নয়াদিল্লি, 30 সেপ্টেম্বর: বিচারাধীন মামলার সংখ্যা এবং বিচারপতিদের কাজের চাপ নিয়ে সরব হলেন কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রী কিরেন রিজিজু (Union Law and Justice Minister Kiren Rijiju) ৷ দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কনক্লেভে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট থেকে হাইকোর্ট এবং নিম্ন আদালত, সব জায়গায় বিচারপতি এবং বিচারকদের উপরে কাজের বিশাল চাপ রয়েছে ৷ তাই বলে আমরা বিচারপতিদের ‘যন্ত্রের মতো কাজ করাতে পারি না’ (We Cannot Make Judges Work Like Machines) ৷’’
রিজিজু বলেন, ‘‘আমি যখন 2021 সালে আইন মন্ত্রকের দায়িত্ব নিয়েছিলাম, তখন ভারতের সব আদালতে বাকি থাকা মামলার সংখ্যা ছিল 4.2 কোটি ৷ কিন্তু, মাত্র 1 বছর 3 মাসের মধ্যে সংখ্যাটা 4.8 কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে ৷ একদিকে আমরা আধুনিক আইনি প্রক্রিয়ার কথা বলছি ৷ যা পুরোপুরি নির্ভর করে, জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা এবং ন্যায্য রায় দানের উপর ৷ আর অন্যদিকে আমরাই বলছি, আমাদের দেশের সাধারণ মানুষকে ন্যায় বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে ৷ আমাদের বুঝতে হবে যে, সবকিছুর একটা ভারসাম্য রাখা প্রয়োজন ৷ বিচারপতিদের দিয়ে আমরা যন্ত্রের মতো কাজ করাতে পারি না ৷’’
তবে, বিচারপতিদের পাশে দাঁড়ানোর সঙ্গেই, রিজিজু ন্যায় বিচারের আশায় থাকা সাধারণ মানুষের কথাও বলেন ৷ তাঁর কথায় আরও একবার উঠে এসেছে ‘ভারসাম্য রাখার’ প্রসঙ্গ, ‘‘একদিকে আমাদের বিচারকরা অনেক ধৈর্য্য ধরে প্রতিটি মামলার নিষ্পত্তি করছেন ৷ অন্যদিকে, বিচার পাওয়ার জন্য সাধারণ মানুষ কতটা লড়াই করছেন ৷ আমাদের একটা ভারসাম্য বজায় রাখতেই হবে ৷’’
কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রী বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট থেকে শুরু করে নিম্ন আদালত ৷ সর্বত্র প্রত্যেক বিচারপতি প্রায় 50-60 করে মামলার ভার প্রতিদিন সামলাচ্ছেন ৷ এতগুলো মামলার ভার থাকলে কীভাবে একজন বিচারপতি দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি করবেন ?’’ তাই বিচারাধীন মামলার সংখ্যা না গুনে, স্বাধীনতার পর থেকে দেশের বিচার প্রক্রিয়া কতটা উন্নতি করেছে , সাফল্য কতটা এসেছে তার ‘মূল্যায়ন’ করার প্রয়োজনীতার উপর জোর দেন কিরেন রিজিজু ৷
আরও পড়ুন: 'সত্যি কথা বলা স্বদেশপ্রেম, দেশদ্রোহিতা নয়', রাষ্ট্রদ্রোহ আইন মুলতুবিকে স্বাগত রাহুলের
এ নিয়ে বলতে গিয়ে আগামী দিনে ভারতীয় আইন ও বিচার ব্যবস্থাকে আরও কতটা উন্নত করা যায়, সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রী কিরেন রিজিজু ৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা স্বাধীনতা 75 বছরে ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ পালন করছি ৷ এটাই সঠিক সময় আমাদের নিজেদের ‘মূল্যায়ন’ করার ৷ আর আমি বিশ্বাস করি যে, যখন আমরা স্বাধীনতার শতবর্ষ উদযাপন করব, তখন অনেক পুরনো জিনিসকে পিছনে ফেলে, নতুন পদ্ধতিকে গ্রহণ করব ৷’’