দিল্লি, 1 মার্চ : ধর্ষণে অভিযুক্ত সরকারি চাকুরে আক্রান্ত নাবালিকাকে বিয়ে করতে রাজি কি না, তা জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট ! যা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্ক ৷ প্রশ্ন উঠছে, তবে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিলেই ধর্ষকের সাত খুন মাফ ? তাছাড়া, স্কুলছাত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব কি আদতে বাল্য়বিবাহকে প্রশ্রয় দেওয়া নয় ?
সূত্রের খবর, অভিযুক্ত সুভাষ চবন মহারাষ্ট্র রাজ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থার একজন কর্মী ৷ তার বিরুদ্ধে এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ৷ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পকসো আইনে রুজু হয়েছে মামলা ৷ গ্রেফতারি এড়াতে তাই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে ওই ব্য়ক্তি ৷
আরও পড়ুন: 'ধস্তাধস্তি ছাড়া একা ব্যক্তির পক্ষে জামাকাপড় খুলে ধর্ষণ করা অসম্ভব'
সোমবার প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদের এজলাসে মামলাটির শুনানি হয় ৷ সেই সময়েই অভিযুক্তের আইনজীবী মারফত তাঁর মক্কেলকে প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনি যদি বিয়ে করতে রাজি থাকেন তাহলে আমরা আপনাকে সাহায্য করতে পারি ৷ যদি আপনি রাজি না হন, তাহলে আপনাকে আপনার চাকরি হারাতে হতে পারে ৷ আপনার জেলও হতে পারে ৷ আপনি মেয়েটিকে উত্তেজিত করেছেন, তাকে ধর্ষণ করেছেন ৷’’
এই ঘটনা জানাজানি হতেই সরব হয়েছে সোশাল মিডিয়া ৷ প্রশ্ন উঠছে, তবে কি প্রধান বিচারপতি ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্য়ক্তির কাছেই জানতে চেয়েছেন, তিনি সেই মেয়েটিকে বিয়ে করতে রাজি কি না ?
যার উত্তরে অভিযুক্তের আইনজীবী বলেন, ‘‘নির্দেশগুলি গ্রহণ করা হবে ৷’’ এর প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘একটি অল্পবয়সি মেয়েকে উত্তেজিত করার আগে, তাকে ধর্ষণ করার আগে আপনার ভাবা উচিত ৷ আপনি তো জানেন যে আপনি একজন সরকারি কর্মচারী ৷ আমরা আপনাকে বিয়ের জন্য জোর করছি না ৷ শুধু জানতে চাইছি, আপনি বিয়ে করতে চান কি না ৷ না হলে আপনি আবার বলবেন, আমরা আপনাকে জোর করেছি মেয়েটিকে বিয়ে করার জন্য ৷’’
যদিও অভিযুক্তের আইনজীবী বারবার আদালতকে একটাই উত্তর দেন ৷ তিনি বলেন, মক্কেলের সঙ্গে আলোচনার পরই এ নিয়ে মন্তব্য করবেন তিনি ৷
পরে অভিযুক্ত বলে, ‘‘আমি প্রথমে মেয়েটিকে বিয়ে করতেই চেয়েছিলাম ৷ কিন্তু সে রাজি হয়নি ৷ কিন্তু এখন আর আমার পক্ষে মেয়েটিকে বিয়ে করা সম্ভব নয়, কারণ আমি আগে থেকেই বিবাহিত ৷’’
আরও পড়ুন: নাবালিকার হাত ধরা বা প্যান্টের জিপ খোলা যৌন হেনস্থা নয় : বম্বে হাইকোর্ট
গ্রেফতারি এড়াতে অভিযুক্তের সাফাই ছিল, ‘‘আমি একজন সরকারি কর্মচারী ৷ আমাকে গ্রেফতার করা হলে স্বাভাবিকভাবেই আমি আমার চাকরি থেকে সাসপেন্ড হয়ে যাব ৷’’
এরপর প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘এই কারণেই আমরা আপনাকে এই সুযোগ দিলাম ৷ আমরা চার সপ্তাহের জন্য আপনার গ্রেফতারিতে স্থগিতাদেশ দিতে পারি ৷ তারপর আপনি জামিনের জন্য আবেদন করতে পারেন ৷’’
প্রসঙ্গত, এর আগে নিম্ন আদালতের রায় অভিযুক্তের পক্ষে গেলেও তা খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট ৷ উচ্চ আদালত অভিযুক্তের গ্রেফতারি ঠেকাতে কোনও রক্ষাকবচ দিতে রাজি হয়নি ৷