বাঁকুড়া, 25 জুন : 1975 সালে আজকের দিনে দেশজুড়ে জারি করা হয়েছিল জরুরি অবস্থা । তৎকালীন কংগ্রেস শাসনে জরুরি অবস্থার ইতিহাস সম্পর্কে আলোচনা করেন বাঁকুড়া হিন্দু মহাসভার সদস্যরা ৷ চকবাজারের দপ্তরে দলের বর্তমান নেতৃত্ব দেশের সেই কঠিন সময়ের স্মৃতিচারণ করেন ।
স্বাধীনতার পরবর্তীকালে পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুত্ব আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল বাঁকুড়া জেলা । 1975 সালে বিধানসভায় বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন বাঁকুড়া জেলার হিন্দু মহাসভার তিন প্রতিনিধি । বাঁকুড়া সদর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন রাখহরি চট্টোপাধ্যায়। এছাড়া ছাতনা এবং ওন্দা বিধানসভাও হিন্দু মহাসভার দখলে ছিল।
জরুরি অবস্থা চলাকালীন বাঁকুড়া আদালত চত্বরে সত্যাগ্রহ করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন তৎকালীন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবকের নেতৃত্বে থাকা অনাদি কুণ্ডু, নিমাই বরাট, সমর চন্দ, তরুণ মণ্ডল এবং বিজয় বাগদির মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিরা । অন্যদিকে সরকারের বিরুদ্ধে লালবাজার থেকে মিছিল বের করায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন সুভাষ সরকার, অবনী মণ্ডল, লব দে-সহ অন্যরা । তিন মাস জেলে বন্দী থাকার পর আদালতের নির্দেশে মুক্তি পান তাঁরা । তাদের হয়ে সওয়াল করেছিলেন আইনজীবী নগেন্দ্রনাথ মণ্ডল।
জরুরি অবস্থা চলাকালীন হিন্দু মহাসভার মুখপাত্র শক্তিপদ বরাটের বাড়িতে, যা হিন্দু বাণী দপ্তর হিসেবেও ব্যবহৃত হত, সেখানে পুলিশ তল্লাশি চালায়। এই প্রসঙ্গে বাঁকুড়া জেলার বর্তমান হিন্দু মহাসভার কার্যকরী সভাপতি সোমনাথ বরাট বলেন, "আমার বয়স তখন যথেষ্ট কম ছিল, তবে এইটুকু মনে পড়ে যে পুলিশ আসার আগেই আমার বাবা শক্তিপদ বরাট দলের বাকি সদস্যদের নথিপত্র বা তাদের সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য সরিয়ে দিয়েছিলেন। এরফলে পুলিশ খুব বেশি ঝামেলা করতে পারেনি। "
অন্যদিকে বাঁকুড়ার বর্তমান সাংসদ তথা জরুরি অবস্থায় সেই সময়ের ছাত্র নেতা ডঃ সুভাষ সরকার এদিন বাঁকুড়া শহরের একটি লজে BJP কর্মী সমর্থকদের নিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে একটি সভার আয়োজন করেন। সভায় 45 বছর আগের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "তৎকালীন কংগ্রেস সরকার শুধুমাত্র নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখার চেষ্টাতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিলেন। জরুরি অবস্থায় বিরোধী রাজনৈতিক দলের বহু নেতা নেত্রীকে অনেক নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে, যা বর্তমান প্রজন্ম জানে না। যাদের বয়স 45 বছরের কম, তাদের দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এই অধ্যায়টি জানা উচিত। "