ETV Bharat / bharat

Independence Special : ব্রিটিশ পুলিশের গুলিতে 32 জন শহিদ হন কর্নাটকের জালিয়ানওয়ালাবাগে - সত্যাগ্রহ

কংগ্রেস যেখানেই কোনও কর্মসূচি নিয়েছে, সেখানেই তেরঙ্গা পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে ৷ পতাকাকে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হত ৷ ব্রিটিশদের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও মান্ড্যর শিবপুরে তেরঙ্গা পতাকা তুলতে সফল হয়েছিল ৷

ব্রিটিশ পুলিশের গুলিতে 32 জন শহিদ হন কর্নাটকের জালিয়ানওয়ালাবাগে
ব্রিটিশ পুলিশের গুলিতে 32 জন শহিদ হন কর্নাটকের জালিয়ানওয়ালাবাগে
author img

By

Published : Aug 15, 2021, 6:03 AM IST

চিক্কাবল্লপুর (কর্নাটক), 15 অগস্ট : তেরঙ্গা পতাকা ছিল ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম প্রতীক ৷ তাই ভারতের জাতীয় কংগ্রেস যেখানেই স্বাধীনতা সংগ্রামে অবতীর্ণ হত, সেখানেই তারা পতাকা উত্তোলন করত ৷ এই কাজ করতে গিয়ে তাদের নানা সময় অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে ৷ ব্রিটিশ শাসক তেরঙ্গা পতাকাকে নিষিদ্ধও করে দিয়েছিল ৷ তা সত্ত্বেও শিবপুরের মান্ড্যতে পতাকা উত্তোলন সফলভাবে করতে পেরেছিল কংগ্রেস ৷

কংগ্রেস ঠিক করেছিল যে, যদি বিদুরাস্বাস্থতে ‘পতাকা সত্যাগ্রহ’-এর আয়োজন করা যায়, তাহলে তাদের দলের প্রতি অনেকেই আকর্ষিত হবেন ৷ যদিও তৎকালীন সশস্ত্রবাহিনী এক মাস আগেই ওই পতাকা সত্যাগ্রহ বন্ধ করার পরিকল্পনা করে ফেলে ৷ 1938 সালের ওই দিনে স্বাধীনতা সংগ্রামীরা পতাকা তোলার পরিকল্পনা করেছিলেন ৷ তবে জমায়েত সরিয়ে দিতে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে ৷ কিন্তু প্রতিবাদীরা পালটা প্রতিরোধ করেন ৷ তাঁরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছুড়তে থাকেন ৷ সেই ঘটনায় 32 জন স্বাধীনতা সংগ্রামী শহিদ হন ৷

ইতিহাসবিদ তথা অধ্যাপক গঙ্গাধর সেই ঘটনার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বললেন, ‘‘প্রথমবার পতাকা সত্যাগ্রহ আয়োজন করা হয়েছিল পুরনো মাইসোরের শিবপুরের ৷ ব্রিটিশরা নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও সেই কর্মসূচি সফল হয়েছিল ৷ পুরনো মাইসোর এলাকার কংগ্রেস নেতা ও কর্মীরা সেখানে অংশগ্রহণ করেছিলেন ৷ নিঃসন্দেহে সেই ঘটনা স্বাধীনতা সংগ্রামে নতুন দিশা দিয়েছিল ৷’’

চিক্কাবল্লপুরের গারুইবিদানুরের কাছে বিদুরাস্বাস্থ এলাকার ওই গুলি চালানোর ঘটনা পঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালা বাগের ঘটনার 19 বছর পর ঘটেছিল ৷ জালিয়ানওয়ালা বাগের মতো বিদুরাস্বাস্থ এলাকাতেও জায়গা সংকীর্ণ ছিল ৷ রাস্তা বন্ধ থাকায় অনেকেই বের হতে পারেননি ৷ হলের জানলা দিয়ে পুলিশ গুলি চালিয়েছিল ৷ ফলে জালিয়ানওয়ালা বাগ ও বিদুরাস্বাস্থর ঘটনায় মিল রয়েছে ৷ পরে এই ঘটনার নামকরণ হয় কর্নাটকের জালিয়ানওয়ালা বাগ ৷

