টোকিও, 23 জুন : চিনের সঙ্গে অধিকার নিয়ে বিরোধ থাকা সত্ত্বেও একাধিক দ্বীপের একত্রিতকরণ শুরু করল জাপান। ভারতের সঙ্গে চিনের সীমান্ত নিয়ে সংঘর্ষের এক সপ্তাহের মধ্যেই এই ঘটনা সামনে এল। জাপানের ওকিনাওয়ার ইশিগাকি সিটি কাউন্সিল জনবসতিহীন বিতর্কিত তনশিরো দ্বীপপুঞ্জের নাম 1 অক্টোবর থেকে বদল করে তনশিরো সেঁকাকু করার প্রস্তাব পাস করে। টোকিও থেকে 1,931 কিলোমিটার দূরে অবস্থান করে এই দ্বীপপুঞ্জ। সেঁকাকু দ্বীপ যা চিনে দিয়াওয়ুস নামে পরিচিত, 1972 সাল থেকে জাপান দ্বারা শাসিত হয়ে আসছে। তবে এর আইনি অবস্থান নিয়ে এখনও বিরোধ রয়েছে দুই দেশের মধ্যে।
চিন আজ ওই দ্বীপকে নিজেদের "অন্তর্নিহিত অঞ্চল" হিসেবে দাবি করে টোকিওকে এর নাম পরিবর্তন করা নিয়ে সতর্ক করে। বেজিংয়ের তরফে জাপানকে অনুরোধ করা হয়, "চার নীতি মেনে দিয়াওয়ুস দ্বীপ নিয়ে নতুন কোনও ঘটনা সৃষ্টি না করে, পূর্ব চিন সমুদ্র ঘিরে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তার স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বাস্তবিক পদক্ষেপ নিক। " যদিও জাপানিজ় সিটি কাউন্সিলের তরফে জানানো হয়, প্রশাসনিক কাজে সুবিধার জন্য এই বিলের প্রয়োজন রয়েছে।
একটি সংবাদ সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, এপ্রিল মাস থেকে সেঁকাকুর আশপাশে চিনের জাহাজ দেখতে পায় জাপানের উপকূল রক্ষীবাহিনী। বিগত কয়েক সপ্তাহে চিনা জাহাজের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পায়, এমনকী যেদিন এই বিল সিটি কাউন্সিল দ্বারা পাস করানো হয়, সেইদিনও চারটি জাহাজকে দ্বীপের আশপাশে ঘুরে বেড়াতে দেখা হয়। জাপানের ক্যাবিনেট সেক্রেটারি গত সপ্তাহেও বলেন, সেঁকাকু টোকিওর নিয়ন্ত্রণে এবং ঐতিহাসিকভাবে ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ীও তা জাপানের অংশ। তিনি চিনকে সতর্ক করে বলেন, " আমরা চিনকে শান্ত অথচ দৃঢ়ভাবে জবাব দেব। "
শুধু জাপানের সেঁকাকু দ্বীপ নয়, চিনের সঙ্গে বিভিন্ন প্রতিবেশী দেশের সীমান্ত নিয়ে বিরোধ রয়েছে। চিনের সঙ্গে তাইওয়ান, ব্রুনেই, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স এবং ভিয়েতনামের বিরোধ রয়েছে। এরমধ্যে পশ্চিম চিন সমুদ্রের স্পার্টলি দ্বীপ নিয়ে ভিয়েতনাম, ফিলিপিন্স, মালয়েশিয়া, ব্রুনেই ও তাইওয়ানের সঙ্গে চিনের বিরোধ রয়েছে। ভিয়েতনামের সঙ্গে প্যারাসেল দ্বীপ, স্কারবরো সোয়াল দ্বীপ নিয়ে ফিলিপিন্সের সঙ্গে এবং টনকিন উপসাগর নিয়ে ভিয়েতনামের সঙ্গে চিনের বিরোধ রয়েছে।
গত সপ্তাহে পরপর চার দিন তাইওয়ানে চিনা বায়ুসেনার বিমানকে উড়তে দেখা যায়। তাইওয়ান মিলিটারির তরফে জানানো হয়, চিন ওই দ্বীপগুলিতে পৌঁছানোর জন্য নানাভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে। চিনা বায়ুসেনাকে মৌখিক সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। তাইওয়ান বায়ুসেনার তরফে স্পষ্টভাবে কিছু জানানো না হলেও বলা হয়, তাইওয়ানিজ় যুদ্ধবিমান চিনকে যোগ্য জবাব দিয়েছে।