ETV Bharat / bharat

Siddaramaiah: সোনিয়া-রাহুলদের কট্টর সমালোচক থেকে কংগ্রেসের সরকারের দু’বারের মুখ্যমন্ত্রী, এক নজরে সিদ্দারামাইয়ার রাজনৈতিক জীবন - ডি কে শিবকুমার

জনতা পরিবার থেকে কংগ্রেস, মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান থেকে কর্ণাটকের দু’বারের মুখ্যমন্ত্রী ৷ সিদ্দারামাইয়ার জীবনের চড়াই-উতরাই নেহাত কম নয় ৷

Siddaramaiah
Siddaramaiah
author img

By

Published : May 18, 2023, 8:25 PM IST

বেঙ্গালুরু, 18 মে: টানাপোড়েন শেষে বৃহস্পতিবার জানা গিয়েছে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব আস্থা রেখেছেন সিদ্দারামাইয়ার উপরই ৷ আগামী শনিবার কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন তিনি ৷ এই প্রথম নয়, এর আগেও একবার দক্ষিণ ভারতের ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বর্ষীয়ান এই রাজনীতিকের উপরই ভরসা রেখেছিলেন সোনিয়া-রাহুলরা ৷ 2013 থেকে 2018, কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি ৷ শনিবার দ্বিতীয়বার তিনি ওই পদে শপথ নিতে চলেছেন ৷

গত এক দশকে তিনিই যে কর্ণাটক কংগ্রেসের সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা, তা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই ৷ তবে এবার তাঁকে মুখ্যমন্ত্রিত্বের দৌড়ে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছিলেন ওই রাজ্যে কংগ্রেসের সভাপতি ডি কে শিবকুমার ৷ নয়াদিল্লিতে প্রায় দিনপাঁচেক মাটি কামড়ে পড়ে থেকে বৃহস্পতিবার কর্ণাটক সরকারের শীর্ষপদ ছিনিয়ে নিয়েই উত্তর ভারত থেকে দাক্ষিণাত্যের পথে যাত্রা শুরু করেন তিনি ৷

অথচ এই সিদ্দারামাইয়াই এক সময় ছিলেন কংগ্রেসের সবচেয়ে বড় সমালোচক ৷ 2006 সালে তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন ৷ তার আগে তিনি ছিলেন জনতা দলের নেতা ৷ প্রায়ই আড়াই দশক তিনি জনতা পরিবারের সঙ্গে ছিলেন ৷ সেই সময়ই কংগ্রেসের সমালোচনা তাঁর মুখে বারবার শোনা যেত ৷ কিন্তু জেডিএস থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর কংগ্রেসেই যোগ দেন তিনি ৷ সোনিয়া-রাহুলদের দলে দু’বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন ৷ এর আগে অবশ্য জনতা দলে থাকাকালীন তিনি অর্থমন্ত্রী ও উপ-মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন ৷

1948 সালের 12 অগস্ট কর্ণাটকের মাইসোর জেলার সিদ্দারামানাহুন্ডির বরুণা হুবলিতে তাঁর জন্ম ৷ মধ্য পরিবারের সিদ্দারামাইয়া পড়াশোনায় ভালো ছিলেন ৷ তা নজরে পড়ে যায় স্থানীয় শিক্ষকদের ৷ সেই কারণে তাঁকে সরাসরি চতুর্থ শ্রেণিতে ভরতি করে নেওয়া হয় ৷ স্কুল শেষ করে মাইসোরের যুবরাজা কলেজ থেকে বিএসসি পাস করেন তিনি ৷ তাঁর বাবা চেয়েছিলেন তাঁকে ডাক্তারি পড়াতে ৷

কিন্তু তিনি সারাদা বিলাস কলেজে আইন নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন ৷ সেই সময়ই একই কলেজে অতিথি অধ্যাপক হিসেবে কাজও শুরু করেন ৷ তখন থেকেই তাঁর রাজনীতিতে ঝোঁক বাড়তে শুরু করে ৷ ড. রাম মনোহর লোহিয়ার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মাঝপথে আইনের পড়াশোনা ছেড়ে প্রবেশ করেন ৷ 1978 সালে প্রথমবার জনপ্রতিনিধি হন ৷ সেই সময় ভোটে জিতে তালুক ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের সদস্য হন ৷ দু’বছর পর, 1980 সালে তিনি মাইসোর থেকে প্রথমবার লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৷ কিন্তু হেরে যান৷ 1983 সালে লোক দলের প্রার্থী হিসেবে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হন ৷

