ETV Bharat / bharat

হায়দরাবাদের ভোটাররাই কি তেলেঙ্গানার বিধানসভা নির্বাচনে বড় ফ্যাক্টর ! - বিআরএস

Telangana Assembly Elections 2023: তেলেঙ্গানা বিধানসভায় মোট আসন 119 ৷ এর মধ্যে 24টি আসন হায়দরাবাদ ও তার পাশ্বর্বর্তী এলাকায় রয়েছে ৷ ওই এলাকায় জিততে সবদলই মরিয়া ৷

Hyderabad
Hyderabad
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 21, 2023, 5:25 PM IST

হায়দরাবাদ, 21 নভেম্বর: তেলেঙ্গানা বিধানসভা ভোটে তীব্র নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে । এর মধ্যে হায়দরাবাদের রাজধানী শহরের ভোটাররা কোন দলকে বেছে নেবেন, সেই দিকেই সকলের নজর । প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলি বিভিন্ন উপায়ে রাজ্যের রাজধানীতে ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ।

তেলেঙ্গানা বিধানসভায় আসন সংখ্যা 119 ৷ এর মধ্যে হায়দরাবাদ ও তার পাশ্বর্বর্তী এলাকায় আসন হল 24টি ৷ এই আসনগুলিতে জিততে বিআরএস একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ৷ সেই প্রতিশ্রুতিগুলির মধ্যে অন্যতম বর্ধিত নাগরিক পরিকাঠামো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্বাভাবিকতা বজায় রাখা ৷

24টির মধ্যে গ্রেটার হায়দরাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন এলাকায় 15টি আসন রয়েছে ৷ সেখানে ভোটারের সংখ্যা 45.37 লক্ষ ৷ আর বাকি ন’টি আসনে 50 লক্ষের বেশি ভোটার রয়েছেন ৷ 2018 সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিআরএস এই এলাকার বেশিরভাগ আসন জিতেছিল ৷ আসাদউদ্দিন ওয়াইসির নেতৃত্বাধীন এআইএমআইএম সাতটি আসন জিতেছিল । শহরের দক্ষিণ অংশে অবস্থিত নির্বাচনী এলাকায় এআইএমআইএম-এর শক্ত ঘাঁটি রয়েছে ৷

2018 সালের নির্বাচনে বিজেপি জিতেছে একমাত্র গোশামহল আসন । টি রাজা সিং সেখানকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ৷ মোট 3.26 কোটি ভোটারের মধ্যে প্রায় 30 শতাংশ এখানে থাকেন ৷ ফলে সমস্ত রাজনৈতিক দল হোর্ডিং লাগানোর চেয়ে সমাবেশ, রোড-শো, পদযাত্রা এবং স্ট্রিট কর্নারে বেশি মনোযোগ দিয়েছে ৷

তেলেঙ্গানার শাসক দলের দাবি যে তারা হায়দরাবাদকে ‘গ্লোবাল সিটি’-তে পরিণত করেছে ৷ এই এলাকায় একটি সাম্প্রতিক সভায় তেলেঙ্গানার মন্ত্রী কেটি রামা রাও দাবি করেন, ওই রাজ্যের আইটি শিল্পে মোট কর্মচারীর সংখ্যা 2014 সালে তিন লক্ষেরও বেশি ছিল ৷ তা এখন প্রায় নয় লক্ষ বেড়েছে ৷ তিনি আরও জানান যে হায়দরাবাদ আইটি-র চাকরি তৈরিতে বেঙ্গালুরুকে ছাড়িয়ে গিয়েছে ৷

বিআরএস-এর মুখপাত্র সর্বান দাসোজু জানান, শহরের ‘সুরক্ষিত’ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ যুবকদের জন্য প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে ৷ রাস্তা, উড়ালপুল ও নিরাপদ পানীয় জল সরবরাহের ক্ষেত্রে ‘চমৎকার’ নাগরিক পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে ৷ বিআরএস সরকার ও অন্যরা সবাই হায়দরাবাদকে একটি ‘গ্লোবাল সিটি’ বানিয়েছে ।

শহরের কোথাও কোথাও জলা জমে যাওয়া এবং বর্ষায় নদর্মা উপচে রাস্তা ভেসে যাওয়ার ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে উল্লেখ করেন । তাঁর কথায়, "গত 10 বছরে হায়দরাবাদে একটি দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে । নিরাপত্তা এবং নাগরিক-বান্ধব প্রশাসন রাজ্য সরকারের অগ্রাধিকার । জলা জমে যাওয়ার ঘটনা কখনও কখনও মূলত হঠাৎ বৃষ্টির কারণে হয় ৷"

বিরোধীরা অবশ্য শাসক দলের সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে ৷ বিজেপির মুখপাত্র এনভি সুভাষ অভিযোগ করেছেন যে বিআরএস সরকার নাগরিক পরিকাঠামোর জন্য কেন্দ্রের অনুমোদিত তহবিল থেকে টাকা সরিয়ে নিয়েছে এবং শহরের উন্নয়নকে অবহেলা করেছে । সিনিয়র সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক এস নাগেশ কুমার জানিয়েছেন যে রাজ্য সরকারের দাবি যে হায়দরাবাদ একটি ‘গ্লোবাল সিটি’-র দাবিতে চিড়ে ভিজবে না ৷

