আগরতলা, 26 ডিসেম্বর: সংবাদ শিরোনামে ত্রিপুরার রাজকুমার মালাকার ৷ মেধা এবং প্রত্যুৎপন্নমতিত্বকে কাজে লাগিয়ে এক অনন্য জিনিস তৈরি করে ফেলেছেন পড়শি রাজ্যের বছর ছাব্বিশের যুবক ৷ যাকে আবিষ্কার বললেও অত্যুক্তি হয় না ৷ ত্রিপুরার কমলপুরের রাজকুমার বানিয়ে ফেলেছেন বায়ুচালিত এমন এক ইঞ্জিন, যা ছোট থেকে বড় সবরকমের মোটরযান চালাতে প্রস্তুত ৷ ত্রিপুরার প্রত্যন্ত ধলাই গ্রামে কলাবিভাগের ছাত্রের এই আবিষ্কার স্বাভাবিকভাবেই তাক লাগিয়ে দিয়েছে (Rajkumar Malakar invents wind powered motor vehicle engine) ৷ ইটিভি ভারতকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজকুমার দাবি করেছেন, এমন ইঞ্জিন কেবল ভারত কেন, বিশ্বে প্রথম (Rajkumar claimed that his machine is the first of its kind in the entire world) ৷
রাজকুমারের আরও দাবি, বহুবর্ষজীবী শক্তির উৎস হিসেবে বাতাসকে সঞ্চয় করে রাখা সম্ভব ৷ পরবর্তীতে সেই বায়ুচালিত শক্তি বা জ্বালানিকে কাজে লাগিয়ে যে কোনও মোটরযানের ইঞ্জিন তৈরি সম্ভব ৷ এমনকী সঞ্চিত বায়ুশক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব বলেও দাবি করেছেন রাজকুমার ৷ ত্রিপুরার যুবক ইটিভি-কে জানিয়েছেন, "অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমি বায়ুচালিত এমন একটি ইঞ্জিন তৈরি করেছি যা সম্পূর্ণ নতুন ৷ ইঞ্জিনটির নামকরণ করেছি বায়ুমান ৷ এটি অত্যন্ত শক্তিশালী একটি ইঞ্জিন ৷ বায়ুশক্তিকে কাজে লাগিয়ে তৈরি এই ইঞ্জিনটি সম্পূর্ণরূপে পরিবেশবান্ধব ৷"
কিন্তু হঠাৎ কী মনে করে তাঁর এই আবিষ্কার ? উত্তরে রাজকুমার বলেন, "আমি একটা দূষণমুক্ত পৃথিবীর স্বপ্ন দেখি ৷ আমার এই আবিষ্কার তারই ফলশ্রুতি ৷" একরাশ উৎকণ্ঠাকে সঙ্গী করে ত্রিপুরার যুবক আরও বলছেন, "বিশ্ব উষ্ণায়ণ, গ্রিন হাউস এফেক্ট, ওজোন লিকেজের মত ঘটনা সত্যিই উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে পৌঁছে গিয়েছে ৷ আমি পৃথিবীকে এই সবকিছু থেকে পরিত্রাণ দিতে চাই ৷ সমগ্র বিশ্বের সামনে আমার আবিষ্কারকে তুলে ধরতে চাই ৷ পৃথিবী কাঁদছে ৷ আমার এই আবিষ্কার খুব শীঘ্রই পৃথিবীর প্রয়োজন বলে আমার বিশ্বাস ৷"
আরও পড়ুন: পেট্রল-ডিজ়েল নয়, জলেই চলবে গাড়ি, দিশা দেখাচ্ছে খড়গপুর IIT
তার ইঞ্জিন তৈরির উপকরণ নিয়ে বলতে গিয়ে রাজকুমার জানিয়েছেন, বাতাসচালিত ইঞ্জিন তৈরির উপকরণে একদিকে যেমন মানবসম্পদের উপকার হবে, তেমনই এতে উপকৃত হবে প্রকৃতিও ৷ পাশাপাশি একই আয়তনের পেট্রলচালিত ইঞ্জিনের তুলনায় এই বাতাসচালিত ইঞ্জিন অনেক বেশি কার্যকরী হবে বলেও দাবি করেছেন রাজকুমার ৷ কিন্তু প্রদীপের নীচে অন্ধকারও রয়েছে ৷
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির অপেক্ষায় বর্তমানে রাজকুমারের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ আর্থিক জোগান ৷ কোনওভাবেই এই ইঞ্জিন তৈরির ফর্মুলা অন্যের সঙ্গে শেয়ার করতে চান না ৷ তাই কেবল দেশ নয়, দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশ থেকেও আর্থিক অনুদানের আশায় রাজকুমার ৷