1991 সালে তিনি আবার লোকসভায় লড়াই করেন কোপ্পাল কেন্দ্র থেকে ৷ কিন্তু হেরে যান ৷ 1994 সালে জনতা দলের হয়ে বিধানসভা ভোটে জিতে দেবেগৌড়ার সরকারে অর্থমন্ত্রী হন ৷ 1996 সালে কর্ণাটকের উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদে তিনি বসেন ৷ 1999 সালে যখন জনতা দল ভেঙে যায়, সেই সময় দেবেগৌড়ার সঙ্গে জনতা দল সেকুলারেই থেকে যান তিনি ৷ তবে ওই বছর ভোটে হেরে যান ৷ 2004 সালে আবার জয়ের সরণিতে তিনি ফেরেন ৷ আর কংগ্রেস-জেডিএস সরকারে ফের উপ-মুখ্যমন্ত্রী হন ৷

2006 সালে তাঁকে জেডিএস থেকে বহিষ্কার করা হয় ৷ তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন৷ তাঁকে যোগদান করাতে সেই সময় কর্ণাটকে উপস্থিত হয়েছিলেন স্বয়ং সোনিয়া গান্ধি ৷ পরে চামুণ্ডেশ্বরী থেকে উপ নির্বাচনে জিতে কংগ্রেসের বিধায়ক হন ৷ 2008 সালে বরুণা কেন্দ্র থেকে জিতে তিনি বিরোধী দলনেতা ৷ সেই সময় বিজেপি ক্ষমতায় ৷ বিজেপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে রাজ্যজুড়ে আন্দোলন শুরু করেন ৷ যা 2013 সালে কর্ণাটকে কংগ্রেসকে জিততে সাহায্য করে৷ ফলে মুখ্যমন্ত্রী হন সিদ্দারামাইয়া ৷

সেই সিদ্দারাইমাইয়াই আবার মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন ৷ তবে তাঁর ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছেন শিবকুমার ৷ তাই এবার প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ সামলানোর পাশাপাশি তাঁকে হয়তো কিছুটা দলের অন্দরেই লড়াই চালিয়ে যেতে হবে ৷

আরও পড়ুন: সিদ্দারামাইয়ার শপথে আমন্ত্রিত মমতা, জোরালো বিরোধী জোটের ঐক্য

বেঙ্গালুরু, 18 মে: টানাপোড়েন শেষে বৃহস্পতিবার জানা গিয়েছে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব আস্থা রেখেছেন সিদ্দারামাইয়ার উপরই ৷ আগামী শনিবার কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে চলেছেন তিনি ৷ এই প্রথম নয়, এর আগেও একবার দক্ষিণ ভারতের ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বর্ষীয়ান এই রাজনীতিকের উপরই ভরসা রেখেছিলেন সোনিয়া-রাহুলরা ৷ 2013 থেকে 2018, কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি ৷ শনিবার দ্বিতীয়বার তিনি ওই পদে শপথ নিতে চলেছেন ৷

গত এক দশকে তিনিই যে কর্ণাটক কংগ্রেসের সবচেয়ে প্রভাবশালী নেতা, তা অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই ৷ তবে এবার তাঁকে মুখ্যমন্ত্রিত্বের দৌড়ে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছিলেন ওই রাজ্যে কংগ্রেসের সভাপতি ডি কে শিবকুমার ৷ নয়াদিল্লিতে প্রায় দিনপাঁচেক মাটি কামড়ে পড়ে থেকে বৃহস্পতিবার কর্ণাটক সরকারের শীর্ষপদ ছিনিয়ে নিয়েই উত্তর ভারত থেকে দাক্ষিণাত্যের পথে যাত্রা শুরু করেন তিনি ৷

অথচ এই সিদ্দারামাইয়াই এক সময় ছিলেন কংগ্রেসের সবচেয়ে বড় সমালোচক ৷ 2006 সালে তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন ৷ তার আগে তিনি ছিলেন জনতা দলের নেতা ৷ প্রায়ই আড়াই দশক তিনি জনতা পরিবারের সঙ্গে ছিলেন ৷ সেই সময়ই কংগ্রেসের সমালোচনা তাঁর মুখে বারবার শোনা যেত ৷ কিন্তু জেডিএস থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর কংগ্রেসেই যোগ দেন তিনি ৷ সোনিয়া-রাহুলদের দলে দু’বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন ৷ এর আগে অবশ্য জনতা দলে থাকাকালীন তিনি অর্থমন্ত্রী ও উপ-মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলেছেন ৷

