ETV Bharat / bharat

War in Gaza: ইজরায়েল-গাজা যুদ্ধে পণবন্দিদের বিনিময় প্রক্রিয়া আদতে জটিল হবে, মত বিশেষজ্ঞরা - হামাস

ইজরায়েলে প্যালেস্তাইনি বন্দিদের বিনিময়ে হামাসের হাতে পণবন্দিদের মুক্তির জন্য আলোচনা চললেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, উভয় পক্ষের মধ্যে গভীর অবিশ্বাসের জেরে আদতে গোটা প্রক্রিয়াটাই আরও জটিল হয়ে যাবে। ইটিভি ভারত-এর প্রতিনিধি অরুনিম ভূঁইয়ার প্রতিবেদন।

Etv Bharat
Etv Bharat
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 15, 2023, 7:57 PM IST

নয়াদিল্লি, 15 নভেম্বর: ইজরায়েলে প্যালেস্তাইনি বন্দিদের বিনিময়ে হামাসের হাতে পণবন্দিদের মুক্তির জন্য আলোচনা চললেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, উভয় পক্ষের মধ্যে গভীর অবিশ্বাসের জেরে আদতে গোটা প্রক্রিয়াটাই আরও জটিল হয়ে যাবে। রিপোর্ট অনুযায়ী, 100 পণবন্দিকে মুক্ত করার জন্য ইজরায়েল দাবি জানালেও হামাস 70 জনকে মুক্ত করতে সম্মত হয়েছে। অন্যদিকে, ইজরায়েলের জেল থেকে 120 জন প্যালেস্তাইনি নারী ও শিশুকে মুক্ত করতে সম্মত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এমনকী এই বিনিময় প্রক্রিয়া চালানোর জন্য ইজরায়েলও পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

গত 7 অক্টোবর ইজরায়েলে হামলার পর হামাস প্রায় 250 জনকে পনবন্দি করে। পরে, দুই আমেরিকান নাগরিক-সহ চারজনকে ছেড়ে দেওয়া হয় ৷ একজন পণবন্দিকে ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) উদ্ধার করে। আইডিএফ মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল জোনাথন কর্নিকাসের মতে, হামাস বর্তমানে কমপক্ষে 240 জনকে পণবন্দি করে রেখেছে।

7 অক্টোবরের আগে যখন ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হয়, তখন প্রায় পাঁচ হাজার 200 প্যালেস্তাইনি, যাদের মধ্যে 33 জন মহিলা এবং 170 জন অপ্রাপ্তবয়স্ক ইজরায়েলের জেলে বন্দি ছিল। 7 অক্টোবরের পর এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাত হাজার ৷ বন্দিদের অধিকার এনজিও অ্যাডামিরের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুসারে, এর মধ্যে 62 জন নারী ও 200 জন শিশু রয়েছে। ইরাক এবং জর্ডানে ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত আর দায়কার বলেন, "হামাস আংশিকভাবে ইজরায়েলি জেল থেকে কিছু প্যালেস্তাইনি বন্দিকে মুক্ত করতে সমর্থ হবে ৷ অপহরণ করা ইজরায়েলি পণবন্দিদের বিনিময়েই হামাস এটা করতে পারবে ৷" তিনি আরও বলেন, "হামাস-ইজরায়েল সম্পর্কের মধ্যে গভীর অবিশ্বাসের প্রেক্ষিতে, পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতির সঙ্গে যুক্ত বিনিময় প্রক্রিয়াটি আসলে এক জটিল অনুশীলন হবে।" মনোহর পারিকর ইনস্টিটিউট অফ ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিসের সহযোগী ফেলো এস স্যামুয়েল সি রাজীবের মতে, ইজরায়েলে প্যালেস্তাইনি বন্দিদের পরিবর্তে হামাসের হাতে পণবন্দিদের মুক্তির বিষয়ে দু'পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরু করার ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ।