ব্রিটিশ পুলিশের গুলিতে 32 জন শহিদ হন কর্নাটকের জালিয়ানওয়ালাবাগে

বিদুরাস্বাস্থতে গুলি চালানোর ঘটনা বিবিসি-তেও শোনানো হয়েছিল ৷ মহাত্মা গান্ধি তখন মুম্বইতে ছিলেন ৷ সর্দার প্যাটেল ও জে বি কৃপালিনিকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয় ৷ ব্রিটিশ পতাকার সঙ্গে কংগ্রেসের পতাকা তোলা নিয়ে একটি মির্জা-প্যাটেল চুক্তি ততদিনে হয়ে গিয়েছে ৷ ওই পতাকা ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতীক ৷ পতাকাকে সামনে রেখে একটি কর্মসূচি গ্রহণ করতে চেয়েছিল কংগ্রেস ৷

অধ্যাপক গঙ্গাধর বলেন, ‘‘কংগ্রেসকে বার্তা পাঠানো হয়েছিল যে শুধু ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করলে চলবে না ৷ একই সঙ্গে লড়তে হবে ভারতে ব্রিটিশের অধীনে থাকা সমস্ত সংস্থার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে ৷ মাইসোরের লড়াই এরই একটা অঙ্গ ছিল ৷ এই গুলি চালানোর ঘটনার আগে যেখানে যেখানে সরাসরি ব্রিটিশ শাসন ছিল, সেখানে সেখানে কংগ্রেস কঠিন লড়াই করেছে ৷ তবে গান্ধিজী কংগ্রেসীদের সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে না যেতে পরামর্শ দিয়েছিলেন ৷ মাইসোরের মহারাজা ও মির্জা ইসমাইল সম্পর্কে গান্ধিজীর সহানুভূতি ছিল ৷ কিন্তু বিদুরাস্বাস্থর ঘটনার পর সেই মত বদলে যায় ৷’’

মহাত্মা গান্ধি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ও তাদের অধীনে থাকা সংস্থাগুলির বিরুদ্ধেও কড়া লড়াইয়ের ডাক দিয়েছিলেন ৷ এটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল ৷ গান্ধিজি সমগ্র ভারতে কংগ্রেসের হয়ে কর্মসূচি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ৷ তার কারণ ছিল বিদুরাস্বাস্থর ঘটনা ৷

চিক্কাবল্লপুর (কর্নাটক), 15 অগস্ট : তেরঙ্গা পতাকা ছিল ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম প্রতীক ৷ তাই ভারতের জাতীয় কংগ্রেস যেখানেই স্বাধীনতা সংগ্রামে অবতীর্ণ হত, সেখানেই তারা পতাকা উত্তোলন করত ৷ এই কাজ করতে গিয়ে তাদের নানা সময় অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে ৷ ব্রিটিশ শাসক তেরঙ্গা পতাকাকে নিষিদ্ধও করে দিয়েছিল ৷ তা সত্ত্বেও শিবপুরের মান্ড্যতে পতাকা উত্তোলন সফলভাবে করতে পেরেছিল কংগ্রেস ৷

কংগ্রেস ঠিক করেছিল যে, যদি বিদুরাস্বাস্থতে ‘পতাকা সত্যাগ্রহ’-এর আয়োজন করা যায়, তাহলে তাদের দলের প্রতি অনেকেই আকর্ষিত হবেন ৷ যদিও তৎকালীন সশস্ত্রবাহিনী এক মাস আগেই ওই পতাকা সত্যাগ্রহ বন্ধ করার পরিকল্পনা করে ফেলে ৷ 1938 সালের ওই দিনে স্বাধীনতা সংগ্রামীরা পতাকা তোলার পরিকল্পনা করেছিলেন ৷ তবে জমায়েত সরিয়ে দিতে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে ৷ কিন্তু প্রতিবাদীরা পালটা প্রতিরোধ করেন ৷ তাঁরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছুড়তে থাকেন ৷ সেই ঘটনায় 32 জন স্বাধীনতা সংগ্রামী শহিদ হন ৷

