রাজনন্দগাঁও (ছত্তিশগড়), 30 অক্টোবর: নির্বাচনের প্রথম পর্ব শুরু হতে বাকি আর মাত্র একটা সপ্তাহ। প্রচারে ঝড় উঠেছে ছত্তিশগড়ে। নেতা-নেত্রীদের আক্রমণ-প্রতি আক্রমণে সরগরম রাজনীতি। এরই মধ্যে প্রবল অস্বস্তিতে পড়তে হল মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলকে। অস্বস্তিতে পড়তে হল গোটা দলটাকেই। তাও আবার নিজের দলের সর্বোচ্চ নেতার সৌজন্যে। নির্বাচনী জনসভা থেকে রবিবার রাহুল বলে দিলেন,"আপনাদের মুখ্যমন্ত্রী আদানিদের মতো লোকেদের জন্য কাজ করেন!" নেতার কথা শুনে স্বভাবতই স্তম্ভিত হয়ে যান ভূপেশ। আর রাহুলকে এ হেন 'পুরনো ফর্মে' পেয়ে যারপরনাই খুশি বিজেপি। কটাক্ষ করার সুযোগ হাতাছাড়া করেনি গেরুয়া শিবির।
রাহুলের রাজনৈতিক জীবনে এই ধরনের পরিস্থিতি বারবার তৈরি হয়েছে। প্রকাশ্য ভাষণে একাধিকবার রাতকে দিন করে ফেলেছেন কংগ্রেসের এই প্রাক্তন সভাপতি। তবে ভারত জোড়ো যাত্রার আগে-পরে রাহুলের আদব-কায়দায় কিছুটা পরিবর্তন চোখে পড়েছিল। নিজের দল তো বটেই বিপক্ষের কাছে 'পরিণত নেতা' হিসেবে সমীহ আদায় করতে শুরুও করেছিলেন। এরইমধ্যে আচমকাই ছন্দপতন।
রাহুলের এমন বক্তব্যে রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশের প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহর একটি সাংবাদিক বৈঠকের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। 2018 সালের কর্ণাটক ভোটের ঠিক আগে তৎকালীন বিরোধী দলনেতা বিএস ইয়েদুরাপ্পাকে পাশে বসিয়ে শাহ বলেন, "কর্ণাটকের ইতিহাসে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্থ সরকার হল ইয়েদুরাপ্পার সরকার!" আসলে সিদ্দারামাইয়ার নেতৃত্বে থাকা কংগ্রেস সরকারকে আক্রমণ করতে গিয়ে সেমসাইড করে বসেন আজকের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এবার সেই একই কাজ করলেন রাহুল।
ছত্তিশগড়ে এবার দুটি দফায় বিধানসভা নির্বাচন হচ্ছে। প্রথম দফার ভোট 7 নভেম্বর। আর দ্বিতীয় দফার ভোট 17 তারিখ। গণনা 3 ডিসেম্বর। তার আগে রাজনন্দগাঁও-র একটি সভায় বক্তব্য পেশ করছিলেন রাহুল। একটি অংশে তিনি বলেন, "আপনাদের মুখ্যমন্ত্রীও আদানির মতো লোকের জন্য কাজ করেন।" শুধু তাই নয়, কী বলতে গিয়ে আসলে কী বলে ফেলেছেন সেটাও বুঝতে পারেননি রাজীব-তনয়। পাশে বসা মুখ্যমন্ত্রী কার্যত হতভম্ভ হয়ে পড়েন। রাজ্যের সরকার কৃষকদের জন্য কী কী করেছে তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়েই এমন কথা বলেন রাহুল।
রাহুলের ভাষণের এই ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। স্বভাবতই কটাক্ষ ছাড়েনি বিজেপি। দলের আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, "শেষমেশ সত্যিটা প্রকাশ্যে এল! সবাই জানতে পারল আদানিদের বাড়বাড়ন্তের নেপথ্যে আছে কংগ্রেস। অথচ এই আদানিকে দিবারাত্রি আক্রমণ করে চলেছেন রাহুল!"
আরও পড়ুন: জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হলেও আত্মতুষ্ট না হওয়ার পরামর্শ ছত্তিশগড়ের বিদায়ী উপমুখ্যমন্ত্রীর