উত্তরকাশী, 26 নভেম্বর: পেরিয়ে গিয়েছে 15টা দিন ৷ এখনও টানেলের আলো-আঁধারিতে আটকে 41 জন শ্রমিক ৷ যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে সিল্কিয়ারা টানেল খননের কাজ ৷ উদ্বিগ্ন অবস্থায় দিন কাটছে ওই 41জন শ্রমিকের পরিবারের সদস্যদের ৷ একবার ছেলে উদ্ধার হলে আর এই কাজ করতে দেবেন না বলেন সাফ জানালেন টানেলে আটকে পড়া শ্রমিক মঞ্জিত চৌধুরীর হতাশ বাবা ৷
এর আগে মুম্বইয়ে এক দুর্ঘটনায় এক ছেলেকে হারিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের লাখিমপুর খেরি গ্রামের ওই কৃষক ৷ এখন আর এক ছেলে আটকে টানেলের ভিতরে ৷ তিনি বলেন, "মঞ্জিত এখন আমার একমাত্র ছেলে ৷ তাঁর যদি কিছু হয়ে যায় আমি আর আমার স্ত্রী বাঁচব কী নিয়ে ৷" জানা গিয়েছে, মঞ্জিতের বয়স মাত্র 22 ৷ উত্তরাখণ্ডের চারধামে তৈরি হওয়া টানেল বিপর্যয়ে আরও 40 জন শ্রমিকের সঙ্গে আটকে পড়েছেন তিনিও ৷
ঘটনার কথা জানতে পেরেই তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছন মঞ্জিতের বাবা ৷ উদ্ধারকার্য চলছে ধীর গতিতে ৷ বারবার নানা বাধা আসছে ৷ তাও বুক শক্ত করে আশা রেখেছেন উদ্বিগ্ন বাবা ৷ কিছুদিন আগেই প্রকাশ্যে এসেছে টানেলের ভিতরে আটকে পড়া শ্রমিকদের ভিডিয়ো ৷ সেই ভিডিয়ো দেখে মঞ্জিতের বাবা বলেন, "ছেলেকে দেখে সুস্থ মনে হয়েছে ৷ উদ্ধার কাজ দেরিতে হওয়ায় আমি একটু চিন্তিত হয়ে পড়েছি ৷ আমি তাঁকে জানিয়েছে এটা একটা যুদ্ধ, ভয় পেলে চলবে না ৷ খুব শীঘ্রই আমরা সফল হব ৷"
তিনি আরও বলেন, "আমরা খুব গরিব পরিবারের ৷ ছেলের বিপদের কথা জানতে পেরে স্ত্রী-র সোনা 9 হাজার টাকায় বন্ধক দিয়ে এখানে এসেছি ৷ এখানকার প্রশাসনের এক আধিকারিক আমাকে জ্যাকেট আর জুতো দিয়েছে ৷ তাঁরা আমার লোনও শোধ করে দিয়েছে ৷" উল্লেখ্য, প্রশাসনের তরফে টানেলের কাছে একটি ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে যেখানে আটকে পড়া শ্রমিকদের পরিবারের কেউ না কেউ হত্যে দিয়ে পড়ে রয়েছেন ৷ তাঁরা যাতে আটকে পড়া প্রিয়জনদের সঙ্গে প্রতিদিন কথা বলতে পারেন, সেই ব্যবস্থাও করা হয়েছে ৷ ছয় ইঞ্চির লম্বা পাইপের মাধ্যমে যে কথাবার্তা চালানো হচ্ছে ৷
শুক্রবার অগার মেশিনটি কাজ না করায় আটকে পড়া শ্রমিকদের বের করে আনার জন্য যে পথ খনন করা হচ্ছিল সেই কাজ আটকে পড়ে ৷ হায়দরাবাদের একটি প্লাজমা কাটার ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আটকে থাকা অগার ব্লেডগুলি বের করতে ব্যবহার করা হচ্ছে ৷ রবিবার জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে অগার মেশিনের ভাঙা অংশগুলি পুনরুদ্ধার করার কাজ শুরু হওয়ার পাশাপাশি এবং ম্যানুয়াল খনন কাজ চলছে ৷ জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের (এনডিএমএ) সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) সৈয়দ আতা হাসনাইন জানান, শ্রমিকদের উদ্ধারে সব ধরনের প্রচেষ্টা চলছে। তবে জানা গিয়েছে, শ্রমিকরা এখন ভালো আছেন ৷ তাঁদের উদ্ধার করা হবে, তবে বেশি সময় লাগতে পারে ৷ এর মধ্যে বার্টিক্যাল ড্রিলিং মেশিনটি টানেলের উপরে বসানো হয়েছে ৷
(পিটিআই)
আরও পড়ুন:
1. উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারায় থমকে উদ্ধার, অগার মেশিনের যন্ত্রাংশ কাটার কাজ চলছে ! বাড়ছে সংশয়
2. 26/11'র 15 বছর... দগদগে স্মৃতি নিয়েই শহীদ স্মরণ মায়ানগরীতে
3. ভারত কখনওই সবচেয়ে জঘন্য জঙ্গি হামলা ভুলবে না, 26/11 নিয়ে মন কি বাতে সরব মোদি