মুম্বই, 14 অগস্ট: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে হারানোর ক্ষমতা রাখেন কংগ্রেসের প্রিয়াঙ্কা গান্ধি ৷ এমনটাই মনে করেন শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরে শিবিরের সাংসদ সঞ্জয় রাউত ৷ তাঁর দাবি, উত্তরপ্রদেশের বারাণসীর লোকেরা মোদির বিরুদ্ধে প্রিয়াঙ্কাকেই প্রার্থী হিসেবেই চান ৷
তাঁর কথায়, বারাণসীতে প্রিয়াঙ্কা মোদির বিরুদ্ধে লড়াই করবেন কি না, সেটা একেবারেই কংগ্রেসের ওই নেত্রীর সিদ্ধান্ত হবে ৷ কিন্তু তিনি (প্রিয়াঙ্কা) যদি মোদির বিরুদ্ধে বারাণসীতে ভোটে লড়েন, তাহলে অবশ্যই জিতবেন ৷ তাঁর আরও দাবি, আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের তিনটি লোকসভা আসন রায়বরেলি, বারাণসী ও আমেঠিতে বিজেপির লড়াই অনেক কঠিন হবে ৷
কংগ্রেসের শক্তঘাঁটি: রায়বরেলি ও আমেঠি বরাবর কংগ্রেসের শক্তিঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ৷ 2014 সালে উত্তরপ্রদেশের গেরুয়া ঝড়ের মধ্য়েও ওই দু’টি আসনে জিতেছিলেন সোনিয়া গান্ধি ও রাহুল গান্ধি ৷ পাঁচ বছর পর অবশ্য পরিস্থিতি কিছুটা বদলায় ৷ আমেঠি থেকে রাহুল গান্ধি হেরে যান ৷ তবে রায়বরেলির আসন দখলে রাখেন সোনিয়া গান্ধি ৷ 2019 সালের ওই লোকসভা নির্বাচনের কিছু আগেই রাজনীতিতে প্রবেশ প্রিয়াঙ্কার ৷ তাঁকে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পদে বসিয়ে দায়িত্ব দেওয়া পূর্ব উত্তরপ্রদেশের ৷
উত্তরপ্রদেশের পূর্ব অংশের মধ্যেই পড়ছে বারাণসীর আসনটি ৷ ফলে সেবারও প্রধানমন্ত্রী মোদির বিরুদ্ধে প্রিয়াঙ্কা লড়াই করতে পারেন বলে জল্পনা ছড়িয়েছিল ৷ তবে তা আর বাস্তবায়িত হয়নি ৷ কিন্তু দায়িত্ব নিয়ে উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের ভোট-ভাগ্য খোলাতে পারেননি প্রিয়াঙ্কা ৷ বছর তিনকে পর 2022-এ উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনের পুরো দায়িত্ব প্রিয়াঙ্কার কাঁধেই ছিল ৷ তার পরও কংগ্রেসের ফল ভালো হয়নি ৷
আরও পড়ুন: মণিপুর জ্বলছে আর সংসদে দাঁড়িয়ে 'জোকস' প্রধানমন্ত্রীর, তীব্র আক্রমণ রাহুলের
রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে বিজেপির সাংগঠনিক অবস্থা বেশ মজবুত ৷ এবারও সেখানে কংগ্রেসের ফল খুব একটা বদল হবে বলে মনে হয় না ৷ বিজেপির কিছু আসন যদি কমে, সেক্ষেত্রে লাভ সমাজবাদী পার্টিরই হওয়ার কথা ৷ তাই এই পরিস্থিতি সরাসরি মোদির বিরুদ্ধে প্রিয়াঙ্কা লড়াইয়ে নামতে রাজি নাও হতে পারেন ৷ তবে যদি সত্যিই এমন কিছু হয়, তাহলে 10 বছর পর বারাণসীতে আবার একটা হাইভোল্টেজ লড়াই হতে পারে ৷ কারণ, 2014 সালে মোদির বিরুদ্ধে ওই আসনে লড়েছিলেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল ৷ সেই লড়াইও যথেষ্ট হাই ভোল্টেজ ছিল ৷
শরদ-অজিত বৈঠক নিয়ে সঞ্জয় রাউতের বক্তব্য: সঞ্জয় রাউত শুধু মোদির বিরুদ্ধে প্রিয়াঙ্কার লড়াইয়ের জল্পনা ভাসিয়ে থেমে যাননি ৷ মহারাষ্ট্রের রাজনীতি নিয়ে মুখ খুলেছেন ৷ সম্প্রতি এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ার এবং তাঁর ভাইপো অজিত পাওয়ার (এখন মহারাষ্ট্রের উপ-মুখ্যমন্ত্রী) বৈঠক করেছেন ৷ সেই বৈঠক নিয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমার মনে হয় শরদ পাওয়ার ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে অজিত পাওয়ারকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ৷’’
এই প্রসঙ্গে তিনি টেনে এনেছেন একসময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের বৈঠকের প্রসঙ্গ ৷ সঞ্জয় রাউতের বক্তব্য, ‘‘নওয়াজ শরিফ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যদি দেখা করতে পারেন, তাহলে শরদ পাওয়ার ও অজিত পাওয়ার কেন নয় ?’’
আরও পড়ুন: মণিপুরে ভারতমাতার হত্যা করেছে বিজেপি, লোকসভায় অভিযোগ রাহুলের
তাঁর আরও দাবি, মহারাষ্ট্রের বর্তমান সরকারে থেকে খুশি নন অজিত ৷ বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়নবীসও খুশি নন ৷ এই নিয়ে সঞ্জয় রাউত বলেছেন, ‘‘রাজনীতিতে যেকোনও কিছু হতে পারে । অজিত পাওয়ার, দেবেন্দ্র ফড়নবীস এবং মহারাষ্ট্রের মানুষ এই বর্তমান সরকারে খুশি নয় ।’’