রাজীব বলেন, "10 জন আমেরিকানের কোনও খোঁজ নেই ৷ তারা হামাসের হেফাজতে আছে বলেই মনে করা হচ্ছে। একটি তিন বছরের আমেরিকান শিশুও রয়েছে যার বাবা-মা উভয়কেই হত্যা করা হয়েছিল। আমেরিকানরা এর সমাধান চায়। তবে ইজরায়েল একটি সুনির্দিষ্ট চুক্তি চায়।" রাজীব আরও বলেন, "আইডিএফ গাজার আল রান্টিসি হাসপাতালে গিয়েছিল ৷ সেখানে পণবন্দিদের রাখার প্রমাণও পেয়েছিল। হামাস পণবন্দিদের মুক্তি দেবে ৷ তবে বিষয়টি সম্পূর্ণ পরোক্ষ পদ্ধতিতে হওয়ায় আলোচনা প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলেছে ৷"

রাজীব আরও বলেন, “কাতার, মিশর, সিআইএ এবং মোসাদ এই আলোচনার সঙ্গে জড়িত। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভানও সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। কিন্তু গাজার যোগাযোগ লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় এই প্রক্রিয়াটিকে কঠিন করে তুলছে ৷” এই কারণেই কোনও সময়সীমার মধ্যে বিনিময় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে তা অনুমান করা কঠিন বলে মনে করছেন তিনি। প্রসঙ্গত, 2006 সালে হামাস-সম্পর্কিত জঙ্গিরা আন্তঃসীমান্ত অভিযানের সময় ইজরায়েলি সেনা গিলাদ শালিতকে ধরে নিয়েছিল। তারা শালিতকে পাঁচ বছর ধরে বন্দিও করে রাখে ৷ এরপর ইজরায়েলের হাতে বন্দি এক হাজার প্য়ালেস্তাইনি বন্দির সঙ্গে বিনিময় হয়। রাজীব বলেন, "এই যুদ্ধে ইজরায়েলের প্রাথমিক লক্ষ্য হামাসকে নির্মূল করা।" দয়াকার বলেন, "পাঁচ সপ্তাহের লড়াইয়ের পরেও বিনিময়ের ধারণাটিই দেখায় যে হামাস পরাজিত হওয়া থেকে অনেক দূরে ৷ তারা এখনও পণবন্দিদের মুক্তির জন্য শর্ত দেওয়ার অবস্থানে রয়েছে ৷"

আরও পড়ুন:

গাজার হাসপাতালে ঢুকে পড়ল ইজরায়েলি সেনা! আতঙ্কে হাজার হাজার রোগী

যুদ্ধ-বিধ্বস্ত গাজা থেকে মেয়েকে সঙ্গে নিরাপদ স্থানে পৌঁছলেন কাশ্মীরি মহিলা

নয়াদিল্লি, 15 নভেম্বর: ইজরায়েলে প্যালেস্তাইনি বন্দিদের বিনিময়ে হামাসের হাতে পণবন্দিদের মুক্তির জন্য আলোচনা চললেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, উভয় পক্ষের মধ্যে গভীর অবিশ্বাসের জেরে আদতে গোটা প্রক্রিয়াটাই আরও জটিল হয়ে যাবে। রিপোর্ট অনুযায়ী, 100 পণবন্দিকে মুক্ত করার জন্য ইজরায়েল দাবি জানালেও হামাস 70 জনকে মুক্ত করতে সম্মত হয়েছে। অন্যদিকে, ইজরায়েলের জেল থেকে 120 জন প্যালেস্তাইনি নারী ও শিশুকে মুক্ত করতে সম্মত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এমনকী এই বিনিময় প্রক্রিয়া চালানোর জন্য ইজরায়েলও পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

গত 7 অক্টোবর ইজরায়েলে হামলার পর হামাস প্রায় 250 জনকে পনবন্দি করে। পরে, দুই আমেরিকান নাগরিক-সহ চারজনকে ছেড়ে দেওয়া হয় ৷ একজন পণবন্দিকে ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) উদ্ধার করে। আইডিএফ মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল জোনাথন কর্নিকাসের মতে, হামাস বর্তমানে কমপক্ষে 240 জনকে পণবন্দি করে রেখেছে।

