নয়াদিল্লি, 17 ডিসেম্বর: সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) খারিজ হয়ে গেল বিলকিস বানোর (Bilkis Bano) রিভিউ পিটিশন (Review Petition) ৷ উল্লেখ্য, সম্প্রতি বিলকিস বানোর ধর্ষকদের কারাবাস থেকে মুক্তি দেওয়া হয় ৷ তারই বিরোধিতায় শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিলকিস ৷ শনিবার সেই আবেদন খারিজ হয়ে গেল ৷
2002 সালের গুজরাত দাঙ্গায় আক্রান্তদের মধ্যে অন্যতম বিলকিস বানো ও তাঁর পরিবার ৷ দাঙ্গাবাজরা বিলকিসকে গণধর্ষণ করে এবং তাঁর এতরত্তি কন্যাসন্তান-সহ পরিবারের একাধিক সদস্যকে খুন করে ৷ আদালতেও তাদের এই অপকর্ম প্রমাণিত হয় এবং আদালত তাদের সকলকেই যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা শোনায় ৷ কিন্তু, সদ্য সমাপ্ত গুজরাত বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে দোষীদের মুক্তি দেয় গুজরাত সরকার ৷
আরও পড়ুন: 11 অপরাধীর মুক্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ বিলকিস বানো
রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনায় সরব হয় নানা মহল ৷ প্রশ্ন ওঠে, দোষী সাব্যস্ত 11 জনকে মুক্তি দেওয়ার অধিকার আদৌ কি গুজরাত সরকারের আছে ? এ নিয়ে আদালতে মামলা রুজু করা হয় ৷ সম্প্রতি সরকারের পক্ষেই সেই মামলার রায় দেয় শীর্ষ আদালত ৷ গত মে মাসে বিচারপতি অজয় রস্তোগি এবং বিচারপতি বিক্রম নাথের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, দোষী 11 জন সাজা মকুবের যে আবেদন করেছিল, তার ভিত্তিতে পদক্ষেপ করার অধিকার গুজরাত সরকারের রয়েছে ৷ সুতরাং ওই 11 জনের মুক্তির ক্ষেত্রে আইনত কোনও বাধা নেই ৷
দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের সেই রায় চ্যালেঞ্জ করেই পালটা মামলা রুজু করেন বিলকিস ৷ তাঁর আইনজীবী শোভা গুপ্তার সওয়াল ছিল, গত মে মাসের ওই রায় আদতে ফৌজদারি আইনের 432(7)(বি) ধারার পরিপন্থী ৷ কারণ, ওই আইনে বলা হয়েছে, যে রাজ্যে মূল মামলার শুনানির রায়দান করা হবে, একমাত্র সেই রাজ্যের সরকারই পরবর্তীতে দোষীদের শাস্তি মকুব জাতীয় সিদ্ধান্ত নিতে পারে ৷
প্রসঙ্গত, বিলকিস বানো গণধর্ষণ এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের খুনের মামলাটি লড়া হয়েছিল মহারাষ্ট্রে ৷ সেই রাজ্য়েরই আদালত অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করে তাদের যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা শুনিয়েছিল ৷ পরবর্তীকালে দোষীরা যখন মুক্তির আবেদন জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়, তখন গুজরাত হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল, একমাত্র মহারাষ্ট্র সরকারই এই বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করতে পারে ৷ কারণ, ফৌজদারি আইনের 432(7)(বি) ধারায় তেমনটাই নির্দেশ দেওয়া রয়েছে ৷ অন্যদিকে, গত মে মাসে সুপ্রিম কোর্ট বলে, যেহেতু ঘটনাটি ঘটেছিল গুজরাতে, তাই গুজরাত সরকারও চাইলে দোষীদের মুক্তি দিতে পারে ৷ সেই রায়ের বিরোধিতা করেই উচ্চ বেঞ্চে আবেদন করেছিলেন বিলকিস ৷ শনিবার সেই আবেদন খারিজ হয়ে গেল ৷