1948 সালের 12 অগস্ট কর্ণাটকের মাইসোর জেলার সিদ্দারামানাহুন্ডির বরুণা হুবলিতে তাঁর জন্ম ৷ মধ্য পরিবারের সিদ্দারামাইয়া পড়াশোনায় ভালো ছিলেন ৷ তা নজরে পড়ে যায় স্থানীয় শিক্ষকদের ৷ সেই কারণে তাঁকে সরাসরি চতুর্থ শ্রেণিতে ভরতি করে নেওয়া হয় ৷ স্কুল শেষ করে মাইসোরের যুবরাজা কলেজ থেকে বিএসসি পাস করেন তিনি ৷ তাঁর বাবা চেয়েছিলেন তাঁকে ডাক্তারি পড়াতে ৷

কিন্তু তিনি সারাদা বিলাস কলেজে আইন নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন ৷ সেই সময়ই একই কলেজে অতিথি অধ্যাপক হিসেবে কাজও শুরু করেন ৷ তখন থেকেই তাঁর রাজনীতিতে ঝোঁক বাড়তে শুরু করে ৷ ড. রাম মনোহর লোহিয়ার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মাঝপথে আইনের পড়াশোনা ছেড়ে প্রবেশ করেন ৷ 1978 সালে প্রথমবার জনপ্রতিনিধি হন ৷ সেই সময় ভোটে জিতে তালুক ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের সদস্য হন ৷ দু’বছর পর, 1980 সালে তিনি মাইসোর থেকে প্রথমবার লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৷ কিন্তু হেরে যান৷ 1983 সালে লোক দলের প্রার্থী হিসেবে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হন ৷

1991 সালে তিনি আবার লোকসভায় লড়াই করেন কোপ্পাল কেন্দ্র থেকে ৷ কিন্তু হেরে যান ৷ 1994 সালে জনতা দলের হয়ে বিধানসভা ভোটে জিতে দেবেগৌড়ার সরকারে অর্থমন্ত্রী হন ৷ 1996 সালে কর্ণাটকের উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদে তিনি বসেন ৷ 1999 সালে যখন জনতা দল ভেঙে যায়, সেই সময় দেবেগৌড়ার সঙ্গে জনতা দল সেকুলারেই থেকে যান তিনি ৷ তবে ওই বছর ভোটে হেরে যান ৷ 2004 সালে আবার জয়ের সরণিতে তিনি ফেরেন ৷ আর কংগ্রেস-জেডিএস সরকারে ফের উপ-মুখ্যমন্ত্রী হন ৷

2006 সালে তাঁকে জেডিএস থেকে বহিষ্কার করা হয় ৷ তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন৷ তাঁকে যোগদান করাতে সেই সময় কর্ণাটকে উপস্থিত হয়েছিলেন স্বয়ং সোনিয়া গান্ধি ৷ পরে চামুণ্ডেশ্বরী থেকে উপ নির্বাচনে জিতে কংগ্রেসের বিধায়ক হন ৷ 2008 সালে বরুণা কেন্দ্র থেকে জিতে তিনি বিরোধী দলনেতা ৷ সেই সময় বিজেপি ক্ষমতায় ৷ বিজেপির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে রাজ্যজুড়ে আন্দোলন শুরু করেন ৷ যা 2013 সালে কর্ণাটকে কংগ্রেসকে জিততে সাহায্য করে৷ ফলে মুখ্যমন্ত্রী হন সিদ্দারামাইয়া ৷

সেই সিদ্দারাইমাইয়াই আবার মুখ্যমন্ত্রী হতে চলেছেন ৷ তবে তাঁর ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছেন শিবকুমার ৷ তাই এবার প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ সামলানোর পাশাপাশি তাঁকে হয়তো কিছুটা দলের অন্দরেই লড়াই চালিয়ে যেতে হবে ৷

আরও পড়ুন: সিদ্দারামাইয়ার শপথে আমন্ত্রিত মমতা, জোরালো বিরোধী জোটের ঐক্য

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.