মুম্বই, 4 জুলাই: এনসিপির নেতৃত্ব ঘিরে তৈরি হওয়া সংকট এখনও চলছে। দ্রুত কোনও সমাধান সূত্র মেলার আশাও দেখছে না রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ। দলের রাশ নিজেদের হাতে রাখতে কাকা-ভাইপো কেউই চেষ্টার ত্রুটি রাখছেন না। কাকা, শরদ পাওয়ার ভাইপো অজিত-সহ 9 বিধায়ককে সোমবার সন্ধ্যার দিকে দল থেকে বহিস্কার করেছেন। রাতের দিকে দলের আরও দুই সাংসদ সুনীল তারকে এবং প্রফুল প্যাটেলকেও দল থেকে বরখাস্ত করেছেন তিনি। এমনই আবহে বুধবার দুটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হতে চলেছে মুম্বইয়ে।
দুটি বৈঠকই এনসিপি'র। শরদ পাওয়ারা বৈঠকে বসছেন ওয়াইবি চৌহান সেন্টারে। পাশপাশি অজিতদের বৈঠক হবে বান্দ্রার ভুজবল নলেজ সেন্টারে। দু'পক্ষেরই দাবি, বেশিরভাগ বিধায়ক তাদের সমর্থন করছেন। ঠিক এই পরিস্থিতিতে বুধবার কোন বৈঠকে বেশি সংখ্যক বিধায়ক যোগ দেন তা অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে। শহরের দুটি এলাকায় দুটি আলাদা আলাদা সময় বৈঠক শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে। সকাল 11টা নাগাদ অজিতরা বৈঠকে বসবেন । তার ঘণ্টা দুয়েক পর দুপুর 1টা নাগাদ শরদদের বৈঠক শুরু হওয়ার কথা।
আরও পড়ুন: এবার এনসিপি-তে মহা-সংকট, একতরফা রাজ্য সভাপতির নাম ঘোষণা প্রফুলের
কমেবেশি এক বছরের মধ্যে মহারাষ্ট্রের দুটি রাজনৈতিক দল প্রায় একই ধরনের সংকটের সামনে দাঁড়িয়ে । 2022 সালের জুন মাসে আচমকাই শিবসেনার বেশ কয়েকজন বিধায়ককে নিয়ে উধাও হয়ে যান দলের নেতা একনাথ শিন্ডে। পরে তাঁকে আরও বেশি সংখ্যক বিধায়ক সমর্থন করেন। আরও পরে শিবসেনার এই অংশ বিজেপিকে সঙ্গে নিয়ে সরকার গড়ে । সংখ্যা না থাকায় মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দিতে হয় উদ্ধব ঠাকরকে । বাবা বালাসাহেবের হাতে গড়া দলের রাশ চলে যায় একনাথের হাতে। সুপ্রিম কোর্টও পরে একনাথদের পক্ষেই রায় দেয়।
এনসিপির অবস্থাও প্রায় একই। কাকা শরদ পাওয়ার ক্রমাগত বিজেপি বিরোধিতার কথা বললেও উলটো পথে হাঁটলেন অজিত। দলের কিছু বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে শিবসেনা-বিজেপির সরকারকে সমর্থন করেন । শপথ নেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদে। তবে এই প্রথম নয়, প্রায় 4 বছর আগেও এভাবেই কাউকে আগাম কিছু না জানিয়ে উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন অজিত । সেই সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন দেবেন্দ্র ফডনবিশ।
আরও পড়ুন: শিন্ডেকে গদিচ্যুুত করে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হবেন আজিত পাওয়ার, দাবি কংগ্রেস নেতার
যাদুসংখ্যা না থাকায় 80 ঘণ্টার মধ্যে সরকার পড়ে যায়। কংগ্রেস এবং এনসিপিকে সঙ্গে নিয়ে সরকার গড়ে শিবসেনা। সরকার গঠনের প্রায় আড়াই বছর পরে শিবসেনায় ভাঙন ধরিয়ে সেই সরকারকে ফেলে দেয় বিজেপি। এবার প্রায় একই রকমের সংকটের সামনে দাঁড়িয়ে এনসিপি । শরদ কোন পথে এই সংকটের মোকাবিলা করবেন সেটাই এখন কোটি টাকার প্রশ্ন।