মালদা, 3 মে : শাসনের নামে এক ছাত্রের উপর অকথ্য অত্যাচার চালানোর অভিযোগ উঠল এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে । ঘটনাটি পুরোনো মালদা পৌরসভার শাকমোহন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের । আজ এই নিয়ে শোরগোল হতেই স্কুলে তালা মেরে কার্যত পালিয়ে যান অভিযুক্ত শিক্ষক । সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হননি তিনি । বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে চাননি পুরাতন মালদার স্কুল পরিদর্শকও । থানায় অভিযোগ জানাতে গেছিলেন ছাত্রের মা ।
শাকমোহন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রের মা ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কৌশিক রাউথের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন । ছাত্রের মা সরস্বতী সাহার অভিযোগ, "কোনও কারণে গত পরশু কৌশিক মাস্টারমশাই ছেলেকে বেধড়ক মারধর করেন । কঞ্চির আঘাতে ছেলের পিঠ ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে । গতকাল আমি সেকথা মাস্টারমশাইকে বলতে এসেছিলাম । আমার কথা শুনে মাস্টারমশাই আমাকে বলেন, তিনি আজও ছেলেকে মেরেছেন । আমি ছেলের পিঠের দিকে তাকিয়ে দেখি, গোটা পিঠ ফেটে গেছে । শিক্ষক হিসাবে তিনি ছেলেকে শাসন করতেই পারেন । কিন্তু এভাবে জানোয়ারের মতো মারতে পারেন কি? আমি এর বিচার চাই । এর আগেও ওই মাস্টারমশাই ছেলেকে মেরেছিলেন । গালে দাগ বসে গিয়েছিল । ছেলের জ্বর চলে এসেছিল । কিন্তু এবার মাস্টারমশাই যা করেছেন, তা মেনে নেওয়া যায় না । আমি এনিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানাব । আজ আমি প্রতিবাদ জানাতে ফের স্কুলে এসেছিলাম । কিন্তু তিনি স্কুলের হাজিরা খাতায় সই করে তালা মেরে চলে গিয়েছেন ।"
শুধু সরস্বতী সাহাই নয়, কৌশিকবাবুর বিরুদ্ধে ছাত্র নিগ্রহের অভিযোগে সরব হয়েছেন এলাকার আরও অনেকে । স্থানীয় লতা সরকার বলেন, "ওই মাস্টারমশাইয়ের ভয়ে ছেলেমেয়েরা স্কুলে আসতে চায় না । জোর করে পড়ুয়াদের স্কুলে পাঠাতে হয় । ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা না করতে পারে । কিন্তু সেকথা অভিভাবকদের না জানিয়ে এভাবে কেন মারধর করা হয়? গতবছর আমার ছেলেকেও ওই মাস্টারমশাই বেধড়ক মেরেছিলেন । গতকাল তিনি আর একজন বাচ্চাকে মারধর করেন । সেই ভয়ে আজ স্কুলে তালা দিয়ে পালিয়ে যান তিনি । এভাবে ছোটো ছোটো ছেলেমেয়েকে মারধর করার জন্য আমরা ওই মাস্টারমশাইয়ের বিচার চাই ।"
স্কুল থেকে সামান্য দূরে শর্বরী এলাকায় কৌশিকবাবুর বাড়ি । গোটা ঘটনা জানতে তাঁর বাড়ি যাওয়া হয় । বাড়িতে তাঁর উপস্থিতি টের পাওয়া গেলেও 30 মিনিটের ডাকাডাকিতে তিনি কোনও সাড়া দেননি । অবশেষে এই ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করা হয় পুরাতন মালদার স্কুল পরিদর্শক ভরত ঘোষকে । তিনি আগেই জানিয়ে দেন, ক্যামেরার সামনে কোনও কথা বলবেন না । তবে তিনি জানান, তিনি লোকমুখে এই খবর পেলেও এখনও পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগপত্র তাঁর কাছে জমা পড়েনি । গোটা ঘটনা না জেনে তিনি কোনও মন্তব্য করতে পারবেন না ।