ইতিহাসবিদ তথা অধ্যাপক গঙ্গাধর সেই ঘটনার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বললেন, ‘‘প্রথমবার পতাকা সত্যাগ্রহ আয়োজন করা হয়েছিল পুরনো মাইসোরের শিবপুরের ৷ ব্রিটিশরা নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও সেই কর্মসূচি সফল হয়েছিল ৷ পুরনো মাইসোর এলাকার কংগ্রেস নেতা ও কর্মীরা সেখানে অংশগ্রহণ করেছিলেন ৷ নিঃসন্দেহে সেই ঘটনা স্বাধীনতা সংগ্রামে নতুন দিশা দিয়েছিল ৷’’

চিক্কাবল্লপুরের গারুইবিদানুরের কাছে বিদুরাস্বাস্থ এলাকার ওই গুলি চালানোর ঘটনা পঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালা বাগের ঘটনার 19 বছর পর ঘটেছিল ৷ জালিয়ানওয়ালা বাগের মতো বিদুরাস্বাস্থ এলাকাতেও জায়গা সংকীর্ণ ছিল ৷ রাস্তা বন্ধ থাকায় অনেকেই বের হতে পারেননি ৷ হলের জানলা দিয়ে পুলিশ গুলি চালিয়েছিল ৷ ফলে জালিয়ানওয়ালা বাগ ও বিদুরাস্বাস্থর ঘটনায় মিল রয়েছে ৷ পরে এই ঘটনার নামকরণ হয় কর্নাটকের জালিয়ানওয়ালা বাগ ৷

ব্রিটিশ পুলিশের গুলিতে 32 জন শহিদ হন কর্নাটকের জালিয়ানওয়ালাবাগে

বিদুরাস্বাস্থতে গুলি চালানোর ঘটনা বিবিসি-তেও শোনানো হয়েছিল ৷ মহাত্মা গান্ধি তখন মুম্বইতে ছিলেন ৷ সর্দার প্যাটেল ও জে বি কৃপালিনিকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয় ৷ ব্রিটিশ পতাকার সঙ্গে কংগ্রেসের পতাকা তোলা নিয়ে একটি মির্জা-প্যাটেল চুক্তি ততদিনে হয়ে গিয়েছে ৷ ওই পতাকা ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতীক ৷ পতাকাকে সামনে রেখে একটি কর্মসূচি গ্রহণ করতে চেয়েছিল কংগ্রেস ৷

অধ্যাপক গঙ্গাধর বলেন, ‘‘কংগ্রেসকে বার্তা পাঠানো হয়েছিল যে শুধু ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করলে চলবে না ৷ একই সঙ্গে লড়তে হবে ভারতে ব্রিটিশের অধীনে থাকা সমস্ত সংস্থার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে ৷ মাইসোরের লড়াই এরই একটা অঙ্গ ছিল ৷ এই গুলি চালানোর ঘটনার আগে যেখানে যেখানে সরাসরি ব্রিটিশ শাসন ছিল, সেখানে সেখানে কংগ্রেস কঠিন লড়াই করেছে ৷ তবে গান্ধিজী কংগ্রেসীদের সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে না যেতে পরামর্শ দিয়েছিলেন ৷ মাইসোরের মহারাজা ও মির্জা ইসমাইল সম্পর্কে গান্ধিজীর সহানুভূতি ছিল ৷ কিন্তু বিদুরাস্বাস্থর ঘটনার পর সেই মত বদলে যায় ৷’’

মহাত্মা গান্ধি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ও তাদের অধীনে থাকা সংস্থাগুলির বিরুদ্ধেও কড়া লড়াইয়ের ডাক দিয়েছিলেন ৷ এটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল ৷ গান্ধিজি সমগ্র ভারতে কংগ্রেসের হয়ে কর্মসূচি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ৷ তার কারণ ছিল বিদুরাস্বাস্থর ঘটনা ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.