আগরতলা ও কলকাতা, 25 নভেম্বর : পৌর নির্বাচন (Tripura Municipal Election 2021) শুরু হতেই অশান্তি (Violence During Tripura Municipal Election) ছড়াল ত্রিপুরায় ৷ আগরতলার 5 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী শ্যামল পালের এজেন্টকে মারধরের অভিযোগ উঠল ৷ স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, ওই ব্যক্তিকে বেধড়ক মেরে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ মকপোলের সময় হামলার অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে ৷
আরও পড়ুন : Tripura Municipal Election : বাংলার পর ত্রিপুরাতেও যুযুধান তৃণমূল-বিজেপি
আগেই ত্রিপুরা পৌর নির্বাচনের সবক’টি বুথ ‘স্পর্শকাতর’ ঘোষণা করা হয়েছিল ৷ সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court on Tripura Municipal Election 2021) তরফ থেকে নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ৷ অথচ এদিন সকালে ত্রিপুরায় পৌরভোট শুরু হতেই শুরু হয় হিংসা, রক্তারক্তি ৷ তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, ভোট দিতে এসে সাধারণ মানুষ ভয়ে কাঁপছে ৷ রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা গেল মনোজ চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তিকে ৷ তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের পোলিং এজেন্ট ৷ সংবাদমাধ্যমের সামনে তিনি বলেন, ‘‘একদল দুষ্কৃতী আমাকে মারতে মারতে নিয়ে যায় ৷ পুলিশ নীরব দর্শকের মতো দাঁড়িয়েছিল ৷ আমার মাথা ফেটে গিয়েছে ৷ দু’টো সেলাই পড়েছে ৷ চিকিৎসক সিটি স্ক্যান করতে বলেছেন ৷’’
আগরতলার 5 নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী শ্যামল পালের দাবি, তাঁর দোকান ও বাড়িতেও হামলা চালিয়েছে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ৷ এদিন আগরতলার 51 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী তপন বিশ্বাসকেও বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা নৃশংসভাবে মেরেছে বলে অভিযোগ ৷ তাঁর দাবি, ভোট দিতে যাওয়ার সময়েই তাঁর উপর হামলা করা হয় ৷ তাতেই জখম হন তিনি ৷
হিংসা প্রসঙ্গে ত্রিপুরা তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম নেতা সুবল ভৌমিক (Subal Bhowmik on violence) বলেন, ‘‘কাল (বুধবার) রাত থেকেই বিজেপি তাণ্ডব শুরু করেছে ৷ আজ সকাল থেকে যেখানেই তৃণমূলের প্রার্থী ও কর্মীদের দেখছে, সেখানেই তাঁদের উপর আক্রমণ করছে ৷ পুলিশ এবং নির্বাচন কমিশন কেউ কোনওরকম সহযোগিতা করছেন না ৷’’ সুবল ভৌমিকের বক্তব্য, এখানে এবারই প্রথম পৌরভোটে আধাসামরিক বাহিনী নামাতে হয়েছে ৷ কিন্তু তারপরও সন্ত্রাস ঠেকানো যাচ্ছে না ৷ বিলোনিয়ায় সিপিআইএম প্রার্থীর বাড়িতেও হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ ৷ এমনকী, ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারও বলেছেন, ‘‘নির্বাচন যদি অবাধ হয়, তাহলে বিজেপি হেরে যাবে ৷’’ অন্যদিকে, বিজেপি সমস্ত হামলার দায় অস্বীকার করেছে ৷
উল্লেখ্য, ত্রিপুরার ছ’টি নগর পঞ্চায়েত, সাতটি পৌরপরিষদ এবং আগরতলা পৌরনিগমের মোট 222টি আসনের জন্য 644টি বুথে ভোটগ্রহণ চলছে ৷ তার মধ্যে 370টি ভোটকেন্দ্রকে অতি স্পর্শকাতর এবং 274টি ভোটকেন্দ্রকে স্পর্শকাতর হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে ৷ অতি স্পর্শকাতর ভোটকেন্দ্রগুলিতে ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলসের জওয়ান মোতায়েন করা হয়েছে ৷ আগরতলার ভোটকেন্দ্রগুলিকেও নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে ৷ কিন্তু বুথের বাইরেই মারধর, হামলা, সন্ত্রাস চলছে বলে নানা মহলে অভিযোগ উঠেছে ৷
আরও পড়ুন : Mamata informs Modi about Tripura Violence : ত্রিপুরায় হিংসার বিষয় মোদিকে জানালেন মমতা
উল্লেখ্য, ত্রিপুরার হিংসা নিয়ে শুনানিতে ইতিমধ্যেই বড় পদক্ষেপ করেছে সুপ্রিম কোর্ট ৷ শীর্ষ আদালত পৌরসভা নির্বাচন স্থগিত করার আবেদন খারিজ করে দিয়েছে ৷ তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে পৌর নির্বাচন স্থগিত করার আবেদন জানানো হয়েছিল ৷ আবেদনের স্বপক্ষে তাদের যুক্তি ছিল, পৌর নির্বাচনের আগে ত্রিপুরায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে ৷ তাই এই অবস্থায় ভোট করানো সম্ভব নয় ৷ কিন্তু, সেই আবেদন খারিজ করে দেয় বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি বিক্রমনাথের ডিভিশন বেঞ্চ ৷