নয়াদিল্লি, 17 মে: কর্ণাটকে বড় জয় পেয়েছে কংগ্রেস ৷ তবে, সেই স্বস্তি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি হাত শিবিরে ৷ মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন তা বেছে নিতে কার্যত কালঘাম ছুটে গিয়েছে কংগ্রেস নেতাদের ৷ কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা রাজ্যে গিয়ে বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলেও চৃড়ান্ত সিদ্ধান্ত উপনিত হতে পারেননি ৷ সেসময় বল গিয়েছিল কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের কোটে ৷ তিনি নিজের রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা বিপাকে পড়েছেন বলা যায় ৷ দুই প্রধান দাবিদার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া এবং কংগ্রেসের প্রদেশ সভাপতি ডিকে শিবকুমারের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছেন খাড়গে ৷ তাতেও কাজের কাজ হয়নি ৷ এরপরই আসরে নামতে হয়েছে প্রাক্তন সভাপতি সোনিয়া গান্ধিকে ৷
ব্যক্তিগত কাজে হিমাচল প্রদেশে গিয়েছেন সোনিয়া । মেয়ে প্রিয়াঙ্কাও সেখানে ৷ হিমাচল থেকেই কর্ণাটকের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর বেছে নেওয়ার গুরু দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন সোনিয়া ৷ তবে এবার তাঁকে দিল্লি আসেতই হচ্ছে ৷ সূত্রের খবর, চার দিন ধরে চলতে থাকা আলাপ-আলোচনায় ইতি টানতেই তিনি দিল্লি ফিরছেন অমেঠির সাংসদ ৷ কংগ্রেস সভাপতির সঙ্গে কথা বলেই চৃড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন সোনিয়া ৷ এরপর বেঙ্গালুরু উড়ে যেতে পারেন সভাপতি ৷ সেখানে গিয়েই কর্ণাটকের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করবেন ৷
রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, কংগ্রেস নেতৃত্বের জন্য কাজটি মোটেই সহজ নয় ৷ সিদ্দারামাইয়া এবং শিবকুমার দু'জনেই কর্ণাটকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ৷ একজন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আর অন্যজন দলের সংগঠন চেনেন হাতের তালুর মতো। কোনও একপক্ষকে অখুশি করলে তার ফল আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ভুগতে হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কংগ্রেস ৷ এই ব্যাপারে দলের অতীত অভিজ্ঞতা যথেষ্ট বেদনাদায়ক ৷ বছর পাঁচেক আগে মধ্যপ্রদেশে বিজেপিকে হারিয়ে সরকার গড়ে কংগ্রেস ৷ তরুণ নেতা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে কার্যত উপেক্ষা করে প্রবীণ নেতা তথা গান্ধি পরিবারের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ কমলনাথকে মুখ্যমন্ত্রী করা হয় ৷ এরপর লোকসভায় সেরাজ্যে মুখ থুবড়ে পড়ে কংগ্রেস ৷ আরও পরে বেশ কয়েকজন বিধায়ককে নিয়ে বিজেপি'তে যোগদান করেন জ্যোতিরাদিত্য ৷ কমলনাথের সরকার পড়ে যায় ৷ পরে কেন্দ্রে মন্ত্রী হন জ্যোতিরাদিত্য ৷
আরও পড়ুন: বুধবার বেঙ্গালুরুতে খাড়গে ঘোষণা করতে পারেন কর্ণাটকের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর নাম
এবারও বছর ঘুরলে লোকসভা নির্বাচন ৷ তার আগে কর্ণাটক নিয়ে সতর্ক কংগ্রেস হাইকমান্ড ৷ কোনওভাবেই যাতে দলীয় অসন্তোষ মাথাচাড়া না-দেয় তারজন্য তৎপর কংগ্রেস নেতৃত্ব ৷ আর তার জন্যই কিছুটা বাড়তি সময় নিচ্ছে দেশের সবচেয়ে পুরনো রাজনৈতিক দলটি । এই দেরি প্রসঙ্গে অবশ্য পালটা কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে শুরু করেছে বিজেপি। পাঁচটি প্রতিশ্রুতিকে সামনে রেখে নির্বাচনে জিতেছে কংগ্রেস । বিজেপির কটাক্ষ, মুখ্যমন্ত্রী বাছতেই যদি এতটা সময় লেগে যায় তাহলে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি কবে পূরণ হবে ?