কলকাতা, 4 জুলাই : ঘড়িতে ঠিক বিকেল ৪টে । ঘোষণা অনুয়ায়ী পৌরনিগমের কনফারেন্স রুমে ঢুকলেন তিনি । খাতা, কলম নিয়ে সঙ্গেই ছিলেন সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকরা । বাজতে শুরু করল ফোনের রিং । একের পর এক শুনলেন শহরবাসীর সমস্যার কথা । হঠাৎ তার মধ্যেই উঠে এল একটি চাকরির আর্জি । বরানগর থেকে এক মহিলা ফোন করে চাকরির জন্য আবেদন জানালেন মেয়রকে । ফোনে এই আবেদন শুনে প্রথমদিকে খানিকটা হকচকিয়ে গেলেও পরে, ওই মহিলাকে নগরায়ন দপ্তরে এসে দেখা করার কথা বললেন ফিরহাদ হাকিম ।
সোমবার সূচনা হয় টক টু মেয়র প্রোগ্রামের । মেয়র বলেছিলেন, প্রত্যেক বুধবার একঘণ্টা করে ফোনে থাকবেন তিনি । শহরবাসীর সমস্যা নিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন । সেইমতো গতকাল বিকেলে একের পর এক সমস্যা শুনছিলেন তিনি । হঠাৎ বরানগর থেকে এক মহিলা ফোন করেন মেয়রকে । বলেন, " আমার কোনও অভিযোগ নেই । আমার বাবা বরানগর পৌরসভায় চাকরি করতেন । 2014 সালে তিনি মারা যান । এরপর আমি চাকরির জন্য বহুজনকে বলেছিলাম কোনও সুরাহা হয়নি । আপনি যদি একটা চাকরির ব্যাবস্থা করে দেন ।" প্রথমদিকে খানিকটা হকচকিয়ে গিয়ে মেয়র বলেন, "এটা কলকাতা পৌরনিগমের ফোন ।" পরে বলেন ," আপনি নগরায়ন দপ্তরে আমার সেক্রেটারি কিংবা আমার সঙ্গে দেখা করুন । কিংবা বরানগরের পৌরপ্রধানকে বলুন আমার সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলতে ।"
টক টু মেয়রে গতকাল নানান সমস্যার কথা উঠে আসে । ঠাকুরপুকুর থেকে এক ব্যাক্তি জলের সমস্যার কথা জানান । বিজয়গড় থেকে এক মহিলা ফোন করে আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ার জন্য ট্যাক্স কম করার আর্জি জানান । B K পাল লেন থেকে এক ব্যক্তি এলাকায় বেআইনি নির্মাণে খবর দেন । এছাড়াও, কসবা থেকে একজন ফোন করে জানান, তাঁদের আড়াই কাঠা জমি আছে । কিন্তু, প্রতিবেশীর চাপে তিনি সেখানে কিছুই করতে পারছেন না । বেশি কিছু বললে জাভেদ খানের ভয় দেখাচ্ছেন । উত্তরে মেয়র বললেন, "আপনি ও ফিরহাদ হাকিমের নাম নিন । যদি সমস্ত কাগজপত্র ঠিক থাকে প্ল্যান জমা দিন । এখানে ভয় দেখানোর কোন জায়গা নেই । অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে ।"
নগরবাসীর সমস্যা কথা শোনার পর সাংবাদিক বৈঠকে ফিরহাদ হাকিম বলেন ,"আমি যা খবর পাচ্ছি মানুষ এই প্রোগ্রামের জন্য ভীষণ উৎসাহিত।" এতগুলি ওয়ার্ড, প্রত্যেকটিতে জনপ্রতিনিধি থাকা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষের সমস্যার সমাধান আপনাকে করতে হচ্ছে কেন? উত্তরে মেয়র বলেন, "জনপ্রতিনিধিরা প্রত্যেকেই দিন রাত কাজ করছেন । অনেক মানুষ আছে বাড়ি থেকে বেরতে পারেন না, তাঁরা ফোন করে মহানাগরিককে বললেন । আমিও তো জনপ্রতিনিধি, আমি তাদের হয়ে যদি কাজটা করি সমস্যা কোথায়?"