নয়াদিল্লি, 19 জুলাই: 10 বছরের বালিকাকে বাড়িতে পরিচারিকার কাজে নিযুক্ত করার অভিযোগ উঠল দিল্লির এক দম্পতির বিরুদ্ধে ৷ এই অভিযোগে দিল্লির দ্বারকা এলাকায় বুধবার স্থানীয় বাসিন্দারা ওই দম্পতির উপর চড়াও হন বলে অভিযোগ ৷ তাঁদের মারধরও করা হয় ৷ পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ৷
পুলিশ জানিয়েছে, আক্রান্ত মহিলা একজন পাইলট ৷ তাঁর স্বামীও একটি বিমান সংস্থার কর্মী ৷ তাঁরা বছর দশেকের একটি মেয়েকে বাড়িতে পরিচারিকার কাজে রেখেছিলেন ৷ ফলে তাঁদের বিরুদ্ধে শিশুশ্রম বিরোধী আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগ উঠেছে ৷ অন্যদিকে তাঁরা মেয়েটির উপর শারীরিক নির্যাতন করতেন বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ ৷ আপাতত মেয়েটিকে তাঁদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৷ আর ওই দম্পতিকে আটক করা হয়েছে ৷
এদিকে ওই দম্পতিকে হেনস্তা করার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে ৷ ওই ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে যে ওই দম্পতি উত্তেজিত জনতার কাছে ক্ষমা চাইছেন ৷ তাঁদেরকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছেন ৷ কিন্তু দেখা যাচ্ছে ওই স্বামীকে আটকে রেখে উত্তেজিত জনতা ওই মহিলাকে টেনে নিয়ে গিয়ে মারধর করছেন ৷ স্ত্রীকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন ওই ব্যক্তিও ৷
আরও পড়ুন: 7 মাসের শিশুকন্যা-সহ পরিবারের 4 জনকে গলা কেটে জ্বালিয়ে দিল হত্যাকারীরা !
গোলমালের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ ৷ তার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে ৷ স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার করে পুলিশ । জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দু’জনকেই আটক করা হয়েছে । ভারতীয় দণ্ডবিধির তিনটি ধারা এবং শিশু শ্রম (নিষেধাজ্ঞা ও নিয়ন্ত্রণ) আইন ও জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্টে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ ৷
উদ্ধার করা হয়েছে ওই বালিকাকে ৷ তাঁদের মেডিক্যাল টেস্টের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ৷ চিকিৎসকরা মনে করছেন, ওই শিশুর কাউন্সেলিংয়েরও প্রয়োজন রয়েছে ৷ সেই ব্যবস্থাও করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে ৷ দ্বারকার ডিসিপি এম হর্ষ বর্ধন জানিয়েছেন, মেয়েটির শরীরে বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে ৷ কিছু পোড়া দাগও রয়েছে ৷ তা থেকে মনে করা হচ্ছে যে নিয়মিত ওই শিশুর উপর নির্যাতন করা হত ৷
কিন্তু কীভাবে ঘটনাটি সামনে এল ? স্থানীয় সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, ওই দম্পতি দ্বারকা এলাকায় আগে থাকতেন না ৷ তাঁরা মাস দুয়েক আগে ওই এলাকার একটি বাড়িতে এসে থাকতে শুরু করেন ৷ বুধবার সকালে তাঁদের বাড়ি থেকে একটি বাচ্চা মেয়ে দৌড়ে বেরিয়ে আসে ৷ তার পিছনে ওই মহিলাও ছুটে আসেন ৷ বাচ্চাটি কাঁদতে থাকায় তাঁদের সন্দেহ হয় ৷ তখন বাচ্চাটির থেকে স্থানীয়রা জানতে পারেন, পাইলট মহিলার বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে সে ৷ তাকে রোজ মারধর করা হত ৷ ইস্ত্রি দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়া হত ৷ এর পরই এই বিষয়টি নিয়ে ওই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায় ৷
আরও পড়ুন: মর্মান্তিক! চলন্ত গাড়িতে আগুন, ঝলসে মৃত একই পরিবারে চার সদস্য