কলকাতা, 29 জুন: কোরোনা ভাইরাস কবে বিদায় নেবে, তা জানেন না কেউই। চার দফা লকডাউন কাটিয়ে বর্তমানে কোরোনাকে সঙ্গে নিয়েই জীবন কাটাচ্ছেন রাজ্য তথা দেশবাসী। কোরোনার জেরে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকলেও ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে পাঠ্যসূচিতে কোরোনা ভাইরাসকে অন্তর্গত করার সিদ্ধান্ত নিল স্কুলশিক্ষা দপ্তর।
এখনই সিদ্ধান্তের সিলমোহর না পড়লেও বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে আলোচনাও চালাচ্ছে বিশেষজ্ঞ কমিটি। প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকে থাকবে কোরোনার পাঠ। মূলত কোভিড-19 নিয়ে সচেতনতার পাঠ থাকবে পাঠ্যপুস্তকগুলিতে ।
এই বিষয়ে সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান অভিক মজুমদার বলেন, " বর্তমানে এই বিষয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে আলোচনা চলছে। শিক্ষামন্ত্রী সপ্তাহ দুয়েক আগে বলেছিলেন, পড়ুয়াদের কী করে সচেতন করা যায়, সেই বিষয় নিয়ে ভাবতে। তারপরেই আমরা ভাবনাচিন্তা শুরু করি। যদি কোনও ভ্যাকসিন বা ওষুধ বের হয়, তাহলে আলাদা কথা। কিন্তু, যদি না বের হয় তাহলে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পড়ুয়াদের ক্লাস শুরু করতে হবে। তাই প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্য পুস্তকে স্বাস্থ্যবিধি ও নিয়মগুলি যোগ করে যদি পড়ুয়াদের সচেতন করা যায়, সেই বিষয়ে ভাবনা চিন্তা হচ্ছে।"
তবে, পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা হবে না কোভিড-19 এর পাঠ । প্রাথমিক পর্যায়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী, যেভাবে পাঠ্যবইয়ের পিছনে কয়েকটি পাতায় কন্যাশ্রী, সবুজ-সাথীর মতো রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে পড়ুয়াদের জানানোর জন্য বিভিন্ন লেখা থাকে, একইভাবে পাঠ্যপুস্তকে অতিরিক্ত পাতা জুড়ে সেখানে কোরোনা ভাইরাস সম্পর্কে সচেতনতার পাঠ রাখার ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে অভীক মজুমদার বলেন, "এক ধরনের সাধারণ নির্দেশিকা হিসেবে বইয়ের পিছনে একটা পাতা যদি যুক্ত করে দিয়ে দেওয়া যায়, সেই বিষয়েই ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে । পরীক্ষায় কোরোনা ভাইরাস সম্পর্কে কোনও প্রশ্ন না এলেও এই বিষয়টি পড়ুয়াদের জানা দরকার। এখনও এই বিষয়ে সম্পূর্ণ আলোচনা হয়নি। "
কোন বিষয়ের পাঠ্যপুস্তকে কোরোনা ভাইরাসের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হবে, কত পাতা জুড়ে তা থাকবে, এই ধরনের বিষয়গুলি বর্তমানে আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। এই পাঠে কী কী লেখা থাকবে তার জন্য চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে সিলেবাস কমিটি। সবকিছু পরিকল্পনা মাফিক এগোলে আগামী শিক্ষাবর্ষে পাঠ্যবইয়ের নতুন সংস্করণেই এই পাঠ যুক্ত করা হবে। অভীক মজুমদার বলেন, "কোন বইতে কোরোনা ভাইরাসের বিষয়টি রাখা হবে, তা নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। চিকিৎসকদের ও ভাইরোলজিস্টদের সঙ্গেও এই বিষয়ে আলোচনা করা হবে যে, এই ভাইরাস সম্পর্কে কতটা তথ্য রাখা হবে। তবে, এই শিক্ষাবর্ষে নয়, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে বইয়ে কোরোনার পাঠ যোগ হবে, তাই আপাতত হাতে সময় রয়েছে।"