চেন্নাই (তামিলনাড়ু), 14 জানুয়ারি: রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অপমানজনক মন্তব্য করার অভিযোগ নিয়ে দিন কয়েক ধরেই তামিলনাড়ু সরগরম ৷ এই ঘটনায় ওই রাজ্যের শাসক দল ডিএমকে-র নেতা শিবাজি কৃষ্ণমূর্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হল ৷ এই নেতাই তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল আরএন রবির (Tamil Nadu Governor RN Ravi) বিরুদ্ধে অপমানজনক মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ ৷
অভিযোগ, শিবাজি বলেছেন যে রাজ্যপালকে কাশ্মীরে পাঠিয়ে দেওয়া হোক ৷ তাহলে তাঁকে জঙ্গিরাই মেরে ফেলবে ৷ এই নিয়েই অভিযোগ দায়ের হয়েছে ৷ অভিযোগ দায়ের করেছেন তামিলনাড়ুর রাজ্যপালের উপ সচিব ৷
অভিযোগে লেখা হয়েছে যে তামিলনাড়ুর রাজ্যপালের বিরুদ্ধে গালিগালাজ, মানহানিকর ও অবমাননাকর ভাষা ব্যবহার এবং ভয় দেখানোর একটি ভিডিয়ো সামনে এসেছে ৷ সেখানে শিবাজি কৃষ্ণমূর্তিকে এই ধরনের মন্তব্য করতে দেখা যাচ্ছে ৷ ভিডিয়োটি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করা হয়েছে ৷ দ্রুত এই ভিডিয়ো ভাইরালও হয়েছে ৷
কৃষ্ণমূর্তি কী বলেছিলেন, তাও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে ৷ কৃষ্ণমূর্তির বক্তব্য হিসেবে লেখা হয়েছে, "যদি তিনি (তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল আরএন রবি) বিধানসভায় তাঁর বক্তৃতায় আম্বেদকরের নাম উচ্চারণ করতে অস্বীকার করেন, তবে আমার কি তাকে আক্রমণ করার অধিকার নেই ? আপনি যদি সরকারের দেওয়া বক্তৃতা না পড়েন, তাহলে কাশ্মীরে যান । আমরা সেখানে সন্ত্রাসীদের পাঠাব, যাতে তারা আপনাকে গুলি করে মেরে ফেলবে ।"
বিজেপি (BJP) এই নিয়ে ডিএমকে-কে নিশানা করেছে ৷ বিজেপির রাজ্য সহ-সভাপতি নারায়ণন তিরুপতি বলেন, "এটি ডিএমকে-এর (DMK) সংস্কৃতি ৷ গত 60 বছর ধরে ডিএমকে নোংরা ভাষা ব্যবহার করছে । তারা এই ধরনের অবমাননাকর মন্তব্যের জন্য পরিচিত ৷’’ তিনি আরও বলেন, "শিবাজি কৃষ্ণমূর্তি ও আরএস ভারতী রাজ্যপাল আরএন রবিকে গালিগালাজ করেছেন এবং বলেছেন যে তাঁরা রাজ্যপালকে মেরে ফেলবেন । আমরা আশ্চর্য হচ্ছি যে জঙ্গিদের সঙ্গে ডিএমকে-র কোনও সম্পর্ক আছে কি না ৷"
এদিকে, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এবং ডিএমকে সভাপতি এম কে স্ট্যালিন (TN CM MK Stalin) রাজ্যপালের নাম বা তাঁর অফিসের নাম উল্লেখ না করে দলের প্রতি বার্তা দিয়েছেন যে কাউকে যেন বাড়তি প্রচার না দেওয়া হয় ৷
তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল বিধানসভায় তাঁর ভাষণে কিছু অংশ এড়িয়ে যান এবং পরে যখন স্ট্যালিন এই নিয়ে নিন্দা প্রস্তাব পেশ করেন তখন তিনি বেরিয়ে যান ৷ এই নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই হইচই চলছে দক্ষিণ ভারতের এই রাজ্য়ে ৷ তবে পরে স্ট্যালিন বিধানসভায় জানান যে তিনি হাউজের মর্যাদা রক্ষার জন্য সংযম বজায় রাখবেন ৷
রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিরোধ না করার জন্য রাজ্যপালকে পরামর্শ দিতে রাষ্ট্রপতিকে চিঠিও লিখেছেন স্ট্যালিন । কিন্তু দলের কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা তাঁর কাছে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে ৷ তাই শান্ত থাকার আবেদন করেছেন তিনি৷ স্ট্যালিন ডিএমকে-র যুব সংগঠনের এক প্রশিক্ষণ শিবির থেকে রাজ্যপালকে বাড়তি প্রচার না দেওয়ার কথা বলেছেন ৷
আরও পড়ুন: সরকারের লেখা ভাষণ পাঠে আপত্তি কেন? স্ট্যালিনের প্রতিবাদের পরেই বিধানসভা ছাড়লেন তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল