হায়দরাবাদ, 25 সেপ্টেম্বর : প্রতিপক্ষের ভিত্তিহীন অভিযোগের প্রতিক্রিয়া দেওয়া এক জিনিস, আর কড়া ভাষায় সেই অভিযোগকে মিথ্যা বলে প্রমাণ করা অন্য জিনিস ৷ রাষ্ট্রসংঘের (United Nations) মঞ্চে সেটাই করে দেখিয়েছেন ভারতের ফার্স্ট সেক্রেটারি স্নেহা দুবে (Sneha Dubey) ৷ পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান (Imran Khan) ভারতের বিরুদ্ধে যে সমস্ত অভিযোগ করেছিলেন, তারই জবাবি ভাষণে (Right of Reply) পড়শি দেশকে কার্যত তুলোধনা করেছেন স্নেহা ৷
আরও পড়ুন : US UNGA : পাক-অধিকৃত কাশ্মীর থেকে সরে যাক পাকিস্তান, রাষ্ট্রসংঘে দাবি ভারতের
পাকিস্তানের অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে স্নেহা যে শব্দচয়ন করছেন এবং যে ভঙ্গিতে তার উপস্থাপনা করেছেন, তা সত্যিই ধৈর্য ধরে দেখার এবং শোনার মতো ৷ কথায় আছে না, সঠিক সময় সঠিক শব্দের প্রয়োগ সোনা, রুপোর মতোই দামি ? স্নেহাও ঠিক সেটাই করে দেখিয়েছেন ৷ রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় (United Nations General Assembly) তাঁর বক্তব্য পেশের কয়েক ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই সোশ্য়াল মিডিয়ায় ছেয়ে গিয়েছেন এই কন্যে ৷ ইমরান খান কাশ্মীর প্রসঙ্গ টেনে ভারতকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন ৷ পাল্টা স্নেহা সেই কাশ্মীর থেকেই বেআইনি দখল সরিয়ে নেওয়ার জন্য পাকিস্তানকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ৷
এখনও প্রশ্ন হল কে এই স্নেহা দুবে ? আপাতত গোটা ভারত এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে ৷ ইন্টারনেটের লেটেস্ট ট্রেন্ডিংও এটাই ৷ দেশবাসী তাঁর ভাষণে মুগ্ধ ৷ অধিকাংশেরই মত হল, এত অল্প বয়সে স্নেহার উপর যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তার ভার বিশাল ৷ কিন্তু স্নেহা যেভাবে সেই দায়িত্ব বহন করছেন, তা অনবদ্য ৷
স্নেহা 2012 সালের আইএফএস আধিকারিক (IFS officer) ৷ তাঁর স্কুল জীবন শেষ হয়েছে গোয়ায় ৷ তারপর উচ্চশিক্ষার জন্য পুণের ফার্গুসন কলেজে ভর্তি হন তিনি ৷ কলেজের গণ্ডী পেরোনোর পর এমফিল করে স্নেহা তাঁর পড়াশোনা শেষ করেন ৷ দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jawaharlal Nehru University) স্কুল অফ ইন্ট্যারন্যাশন্যাল স্টাডিস থেকে এমফিল করেন তিনি ৷ সূত্রের দাবি, স্নেহার বয়স যখন মাত্র 12 বছর, তখন থেকেই আইএফএস (Indian Foreign Services) হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন তিনি ৷ মাত্র একবারের চেষ্টাতেই 2011 সালে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় পাস করে যান স্নেহা ৷
স্নেহার পরিবারে তাঁর আগে কেউ সরকারি চাকরি করেননি ৷ তাঁর বাবা একটি বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরত রয়েছেন ৷ মা স্কুল শিক্ষিকা ৷ আইএফএস হওয়ার পর স্নেহার প্রথম পোস্টিং হয় বিদেশ মন্ত্রকে ৷ এর দু’বছর পর মাদ্রিদের ভারতীয় দূতাবাসে পাঠানো হয় তাঁকে ৷ এই মুহূর্তে রাষ্ট্রসংঘে তিনিই ভারতের ফার্স্ট সেক্রেটারি (first secretary) ৷
আরও পড়ুন : Subhankar Bala UPSC : সোশ্যাল মিডিয়ার ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে ইউপিএসসিতে সফল ঝাড়গ্রামের শুভঙ্কর
ইতিমধ্যেই টুইটারে সাড়া ফেলে দিয়েছে স্নেহার ভিডিয়ো ৷ রাষ্ট্রসংঘে তিনি যে বক্তব্য পেশ করেছেন, তা দেখে ফেলেছেন অসংখ্য টুইটার ব্যবহারকারী ৷ তেমনই একজন লিখেছেন, ‘‘পাকিস্তানের জোকারদের মুখ বন্ধ করার জন্য এর থেকে ভাল আর কী হতে পারে ৷ প্রত্যেকটি শব্দই খুব সতর্কভাবে বেছে নেওয়া হয়েছে ৷ তথ্যসমৃদ্ধ ৷ অসাধারণ ৷’’ একইসঙ্গে, এনম গম্ভীর (Eenam Gambhir), বিদিশা মৈত্রর (Vidisha Maitra) মতো ভারতের প্রাক্তন মহিলা আধিকারিকদের সঙ্গেও স্নেহার তুলনা করেছেন কেউ কেউ ৷ উল্লেখ্য, স্নেহার মতোই তাঁরাও অতীতে রাষ্ট্রসংঘের মঞ্চে পাকিস্তানকে একাধিকবার যোগ্য জবাব দিয়েছেন ৷