তাঁর আরও দাবি, বর্ষাকালে বন্যা হয়, যা অবশ্যই একটি সমস্যা ৷ আর যদিও সরকার বেশ কয়েকটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করেছে ৷ তবুও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জল জমার বিষয়টি রয়েছে গিয়েছে ৷ সরকারের পুরো ফোকাস শুধুমাত্র হায়দরাবাদের পশ্চিম অংশে ছিল । শহরের কেন্দ্র অবহেলিত ছিল । শহরের কেন্দ্রীয় অংশ ক্রমশ ঘিঞ্জি হয়ে যাচ্ছে ৷ তিনি আরও জানান, পরিকল্পনা ছাড়াই পরিকাঠামো তৈরিতেই নিকাশি ব্যবস্থায় সমস্যা থেকে গিয়েছে ৷

এ দিকে বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি এবং বিআরএসের কার্যকরী সভাপতি কেটি রামা রাও-সহ বেশ কয়েকজন নেতা ইতিমধ্যেই হায়দরাবাদ শহরের ভোটারদের আকৃষ্ট করার জন্য রোড-শো করেছেন ।

গত 19 নভেম্বর নাড্ডা মালকাজগিরি এন রামচন্দর রাও থেকে বিজেপির প্রার্থীর সমর্থনে হায়দরাবাদে একটি রোড-শো করেন । মন্ত্রী কেটি রামা রাও একটি স্থানীয় খাবারের দোকানে যান ৷ সেখানে তিনি হায়দরাবাদি বিরিয়ানি ছাড়াও আরও অনেক কিছু খান ৷ সেখানে উপস্থিত সাধারণ মানুষের সঙ্গে সেই সময় তিনি কথাও বলেন ৷ অনেকে তাঁর সঙ্গে সেলফি তোলেন ৷

পিছিয়ে নেই আসাদুদ্দিন ওয়াইসি ৷ তিনি দলের প্রার্থীদের সমর্থনে হায়দরাবাদ শহরের দক্ষিণ অংশে প্রচার চালিয়েছেন ৷

পিটিআই ইনপুট-সহ

আরও পড়ুন:

তেলেঙ্গানার ভোট প্রচারে ছোট ছোট জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছনোর উপর জোর দিচ্ছে কংগ্রেস

'তেলেঙ্গানায় বিজেপি জিতলে মুখ্যমন্ত্রী হবেন অনগ্রসর শ্রেণি থেকে,' বললেন শাহ

হায়দরাবাদ, 21 নভেম্বর: তেলেঙ্গানা বিধানসভা ভোটে তীব্র নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে । এর মধ্যে হায়দরাবাদের রাজধানী শহরের ভোটাররা কোন দলকে বেছে নেবেন, সেই দিকেই সকলের নজর । প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলি বিভিন্ন উপায়ে রাজ্যের রাজধানীতে ভোটারদের কাছে পৌঁছানোর জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ।

তেলেঙ্গানা বিধানসভায় আসন সংখ্যা 119 ৷ এর মধ্যে হায়দরাবাদ ও তার পাশ্বর্বর্তী এলাকায় আসন হল 24টি ৷ এই আসনগুলিতে জিততে বিআরএস একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ৷ সেই প্রতিশ্রুতিগুলির মধ্যে অন্যতম বর্ধিত নাগরিক পরিকাঠামো, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির স্বাভাবিকতা বজায় রাখা ৷

24টির মধ্যে গ্রেটার হায়দরাবাদ মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন এলাকায় 15টি আসন রয়েছে ৷ সেখানে ভোটারের সংখ্যা 45.37 লক্ষ ৷ আর বাকি ন’টি আসনে 50 লক্ষের বেশি ভোটার রয়েছেন ৷ 2018 সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিআরএস এই এলাকার বেশিরভাগ আসন জিতেছিল ৷ আসাদউদ্দিন ওয়াইসির নেতৃত্বাধীন এআইএমআইএম সাতটি আসন জিতেছিল । শহরের দক্ষিণ অংশে অবস্থিত নির্বাচনী এলাকায় এআইএমআইএম-এর শক্ত ঘাঁটি রয়েছে ৷

2018 সালের নির্বাচনে বিজেপি জিতেছে একমাত্র গোশামহল আসন । টি রাজা সিং সেখানকার নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ৷ মোট 3.26 কোটি ভোটারের মধ্যে প্রায় 30 শতাংশ এখানে থাকেন ৷ ফলে সমস্ত রাজনৈতিক দল হোর্ডিং লাগানোর চেয়ে সমাবেশ, রোড-শো, পদযাত্রা এবং স্ট্রিট কর্নারে বেশি মনোযোগ দিয়েছে ৷

