কলকাতা, 9 অগস্ট: ভারতীয় বিজ্ঞানশাস্ত্রে অবদান রেখেছেন, এমন ব্যক্তিত্বদের নামের তালিকা তৈরি করতে গেলে তা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতম হবে ৷ কিন্তু, ভারত এবং তাঁর বিজ্ঞানচর্চাকে বিশ্বের দরবারে নিয়ে গিয়েছেন এমন বিজ্ঞানীর সংখ্যাও কম নয় ৷ তাঁদের মধ্যেই অন্যতম, ভারতের 'মিসাইল ম্যান' আবুল পকির জইনুলাবদিন আব্দুল কালাম, যাঁকে ভারত এবং বিশ্ব চেনে এপিজে আব্দুল কালাম নামে ৷ যিনি ভারতের একাদশ রাষ্ট্রপতি ছিলেন ৷ তেমনি রয়েছেন, বাঙালি বিজ্ঞানী আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু ৷ ব্রিটিশ ভারতীয় এই পদার্থবিদ, জীববিজ্ঞানী ‘গাছের প্রাণ আছে’ এবং ‘ক্রেসকোগ্রাফ’ এর আবিষ্কারের জন্য পরিচিত তিনি ৷ আরেক পদার্থবিদ সিভি রমন ৷ দক্ষিণ ভারতের এই বিজ্ঞানীর আলোর বিচ্ছুরণের উপর গবেষণা জগৎ বিশ্বের কাছে ভারতকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে (Stars of Science APJ Abdul Kalam-Jagadish Chandra Bose-CV Raman) ৷
ভারতের স্বাধীনতার 75 বছরে (75 Years of Independence) এই সকল কালজয়ী বিজ্ঞানীদের উল্লেখ না-করলে, স্বাধীনতা পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সময়ে বিশ্ব মঞ্চে ভারতে ভূমিকার সঠিক মূল্যায়ন সম্ভব নয় ৷
এপিজে আব্দুল কালাম
15 অক্টোবর 1931 সালে পরাধীন ভারতের রামেশ্বরমে জন্ম আবুল পকির জয়নুলাবদিন আব্দুল কালামের ৷ যিনি 2002-2007 সাল পর্যন্ত প্রজাতান্ত্রিক ভারতের একাদশ রাষ্ট্রপতি ছিলেন ৷ কিন্তু, তাঁর আরও একটি পরিচয় রয়েছে ৷ তিনি ভারতের ‘মিসাইল ম্যান’ ৷ ভারতকে পরমাণু শক্তিধর দেশ হিসাবে বিশ্বের কাছে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন তিনি ৷ 1998 সালের পোখরান-2 পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষায় প্রধান সাংগঠনিক ছিলেন ৷ সেই সঙ্গে প্রযুক্তিগত সহায়তায় মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন ৷
তবে, কেবল ভারতকে পরমাণু শক্তিধর দেশ হিসাবে গড়ে তোলা বা রাষ্ট্রপতি পদে বসা, তাঁর কৃতিত্বকে ব্যাখ্যা করতে পারে না ৷ ভারতীয় প্রতিরক্ষা এবং মহাকাশ বিজ্ঞানে তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য ৷ 1960 সালে ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা অর্থাৎ, ডিআরডিও-তে গবেষক হিসাবে যোগ দেন ৷ সেখানে বিক্রম সারাভাইয়ের অধীনে হোভারক্রাফটের নকশা তৈরি করে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন ৷ এর পর ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থায় কাজ করেন তিনি ৷
জগদীশ চন্দ্র বসু
ব্রিটিশ ভারতীয় তথা বাঙালি বিজ্ঞানীদের মধ্যে সবার আগে নাম আসবে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসুর ৷ জীববিজ্ঞানে তাঁর ভূমিকা অনস্বীকার্য ৷ ভারতের স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবের তাঁর নাম না-উল্লেখ করলেই নয় ৷ ‘উদ্ভিদের প্রাণ আছে’, বিশ্ববাসীর কাছে এই বার্তা প্রথম পৌঁছে দিয়েছিলেন তিনি ৷ জগদীশ চন্দ্র বসু মাইক্রোওয়েভ প্রযুক্তির ওপর সফল গবেষণা করেন ৷ যার উপর ভিত্তি করে পরবর্তী সময়ে রেডিও আবিষ্কার হয় ৷ ক্রেসকোগ্রাফের জনকও তিনি ৷
আরও পড়ুন: পিস্তলে মাত্র একটা গুলি, আর তাতেই নিজেকে শেষ করেছিলেন বিপ্লবী চন্দ্রশেখর আজাদ
সিভি রমন
পদার্থ বিজ্ঞানে ভারতের সফল গবেষকদের মধ্যে একজন চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রমন ৷ 1888 সালে তিরুচেরাপল্লিতে জন্ম তাঁর ৷ 1928 সালে ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অব সায়েন্স বা আইএসিএস-এ হওয়া আলোর বিচ্ছুরণের গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সিভি রমন ৷ তাঁর এই গবেষণার উপর ভিত্তি করেই ‘রমন স্পেকট্রোস্কোপি’ বা ‘রমন ক্রিয়া’র আবিষ্কার হয় ৷ যে আবিষ্কার পদার্থ বিজ্ঞানে প্রেসিডেন্সির এই ছাত্রকে 1930 সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার এনে দিয়েছিল ৷ 1954 সালে ভারত সরকার তাঁকে ‘ভারতরত্ন’ সম্মান দেয় ৷