নয়াদিল্লি, 17 অগস্ট: বিলকিস বানো মামলায় সুপ্রিম কোর্টের তীব্র কটাক্ষের মুখে গুজরাত সরকার ৷ বৃহস্পতিবার বিলকিস বানো গণধর্ষণ এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যায় দোষীদের সাজা মুকুব বিষয়ে গুজরাত সরকারকে একাধিক প্রশ্নের মুখে ফেলেছে দেশের সর্বোচ্চ ন্যায়ালয় । 2002-এ গোধরা কাণ্ডের পরে রাধিকাপুরে বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ করে দুষ্কৃতীরা ৷ সে সময় তিনি গর্ভবতী ছিলেন ৷ এছাড়া তাঁর পরিবারের 7 সদস্যকে খুনও করে তারা ৷ যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত সেই 11 জন দোষীকে সময়ের আগেই মুক্তি দিয়েছে গুজরাত সরকার ৷ তা নিয়েই ফের মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে ৷
এদিন বিচারপতি বিভি নাগারথনা এবং উজ্জ্বল ভূঁইঞার বেঞ্চ মন্তব্য করে, গুজরাত সরকার যথেষ্ট ঝুঁকির কাজ করেছে ৷ 11 জন দোষীর শাস্তি সময়ের আগেই মুকুব করার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট উদ্বিগ্ন । বেঞ্চ গুজরাত সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এসভি রাজু’র কাছে জানতে চেয়েছে, এই ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডের পরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হয়েছিল ৷ দোষীদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার পরও কীভাবে তা মুকুব করা হল ?
বেঞ্চ মৌখিকভাবে জানিয়েছে, প্রতিটি দোষীকে সমাজে সংস্কার ও পূনর্মিলনের সুযোগ দেওয়া উচিত । বিচারপতি নাগারথনা বলেন, “কেন বেছে বেছে মুকুব নীতি প্রয়োগ করা হচ্ছে ? পুনঃসংহতকরণ এবং সংস্কারের সুযোগ প্রত্যেক দোষীকে দেওয়া উচিত হলেও কয়েকজনকে নয়...." বেঞ্চ রাজু’র কাছে জানতে চেয়েছে, রাজ্যের যে সমস্ত জেলবন্দিরা 14 বছর পূর্ণ করেছেন তাদের ক্ষেত্রে এই মুকুব নীতি কতদূর বাস্তবায়িত হচ্ছে বা এই নীতিটি সব ক্ষেত্রে বাস্তবায়িত হয়েছে কি না ?
আরও পড়ুন: সরকার কি নিজের বোধ ব্যবহার করেছে ? বিলকিসের অপরাধীদের মুক্তিতে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের
রাজু পালটা জানান, রাজ্য সরকার 2022 সালের মে মাসে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কার্যকর নির্দেশ মেনে নেয় ৷ ওই নির্দেশেই বলা হয়েছিল, রাজ্যের মুকুব নীতি বিলকিস বানো মামলাটিতে প্রযোজ্য হবে ৷ রাজ্য সরকারের উচিত, ওই নীতির ভিত্তিতে এই জাতীয় আবেদনগুলি বিবেচনা করা । শীর্ষ আদালত জেল উপদেষ্টা কমিটির গঠন সম্পর্কেও বিশদ জানতে চেয়েছিল ৷ ওই কমিটিতে বিজেপির দুই বিধায়ক ছিল বলেও একাধিক দাবি উঠেছে ।
24 অগস্ট মামলার পরবর্তী শুনানি’র দিন ধার্য করেছে সুপ্রিম কোর্ট । বিলকিস বানো মামলায় দোষী সাব্যস্তদের শাস্তি মুকুবকে চ্যালেঞ্জ করে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন বানো ৷ তিনি ছাড়াও তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র, সিপিআই(এম) নেত্রী শুভাষিনী আলি, সাংবাদিক রেবতী লাউল এবং লখনউয়ের প্রাক্তন উপাচার্য রেখা ভার্মাও পিআইএল দায়ের করেছেন ৷