7 অক্টোবরের আগে যখন ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরু হয়, তখন প্রায় পাঁচ হাজার 200 প্যালেস্তাইনি, যাদের মধ্যে 33 জন মহিলা এবং 170 জন অপ্রাপ্তবয়স্ক ইজরায়েলের জেলে বন্দি ছিল। 7 অক্টোবরের পর এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাত হাজার ৷ বন্দিদের অধিকার এনজিও অ্যাডামিরের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুসারে, এর মধ্যে 62 জন নারী ও 200 জন শিশু রয়েছে। ইরাক এবং জর্ডানে ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত আর দায়কার বলেন, "হামাস আংশিকভাবে ইজরায়েলি জেল থেকে কিছু প্যালেস্তাইনি বন্দিকে মুক্ত করতে সমর্থ হবে ৷ অপহরণ করা ইজরায়েলি পণবন্দিদের বিনিময়েই হামাস এটা করতে পারবে ৷" তিনি আরও বলেন, "হামাস-ইজরায়েল সম্পর্কের মধ্যে গভীর অবিশ্বাসের প্রেক্ষিতে, পাঁচ দিনের যুদ্ধবিরতির সঙ্গে যুক্ত বিনিময় প্রক্রিয়াটি আসলে এক জটিল অনুশীলন হবে।" মনোহর পারিকর ইনস্টিটিউট অফ ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালাইসিসের সহযোগী ফেলো এস স্যামুয়েল সি রাজীবের মতে, ইজরায়েলে প্যালেস্তাইনি বন্দিদের পরিবর্তে হামাসের হাতে পণবন্দিদের মুক্তির বিষয়ে দু'পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরু করার ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ।

রাজীব বলেন, "10 জন আমেরিকানের কোনও খোঁজ নেই ৷ তারা হামাসের হেফাজতে আছে বলেই মনে করা হচ্ছে। একটি তিন বছরের আমেরিকান শিশুও রয়েছে যার বাবা-মা উভয়কেই হত্যা করা হয়েছিল। আমেরিকানরা এর সমাধান চায়। তবে ইজরায়েল একটি সুনির্দিষ্ট চুক্তি চায়।" রাজীব আরও বলেন, "আইডিএফ গাজার আল রান্টিসি হাসপাতালে গিয়েছিল ৷ সেখানে পণবন্দিদের রাখার প্রমাণও পেয়েছিল। হামাস পণবন্দিদের মুক্তি দেবে ৷ তবে বিষয়টি সম্পূর্ণ পরোক্ষ পদ্ধতিতে হওয়ায় আলোচনা প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলেছে ৷"

রাজীব আরও বলেন, “কাতার, মিশর, সিআইএ এবং মোসাদ এই আলোচনার সঙ্গে জড়িত। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভানও সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। কিন্তু গাজার যোগাযোগ লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় এই প্রক্রিয়াটিকে কঠিন করে তুলছে ৷” এই কারণেই কোনও সময়সীমার মধ্যে বিনিময় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে তা অনুমান করা কঠিন বলে মনে করছেন তিনি। প্রসঙ্গত, 2006 সালে হামাস-সম্পর্কিত জঙ্গিরা আন্তঃসীমান্ত অভিযানের সময় ইজরায়েলি সেনা গিলাদ শালিতকে ধরে নিয়েছিল। তারা শালিতকে পাঁচ বছর ধরে বন্দিও করে রাখে ৷ এরপর ইজরায়েলের হাতে বন্দি এক হাজার প্য়ালেস্তাইনি বন্দির সঙ্গে বিনিময় হয়। রাজীব বলেন, "এই যুদ্ধে ইজরায়েলের প্রাথমিক লক্ষ্য হামাসকে নির্মূল করা।" দয়াকার বলেন, "পাঁচ সপ্তাহের লড়াইয়ের পরেও বিনিময়ের ধারণাটিই দেখায় যে হামাস পরাজিত হওয়া থেকে অনেক দূরে ৷ তারা এখনও পণবন্দিদের মুক্তির জন্য শর্ত দেওয়ার অবস্থানে রয়েছে ৷"

আরও পড়ুন:

গাজার হাসপাতালে ঢুকে পড়ল ইজরায়েলি সেনা! আতঙ্কে হাজার হাজার রোগী

যুদ্ধ-বিধ্বস্ত গাজা থেকে মেয়েকে সঙ্গে নিরাপদ স্থানে পৌঁছলেন কাশ্মীরি মহিলা

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.