অনন্তপুর (অন্ধ্রপ্রদেশ), 18 ডিসেম্বর: শুরুতে তিনি বাড়ি থেকে বেরতেন না ৷ কিন্তু, যেদিন থেকে ইউটিউবে এসেছেন, তাঁর জীবন বদলে গিয়েছে ৷ যেখানে তিনি বর্তমান প্রজন্মের কাছে জীবনের মূল্যবোধগুলি তুলে ধরেন ৷ ইনি চিন্নু আন্টি ওরফে ভ্রমরম্বা আন্টি ৷ যাঁর আসল নাম বিজয়া লক্ষ্মী ৷ ষাটোর্ধ্ব এই বৃদ্ধা অন্ধ্রপ্রদেশের অনন্তপুরের বাসিন্দা ৷ বর্তমানে ইউটিউবে তাঁর 32 লক্ষ ফলোয়ার (YouTuber Chinnu Aunty Has More Than 32 Lakhs Followers) ৷ আর তাঁর জীবনের এই আমূল পরিবর্তন নিয়ে বিশেষ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ইটিভি ভারত-কে ৷
বিজয়া লক্ষ্মী বলেন, ‘‘বাড়ি, পোষ্য এবং গাছ লাগানো এই নিয়েই আমার জীবন ৷ যদি কোনও সন্দেহ থাকে, তাহলে আমার ইউটিউব চ্যানেলে দেখতে পারেন ৷ আর এভাবেই এটা আমার খুব কাছের হয়ে উঠেছে ৷ আমার আসল নাম বিজয়া লক্ষ্মী ৷ আমাদের বাড়ি অনন্তপুরে ৷ আমার স্বামী জিএ রামচন্দ্র কৃষ্ণদেবরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন ৷ আমরা যৌথ পরিবারে থাকতাম ৷ আমি ছিলাম বাড়ির বড় বউ ৷ সেই সময় আমার উপর সংসারের সমস্ত দায়িত্ব ছিল ৷ তাই নিজের জন্য সেরকম সময়ও পেতাম না ৷ এমনকি টিভি দেখার সময়ও থাকত না ৷ বাড়ির কাজের মধ্যেই ফোনে গান শুনতাম ৷ এটাই আমার জীবন ৷’’
চিন্নু আন্টি ইটিভি ভারত-কে জানান, তাঁর জীবনের অভিজ্ঞতা, চিন্তাভাবনা এবং মূল্যবোধ নিয়ে তিনি ইউটিউবে ভিডিয়ো পোস্ট করেন ৷ যা তাঁর ফলোয়ারদের কাছে, মায়ের পরামর্শের মতো ৷ তা সেই মানুষটি বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকুন না কেন ৷ এতে অনেক জীবন বদলেও গিয়েছে ৷ চিন্নু আন্টি জানান যে, কীভাবে ইউটিউবের মতো কিছু মাধ্যমের সাহায্যে তাঁর মতো একজন গৃহবধূ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন ৷ যা তিনি কোনওদিন স্বপ্নেও ভাবেননি ৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি ছোটবেলায় কোনও দিন টিভিও দেখিনি ৷ পরবর্তীতেও, আমি কখনই এই ধরনের কিছুতে আগ্রহী হওয়ার সময় পাইনি ৷ কারণ আমি আমার পরিবারের যত্ন নেওয়ার জন্য সর্বদা ব্যস্ত থাকতাম ৷’’
আরও পড়ুন: মাত্র 30 টাকায় রসগোল্লা-কালাকাঁদ চা, এবার নয়া সম্ভারে হাজির নিশীথের 'চা পে চর্চা'
2018 সালে বিজয়া লক্ষ্মীর স্বামী মারা যাওয়ার আগে তাঁর 4 জনের সংসার ছিল ৷ তাঁর দুই সন্তান, মেয়ে মৌনিকা এবং ছেলে রঘু বিনোদ ৷ তাঁরাও বর্তমানে তাঁদের কাজ নিয়ে ব্যস্ত ৷ বিজয়া লক্ষ্মী বলেন, ‘‘আমার সন্তানরা চাকরি পেয়ে যাওয়ার পর, আমি ইউটিউবে রান্না এবং অন্যান্য ভিডিয়ো দেখতাম ৷ এর পর 2015 সালে আমি মেয়ের সাহায্যে নিজের চ্যানেল খুলেছি ৷ তবে, সম্প্রতি তা ব্যবহার করা শুরু করেছি ৷’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, আমি সেখানে আমার অপেশাদার ভিডিয়ো পোস্ট করতে শুরু করি ৷ যদিও সেগুলি শুধুমাত্র আমার জন্য ছিল এবং কোনও ফলোয়ার ছিল না ৷ কিন্তু, সেখানে ধীরে ধীরে ফলোয়ার বাড়তে থাকে ৷ এর পরেই আমার মেয়ে আরও ভিডিয়ো পোস্ট করার জন্য উৎসাহ দেয় ৷ ওই আমার ভিডিয়োগুলি এডিট করে ও ক্যাপশন বসিয়ে দেয় ৷ আর কয়েকদিনের মধ্যেই আমার অনেক ফলোয়ার হয়ে যায় ৷ এমনকি আমার স্বামীর মৃত্যুর পর এভাবেই নিজেকে ব্যস্ত করে রেখেছি ৷’’