কলকাতা, ১১ জুন : রোগীমৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা NRS মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে । অবস্থান-বিক্ষোভ করছেন জুনিয়র ডাক্তাররা । এর ফলে চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হাসপাতালে মোতায়েন রয়েছে পুলিশ ।
ট্যাংরার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব মহম্মদ সইদকে রবিবার হাসপাতালে ভরতি করানো হয়েছিল । পরিজনরা জানিয়েছেন, মাথা ঘুরছিল । এই কারণে মহম্মদ সইদকে ভরতি করানো হয় । সোমবার দুপুরেও রোগী ভালো ছিলেন বলে দাবি করেন তাঁরা । তবে, দুপুরের পর থেকে রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে । অভিযোগ, এই সময় চিকিৎসকদের বলা সত্ত্বেও দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়নি । বরং, বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে পরিজনদের ঘোরাঘুরি করতে হয়েছে । বিকেলের দিকে রোগীকে একটি ইনজেকশন দেন চিকিৎসকরা । তার কিছুক্ষণ পর রোগীর মৃত্যু হয় । এই ঘটনার জেরে পরিজনরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন । চিকিৎসকদের সঙ্গে তাঁদের বচসা বাধে । সেইসময় দু'পক্ষের হাতাহাতি হয় বলে অভিযোগ । এরপর রাত সাড়ে আটটা নাগাদ মৃতের আরও আত্মীয় স্বজন হাসপাতালে উপস্থিত হন । অভিযোগ ওঠে, মৃতদেহ ছাড়া হচ্ছে না ।
হাসপাতালে উত্তেজনার খবর পেয়ে আসে পুলিশ । ক্ষুব্ধ পরিজনদের হাসপাতালের বাইরে বের করে দেয় । হাসপাতালের গেট বন্ধ করে দেওয়া হয় । অভিযোগ ওঠে, জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে রোগীর এক পরিজন আক্রান্ত হন । এই অবস্থায় হাসপাতালে গেটের বাইরে থেকে ক্ষুব্ধ পরিজনরা ইট ছুড়তে থাকেন বলে অভিযোগ । এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির জেরে অন্য রোগীদের পরিজনরা ভয়ে হাসপাতাল চত্বর ছেড়ে চলে যান । ইটের আঘাতে এক জুনিয়র ডাক্তারের মাথা ফেটে যায়। তাঁকে বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে বলে জানা গেছে । এরপরই হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে কাজ ফেলে চলে আসেন জুনিয়র ডাক্তাররা । কেন এই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হল, তার জন্য মৃতদেহ আটকে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে ।
এই সংক্রান্ত খবর : NRS-এর ঘটনার প্রতিবাদে কাল রাজ্যজুড়ে OPD বয়কটের ডাক
হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে জুনিয়র ডাক্তাররা চলে আসায় পরিষেবা বিঘ্নিত হতে থাকে। তেমনই, গেট বন্ধ থাকায় বাইরে থেকে কোনও রোগীও হাসপাতালে পৌঁছতে পারেনি বলে অভিযোগ । এভাবে জুনিয়র ডাক্তাররা অবস্থান-বিক্ষোভে থাকায় হাসপাতালের পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে জানা গেছে। এদিকে, এই ঘটনার খবর সংগ্রহের ক্ষেত্রে জুনিয়র ডাক্তারদের বাধার সম্মুখীন হয় সংবাদমাধ্যম । শুধুমাত্র তাই নয়। জুনিয়র ডাক্তাররা সংবাদমাধ্যমের উপর চড়াও হন বলেও অভিযোগ উঠেছে । ভেঙে দেওয়া হয় একটি সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরা । রোগীর পরিজনরা দাবি করেন, জুনিয়র ডাক্তারদের তাঁরা আক্রমণ করেননি । যদিও জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমে কোনও বক্তব্য পেশ করা হয়নি ।
পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে থাকে গভীর রাত পর্যন্ত । শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জুনিয়র ডাক্তাররা অবস্থান বিক্ষোভে রয়েছেন । মৃতদেহ হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়নি । যদিও হাসপাতাল সূত্রের খবর, রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল । যার জেরে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।