তেহরান, 29জুন : অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করল ইরান। আজ ইরানের এক আইনজীবী জানান, বাগদাদে ড্রোন হামলায় ইরানের জেনেরাল কাশিম সোলেমানির মৃত্যুর ঘটনায় অ্যামেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে এবং ট্রাম্পকে আটক করার জন্য ইন্টারপোলের কাছে সাহায্য চাওয়া হয়েছে ।
তেহরানের আইনজীবী আলি আলকাশিমেহের বলেন, জানুয়ারি মাসে বাগদাদে জেনেরাল কাশিম সোলেমানির মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ডোনাল্ড ট্রাম্প-সহ 30-রও বেশি জনের বিরুদ্ধে খুন ও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ আনা হয়েছে।
আলকাশিমেহের অভিযুক্ত অন্য কারও নাম না উল্লেখ করলেও ট্রাম্পের নাম উল্লেখ করে বলেন, তাঁর রাষ্ট্রপতি মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও ইরান তাঁর বিরুদ্ধে আইনি যুদ্ধ বজায় রাখবে।
ইরানের জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় ডোনাল্ড ট্রাম্প গ্রেপ্তার হওয়ার কোনও সম্ভাবনা না থাকলেও, ইরান ও অ্যামেরিকার মধ্যে টানাপোড়েন আরও স্পষ্ট হয়ে উঠল । বিশ্বশক্তির সঙ্গে তেহরানের পারমাণবিক চুক্তি থেকে অ্যামেরিকাকে ট্রাম্প সরিয়ে নেওয়ার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
আলকাশিমেহের আরও বলেন, ইরানের তরফ থেকে ইন্টারপোলকে ট্রাম্প ও অন্যদের বিরুদ্ধে "রেড নোটিশ" জারি করার অনুরোধ করা হয়েছে। এই রেড নোটিশ হল ইন্টারপোলের তরফ থেকে জারি করা সর্বোচ্চ পর্যায়ের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা, যার ফলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ আবেদনকারী দেশের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে বাধ্য হয় । এই নোটিশে কাউকে গ্রেপ্তার বা প্রত্যর্পণ করতে বাধ্য না করা গেলেও সরকারি কর্মকর্তাদের ভ্রমণে সীমিত নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে ।
অন্যদিকে ইন্টারপোলের তরফ থেকেও ইরানের আবেদনের কোনও জবাব দেওয়া হয়নি এখনও পর্যন্ত। সাধারণত কোন আবেদন পাওয়ার পর ইন্টারপোল সংশ্লিষ্ট কমিটির সঙ্গে বৈঠক করে সদস্য দেশগুলির সঙ্গে তথ্য ভাগ করা হবে কি না, সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। ইন্টারপোলের তরফ থেকে কোনও নোটিশ জনসমক্ষে প্রকাশ না করা হলেও, কিছু তথ্য এর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।ইন্টারপোলের তরফ থেকে ইরানের আবেদনটি অনুমোদনের সম্ভাবনা নেই, কারণ এর নোটিশের গাইডলাইনে কোনও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বা কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার কথা উল্লেখ রয়েছে ।
প্রসঙ্গত,অ্যামেরিকা জানুয়ারি মাসে বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে ড্রোন হামলা চালায় ৷ এই হামলায় মৃত্যু হয় কাশিম সোলেমানির। এরপরই দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং সোলেমানির হত্যার বদলা নিতে ইরানের তরফ থেকে ইরাকে অবস্থিত অ্যামেরিকার সেনাবাহিনীর উপর ব্যালিস্টিক মিজ়াইল হামলা চালানো হয়।