃণমূল' হোর্ডিং ঘিরে বাড়ছে কৌতূহল, ঠিক তখনই ফেসবুক পোস্টে (Facebook Post) দলের নেতৃত্ব সংক্রান্ত সমস্ত পদ (প্রাথমিক সদস্যপদ ছাড়া) ছাড়ার কথা ঘোষণা করলেন বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায় (Biswajit Chatterjee) ৷ এতদিন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন তিনি ৷ সেইসঙ্গে অন্য়ান্য পদও ছিল তাঁর কাছে ৷ সেই সবক'টি থেকেই তিনি অব্যাহতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিশ্বজিৎ ৷ একইসঙ্গে বিশ্বজিৎ স্পষ্ট করেছেন, নেতার পদ ছাড়লেও দল ছাড়ছেন না তিনি ৷ একজন সাধারণ কর্মী হিসাবেই দলের কাজ করে যাবেন তিনি ৷ প্রসঙ্গত, রাজনৈতিক মহলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের (Abhishek Banerjee) ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত বিশ্বজিৎ ৷ তাই তাঁর এই পদক্ষেপ নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা ৷
বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের জেলা নেতা উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি দাবি করেন, তাঁর কাছে এই সংক্রান্ত কোনও তথ্য নেই ৷ প্রবীণ নেতার বার্তা, বিশ্বজিতের কোনও সমস্যা হলে সরাসরি তাঁর সঙ্গে কথা বলতে পারেন ৷ বস্তুত, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ারই ইঙ্গিত দিয়েছেন উজ্জ্বল ৷ পরামর্শ দিয়েছেন দল না-ছাড়ার ৷
আরও পড়ুন: Abhishek to visit Alipurduar 9 ও 10 সেপ্টেম্বর আলিপুরদুয়ার সফরে যাচ্ছেন অভিষেক
অন্যদিকে, বিজেপি-র আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য হল, তৃণমূলের সবাই অসাধু ৷ তাঁরা কেউ চোর, কেউ ডাকাত ! "বড় ডাকাতরা প্রেস মিট করে নিজেদের নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করছেন ! আর ছিঁচকে চোররা ফেসবুকে লিখে দল ছাড়ছেন ! ইডি, সিবিআই-এর হাত থেকে বাঁচতেই এমন কাণ্ড ঘটাচ্ছেন তাঁরা ৷ আর কিছুদিন পর দলটার কোনও অস্তিত্বই থাকবে না ৷"
এদিকে, যাঁকে নিয়ে এত জলঘোলা, তিনি কিন্তু এসবে আমল দিতে নারাজ ৷ তাঁর সাফ কথা, তিনি মোটেও দল ছাড়ছেন না ৷ শুধুমাত্র হাতে থাকা পদগুলি ছাড়ছেন ৷ বিশ্বজিতের বক্তব্য, "অনেকেই পদের জন্য দল করেন ৷ কিন্তু, আমি মনে করি, পদ সব নয় ৷ অনেকেই আছেন, যাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে ভালোবেসে দল করেন ৷ আমিও যে তেমনই একজন সাধারণ কর্মী, সেটাই বোঝাতে চেয়েছি ৷ নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দলকে চিঠি পাঠিয়েছি ৷ এখনও আমাকে কেউ কিছু জানাননি ৷"
প্রসঙ্গত, কলকাতায় কয়েকদিন আগেই কয়েকটি নতুন হোর্ডিং পড়েছে ৷ সেই হোর্ডিংয়ে কোথাও মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের উল্লেখ নেই ৷ রয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নাম ও ছবি ৷ আর রয়েছে পরবর্তী ছ'মাসে 'নতুন তৃণমূল' গড়ার প্রতিশ্রুতি ৷ মানুষ যেমনটা তৃণমূলকে দেখতে চায়, ঠিক তেমনভাবেই দল গড়ে তোলার বার্তা দেওয়া হয়েছে ৷ এই হোর্ডিং দেখে অনেকেই তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের মধ্যে চিড় ধরার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ! এই প্রেক্ষাপটে বিশ্বজিতের পদক্ষেপ জল্পনা আরও বাড়িয়েছে ৷