জলপাইগুড়ি, 19 জানুয়ারি : বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় (Bikaner Express accident in Jalpaiguri) উঠে এল গাফিলতির অভিযোগ । ময়নাগুড়ির দোমহনিতে ট্রেন দুর্ঘটনার পরই শুরু হয় তদন্ত । তার জন্য উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাটিহার ডিভিশন ও আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের 65 জন রেলকর্মীকে জেরা করে গাফিলতি কোথা থেকে হয়েছে তা জানার চেষ্টা হচ্ছে।
আলিপুরদুয়ার ডিভিশনকে হেডকোয়ার্টার করে তদন্ত চলছে। কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি লতিফ খানের নেতৃত্বে তদন্ত চলছে । এক এক করে 65 জন রেলকর্মীকে জেরা করা হচ্ছে। বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনটি কোন শেড থেকে বেরিয়েছিল ? ইঞ্জিনের শেষ ইন্সপেকসন কোথায় হয়েছিল ? কারা ইঞ্জিনটিকে চালানোর ছাড়পত্র দিয়েছিল ? চালক কখন ট্রেনের সমস্যার কথা জানতে পারেন ? পয়েন্ট ম্যান, গেটম্যানদের পর্যবেক্ষণ কী ছিল ? এসব জানার চেষ্টা হচ্ছে ।
পাশাপাশি ট্রেনের চালক ইঞ্জিনের সমস্যার কথা কেন কোনও স্টেশনে লিপিবদ্ধ করাননি ? দুর্ঘটনার আগের স্টেশন ময়নাগুড়ি দোমোহনি ও জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনের স্টেশনমাস্টারের ভূমিকা কী ছিল সেটাও খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে । দুর্ঘটনায় পর এই সব প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে তদন্ত কমিটির মনে ।
জানা গিয়েছে, ট্রেন চালকের ভূমিকায় বিস্তর গাফিলতি পাচ্ছে রেল । কারণ ইঞ্জিনে সমস্যা হচ্ছে জেনেও তিনি কেন ট্রেন চালিয়ে গেলেন সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে । কারণ ট্রেন চালকের সর্বোচ্চ ক্ষমতা আছে । ইঞ্জিনে সমস্যা থাকলে, যতক্ষণ না ইঞ্জিন ঠিক হচ্ছে তিনি ট্রেন নাও চালাতে পারেন ।
আরও পড়ুন : Forensic Investigation on Rail Accident : ময়নাগুড়ি রেল দুর্ঘটনার তদন্তে ফরেনসিক দল
হাওড়া থেকে কারশেডের ইঞ্জিনিয়ারকে ডাকা যেমন হয়েছে । তেমনই তদন্ত শুরুর পর থেকে ট্রেনের চালককে প্রতিদিন জেরা করা হচ্ছে । কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি লতিফ খানের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি তদন্ত করছেন । খুব তাড়াতাড়ি রেল দফতরের পক্ষ থেকে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের ইঞ্জিনটিকে আলিপুরদুয়ারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে ইঞ্জিনটিকে খুলে পরীক্ষা করা হবে ।
সূত্রের খবর, গত 13 জানুয়ারি এই দুর্ঘটনা ঘটার আগে কাটিহার ডিভিশনের নিউ জলপাইগুড়ি রেল স্টেশন থেকে ড্রাইভারকে পাল্টানো হয় । প্রদীপকুমার যাদব ট্রেনটি এনজেপি থেকে চালাতে শুরু করেন । কিন্তু কিছুদূর যাওয়ার পরেই ইঞ্জিনের একটা সমস্যা তাঁর নজরে আসে । জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনের স্টেশনমাস্টারকে বিষয়টি জানান তিনি । কিন্তু তাও কেন ট্রেনটি চালানো হল তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে ট্রেনের চালক । কারণ ট্রেনের চালকই তদন্তে স্বীকার করেছেন, তিস্তা সেতু পার হওয়ার পর থেকে ট্রেনের ইঞ্জিনের নিচ থেকে একটা আওয়াজ আসছিল । হঠাৎ করে ট্রেনটি ঝাকুনি দেয় । ট্রেনটি দুলে ওঠে । তখনই তিনি ইমারজেন্সি ব্রেক কষেন । এরপরই ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে । 9 জন যাত্রীর মৃত্যু হয়, 42 জন যাত্রী গুরুতর আহত হন ।
আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার দিলীপকুমার সিং জানান, তদন্তের জন্য এখনই কিছুই বলা সম্ভব নয় । তদন্তের জন্য আলিপুরদুয়ার ডিভিশনে 65 জনকে ডাকা হয়েছে । তাঁদের জেরা করা হয়েছে । এই ট্রেন দুর্ঘটনার সূত্রপাত কোথায় তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সিআরএস তদন্ত করছেন ।
আরও পড়ুন : Bikaner-Guwahati Express Accident : দোমোহনিতে রেল দুর্ঘটনায় মৃতদের আত্মার শান্তি কামনায় মোমবাতি প্রজ্জ্বলন