নয়াদিল্লি, 3 অক্টোবর: দেশের ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব (Unemployment) এবং উপার্জনের বৈষম্যকে (Income Inequality) অসুরের সঙ্গে তুলনা করলেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (Rashtriya Swayamsevak Sangh) বা আরএসএস (RSS)-এর সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসবলে (Dattatreya Hosabale) ৷ দেবীপক্ষে তাঁর এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের ৷ যদিও একইসঙ্গে তাঁর দাবি, সমস্যার মোকাবিলায় গত কয়েক বছরের মধ্যে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে ৷
রবিবার আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য পেশ করার সময় দত্তাত্রেয় বলেন, "দেশের প্রায় 20 কোটি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাস করেন ৷ আরও প্রায় 23 কোটি মানুষের দৈনিক রোজগার 375 টাকারও কম ৷ এটি অত্যন্ত দুঃখের বিষয় ৷ দারিদ্র্য আমাদের সামনে অসুরের মতোই একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে ৷ আমাদের এই অসুরকে বধ করতে হবে ৷ সেটি অত্যন্ত জরুরি ৷ উপার্জনের বৈষম্যও একটি বড় সমস্যা ৷ আমাদের এই দু'টি সমস্যাকেই দূর করতে হবে ৷"
আরও পড়ুন: অঙ্কিতাকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যে অভিযুক্ত আরএসএস নেতা, পুলিশে অভিযোগ
সংশ্লিষ্ট অনুষ্ঠানের মঞ্চে দেশের বর্তমান বেকারত্ব সমস্যা নিয়ে কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরেন দত্তাত্রেয় ৷ তিনি বলেন, "দেশে বেকারের সংখ্যা প্রায় 4 কোটি ৷ এঁদের মধ্যে প্রায় 2 কোটি 20 লক্ষ কর্মহীন মানুষ গ্রামে থাকেন ৷ বাকি 1 কোটি 80 লক্ষ বেকার শহরাঞ্চলের বাসিন্দা ৷ শ্রমিক শক্তি সংক্রান্ত সমীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে, আমাদের দেশে বেকারত্বের হার 7.6 শতাংশ ৷ এই সমস্য়া মেটাতে আমাদের শুধুমাত্র জাতীয় স্তরে বিভিন্ন প্রকল্প করলেই হবে না ৷ একইসঙ্গে, আঞ্চলিকভাবেও বিভিন্ন প্রকল্প শুরু করতে হবে ৷ একমাত্র তবেই নতুন করে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি সম্ভব ৷"
বেকারত্ব দূর করতে আরও বেশি করে ছোট ছোট শিল্প গড়ে তোলার উপর জোর দিয়েছে দত্তাত্রেয় ৷ একইসঙ্গে, যুব সম্প্রদায়ের দক্ষতা বাড়ানোর উপরও গুরুত্ব আরোপ করেছেন তিনি ৷ উপার্জনের বৈষম্য প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলেছেন এই আরএসএস নেতা ৷ তাঁর বক্তব্য, ভারত পৃথিবীর ষষ্ঠ বৃত্ততম অর্থনীতি ৷ অথচ, দেশের অর্ধেক জনতার হাতে মোট রোজগারের মাত্র 13 শতাংশ পৌঁছয় ! এটা কি সঠিক ?
প্রসঙ্গত, মোদি জমানায় গরিব আরও গরিব এবং ধনী আরও ধনী হয়েছে, এমন অভিযোগ নতুন কিছু নয় ৷ সেই প্রেক্ষাপটে একজন প্রথম সারির আরএসএস নেতার এমন মন্তব্য কেন্দ্রের অস্বস্তি খানিকটা হলেও বাড়াবে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ ৷ পাশাপাশি বেকারত্বের মতো সমস্যাকে ভিত্তি করে কেন্দ্রীয় সরকারকে লাগাতার আক্রমণ করে আসা বিরোধিরাও নতুন হাতিয়ার পাবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একটা অংশ ।