তেলেঙ্গানার শাসক দলের দাবি যে তারা হায়দরাবাদকে ‘গ্লোবাল সিটি’-তে পরিণত করেছে ৷ এই এলাকায় একটি সাম্প্রতিক সভায় তেলেঙ্গানার মন্ত্রী কেটি রামা রাও দাবি করেন, ওই রাজ্যের আইটি শিল্পে মোট কর্মচারীর সংখ্যা 2014 সালে তিন লক্ষেরও বেশি ছিল ৷ তা এখন প্রায় নয় লক্ষ বেড়েছে ৷ তিনি আরও জানান যে হায়দরাবাদ আইটি-র চাকরি তৈরিতে বেঙ্গালুরুকে ছাড়িয়ে গিয়েছে ৷

বিআরএস-এর মুখপাত্র সর্বান দাসোজু জানান, শহরের ‘সুরক্ষিত’ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, বিনিয়োগ-বান্ধব পরিবেশ যুবকদের জন্য প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে ৷ রাস্তা, উড়ালপুল ও নিরাপদ পানীয় জল সরবরাহের ক্ষেত্রে ‘চমৎকার’ নাগরিক পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে ৷ বিআরএস সরকার ও অন্যরা সবাই হায়দরাবাদকে একটি ‘গ্লোবাল সিটি’ বানিয়েছে ।

শহরের কোথাও কোথাও জলা জমে যাওয়া এবং বর্ষায় নদর্মা উপচে রাস্তা ভেসে যাওয়ার ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে উল্লেখ করেন । তাঁর কথায়, "গত 10 বছরে হায়দরাবাদে একটি দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে । নিরাপত্তা এবং নাগরিক-বান্ধব প্রশাসন রাজ্য সরকারের অগ্রাধিকার । জলা জমে যাওয়ার ঘটনা কখনও কখনও মূলত হঠাৎ বৃষ্টির কারণে হয় ৷"

বিরোধীরা অবশ্য শাসক দলের সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে ৷ বিজেপির মুখপাত্র এনভি সুভাষ অভিযোগ করেছেন যে বিআরএস সরকার নাগরিক পরিকাঠামোর জন্য কেন্দ্রের অনুমোদিত তহবিল থেকে টাকা সরিয়ে নিয়েছে এবং শহরের উন্নয়নকে অবহেলা করেছে । সিনিয়র সাংবাদিক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক এস নাগেশ কুমার জানিয়েছেন যে রাজ্য সরকারের দাবি যে হায়দরাবাদ একটি ‘গ্লোবাল সিটি’-র দাবিতে চিড়ে ভিজবে না ৷

তাঁর আরও দাবি, বর্ষাকালে বন্যা হয়, যা অবশ্যই একটি সমস্যা ৷ আর যদিও সরকার বেশ কয়েকটি ফ্লাইওভার নির্মাণ করেছে ৷ তবুও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জল জমার বিষয়টি রয়েছে গিয়েছে ৷ সরকারের পুরো ফোকাস শুধুমাত্র হায়দরাবাদের পশ্চিম অংশে ছিল । শহরের কেন্দ্র অবহেলিত ছিল । শহরের কেন্দ্রীয় অংশ ক্রমশ ঘিঞ্জি হয়ে যাচ্ছে ৷ তিনি আরও জানান, পরিকল্পনা ছাড়াই পরিকাঠামো তৈরিতেই নিকাশি ব্যবস্থায় সমস্যা থেকে গিয়েছে ৷

এ দিকে বিজেপির জাতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি এবং বিআরএসের কার্যকরী সভাপতি কেটি রামা রাও-সহ বেশ কয়েকজন নেতা ইতিমধ্যেই হায়দরাবাদ শহরের ভোটারদের আকৃষ্ট করার জন্য রোড-শো করেছেন ।

গত 19 নভেম্বর নাড্ডা মালকাজগিরি এন রামচন্দর রাও থেকে বিজেপির প্রার্থীর সমর্থনে হায়দরাবাদে একটি রোড-শো করেন । মন্ত্রী কেটি রামা রাও একটি স্থানীয় খাবারের দোকানে যান ৷ সেখানে তিনি হায়দরাবাদি বিরিয়ানি ছাড়াও আরও অনেক কিছু খান ৷ সেখানে উপস্থিত সাধারণ মানুষের সঙ্গে সেই সময় তিনি কথাও বলেন ৷ অনেকে তাঁর সঙ্গে সেলফি তোলেন ৷

পিছিয়ে নেই আসাদুদ্দিন ওয়াইসি ৷ তিনি দলের প্রার্থীদের সমর্থনে হায়দরাবাদ শহরের দক্ষিণ অংশে প্রচার চালিয়েছেন ৷

পিটিআই ইনপুট-সহ

আরও পড়ুন:

তেলেঙ্গানার ভোট প্রচারে ছোট ছোট জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছনোর উপর জোর দিচ্ছে কংগ্রেস

'তেলেঙ্গানায় বিজেপি জিতলে মুখ্যমন্ত্রী হবেন অনগ্রসর শ্রেণি থেকে,' বললেন শাহ

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.