নয়াদিল্লি, 16 অক্টোবর: 26 সপ্তাহের গর্ভবতী এক মহিলার গর্ভপাতের আবেদন সোমবার খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট ৷ চর্চিত এই মামলায় এদিন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা দিল্লির এইমস হাসপাতালকে নির্দেশ দিয়েছে গর্ভবতী ওই মহিলাকে সব ধরনের চিকিৎসা পরিষেবা দিতে, যাতে তিনি স্বাভাবিক সময়ে সন্তান প্রসব করতে পারেন ৷ দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন 3 সদস্যের বেঞ্চে এদিন মামলাটির শুনানি হয় ৷ বেঞ্চের অন্য দুই বিচারপতি হলেন, বিচারপতি জেবি পার্দিওয়ালা ও বিচারপতি মনোজ মিশ্র ৷ গর্ভস্থ ভ্রুণের প্রি-ম্যাচিওর ডেলিভারিও এদিন খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত ৷
এদিন এই আবেদনের প্রেক্ষিতে রায় দিতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, যেখানে ওই গর্ভস্থ ভ্রূণের সুস্থ জীবন প্রাপ্তির পূর্ণ সম্ভাবনা আছে সেখানে আদালত এই মহিলার গর্ভপাতের অনুমতি দিতে পারে না ৷ তবে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, ওই মহিলা চাইলে সন্তান জন্মের পর শিশুটির দায়িত্ব সরকার নিতে পারে ৷ এই মামলার প্রেক্ষিতে গত 13 অক্টোবর সুপ্রিম কোর্ট এইমসের মেডিক্যাল বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছিল, 26 সপ্তাহের গর্ভবতী ওই মহিলার গর্ভস্থ ভ্রূণের মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা আছে কি না ৷ ওই মহিলার স্বাস্থ্য পরীক্ষারও নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত ৷ মানসিক অবসাদ ও গুরুতর প্রসবোত্তর সাইকোসিসে ওই মহিলা ভুগছেন বলে আদালতে তাঁর আইনজীবী জানিয়েছিলেন ৷ ফলে সন্তানকে লালন করার ক্ষমতা না থাকার কারণ দেখিয়ে গর্ভপাতের অনুমতি চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই মহিলা ৷
এইমসের চিকিৎসকদের কাছে সুপ্রিম কোর্ট জানতে চেয়েছিল, মহিলাটির গর্ভস্থ ভ্রূণের মধ্যে কোন অস্বাভাবিকতা আছে কি না এবং মহিলা যদি পূর্ণসময়ের জন্য গর্ভধারণ করেন তাহলে কী ওষুঝের কোনও খারাপ প্রভাব তাঁর শরীরে পড়বে কি না ৷ চিকিৎসকদের সেই রিপোর্ট দেখেই এদিন ওই মহিলার আবেদন খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত ৷
ওই মহিলাকে এর আগে তাঁর গর্ভপাতের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্যও বলেছিল আদালত ৷ মহিলার ওই গর্ভপাতের আবেদন নিয়ে শুনানিতে রাজি হলেও সুপ্রিম কোর্ট গত বৃহস্পতিবার জানিয়েছিল, 26 সপ্তাহের গর্ভস্থ ওই ভ্রূণেরও পৃথিবীর আলো দেখার অধিকার রয়েছে ৷ তাই এই বিষয়ে চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া হবে ৷
আরও পড়ুন: শিক্ষিত হলেই তাঁর স্বচ্ছ ভাবমূর্তি গঠিত হয় না, মত শীর্ষ আদালতের
এমটিপি অ্যাক্ট অনুযায়ী, সাধারণত ভ্রূণের বয়স 24 সপ্তাহ হয়ে গেলে কোনও মহিলাকে গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়া হয় না ৷ কিন্তু এক্ষেত্রে মহিলা তাঁর মানসিক অবসাদ ও চিকিৎসার দোহাই দিয়ে গর্ভপাতের অনুমতি চান ৷ এর আগে সুপ্রিম কোর্টের দুই মহিলা বিচারপতির মধ্যেও 26 সপ্তাহের গর্ভবতী এই মহিলাকে গর্ভপাতের অনুমতি দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে মতানৈক্য হয় ৷ এরপর মামলাটি প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে যায় ৷