নয়াদিল্লি, 28 ডিসেম্বর: দোষী হলেও তার বাবা হওয়ার অধিকার আছে ৷ আর এই অধিকার বেঁচে থাকার অধিকারের অন্তর্ভুক্ত ৷ তাই এক দোষীকে চার সপ্তাহের জন্য প্যারোলে তার স্ত্রীর কাছে যাওয়ার অনুমতি দিল দিল্লি হাইকোর্ট ৷ খুনের অপরাধে 41 বছর বয়সি অপরাধী যাবজ্জীবন কারাবাসে বন্দি ৷ তবে সে বাবা হতে চায় ৷ তাই তার স্ত্রীর কাছে থাকবে ৷ চিকিৎসাজনিত কয়েকটি প্রক্রিয়ায় স্ত্রীকে সাহায্য করবে ওই খুনের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত অপরাধী ৷
বিচারপতি স্বর্ণকান্ত শর্মা বলেন, "একজন দোষীর কারাবাসে থাকলেই সে অন্য নাগরিকের থেকে কম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায় না ৷ এই মামলায় দোষীর সাজা শেষ হতে হতে তার এবং তার স্ত্রীর শরীরের ঘড়িটিও বদলে যাবে ৷ আর তখন স্ত্রী গর্ভধারণ হতে চাইলেও শরীর বাধা হয়ে দাঁড়াবে ৷ কিন্তু তাদেরও সন্তানধারণের মৌলিক অধিকার আছে ৷ সেই অধিকারকে রাষ্ট্রের কারণে ছোট করা যায় না ৷
সন্তানধারণের অধিকার প্রসঙ্গে বিচারপতি তাঁর নির্দেশে জানান, "দোষী কারাবাসে রয়েছে ৷ এই কারণে সন্তানকে নিয়ে আসার প্রক্রিয়ায় দেরি করার অর্থ একজনের পিতৃত্ব-মাতৃত্বের মৌলিক অধিকার খর্ব করা ৷ বিশেষ কিছু পরিস্থিতিতে কারাবন্দি অবস্থাতেও দোষীর প্রজননের অধিকার রয়েছে ৷ তার উদাহরণ এই মামলাটি ৷" তাই আদালত কোনও দ্বিধা ছাড়াই সংবিধানের 21 নম্বর ধারায় বেঁচে থাকার অধিকার অনুযায়ী দোষীকে পেরোলে মুক্তি দিয়েছে ৷
এই মামলায়, গত 14 বছর ধরে অপরাধী জেলে বন্দি রয়েছে ৷ এই অবস্থায় সে আদালতে পেরোলে মুক্তির আবেদন জানায় ৷ এর কারণ, সে এবং তার স্ত্রী তাদের বংশধারা রক্ষার্থে পেরোলে মুক্তির আবেদন জানিয়েছে ৷ ওই দম্পতি ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন বা আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তান ধারণ করতে চায় ৷ পেরোলে ছাড়া পেলে দোষী এবং তার স্ত্রীর বেশকিছু শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে ৷ দম্পতির বয়সের দিকটি চিন্তা করে আদালতের পর্যবেক্ষণ, দোষীর সাজা শেষ হওয়া পর্যন্ত দু'জনের শরীরের ঘড়িটি অপেক্ষা করতে পারবে না ৷ আর নিজের সন্তান পাওয়ার ইচ্ছে সবারই থাকে ৷ এই বিষয়টি প্রত্যেকের নিজস্ব পছন্দের এবং ব্যক্তিগত ৷ তাই আদালত ওই দোষী এবং তার স্ত্রীর সন্তানধারণের ইচ্ছেকে সম্মান জানায় ৷ এমতাবস্থায় আদালত ওই দোষীকে 4 সপ্তাহের জন্য পেরোলে মুক্তি দিয়েছে ৷ তবে এর জন্য ওই আবেদনকারীকে 10 হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ড আদালতে জমা রাখতে হয়েছে ৷
আরও পড়ুন: