চণ্ডীগড়, 23 নভেম্বর: প্রেম করে অন্য সম্প্রদায়ের ছেলেকে বিয়ে করেছিলেন দিদি ৷ তাতেই আপত্তি ছিল ভাইয়ের ৷ শেষমেশ ভুয়ো নার্সকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিদিকে খুনের চেষ্টা করার অভিযোগ উঠল ভাইয়ের বিরুদ্ধে ৷ ইনজেকশন নেওয়ার পরই অসুস্থ হয়ে পড়েন যুবতী ৷ এই ঘটনায় মঙ্গলবার যুবতীর ভাই, ভুয়ো নার্স-সহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷ ঘটনাটি ঘটেছে চণ্ডীগড়ের পিজিআই হাসপাতালের গাইনোকোলজি ওয়ার্ডে ৷ বর্তমানে যুবতীর অবস্থা আশঙ্কাজনক ৷ তিনি পিজিআই হাসপাতালের আইসিইউতে ভরতি । এ ব্যাপারে ওই যুবতীর শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ তদন্তে নামে ।
চণ্ডীগড়ের এসএসপি কানওয়ারদীপ কৌর বলেন, "প্রেম করে বিয়ে করেছিল দিদি ৷ তাতেই দীর্ঘদিন ধরে যুবতীর ভাই ক্ষিপ্ত ছিল ৷ শেষে আরও এক আত্মীয়র সঙ্গে মিলে দিদিকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে সে । এই ঘটনায় চারজন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে । অভিযুক্তরা তাদের অপরাধ স্বীকার করেছে । ধৃতরা হল যুবতীর ভাই জসমিত সিং, আত্মীয় বুটা সিং, তাঁর বন্ধু মনদীপ সিং এবং ভুয়ো নার্স জসপ্রীত কৌর । ইনজেকশন দেওয়া মহিলা জসপ্রীত কৌর একজন কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করেন ।"
পুলিশের তরফে জানা গিয়েছে, 2022 সালে প্রেম করে বিয়ে হয় যুবতীর । তিনি মোহালির বানুর গ্রামের বাসিন্দা । তিনি তাঁর নিজের ইচ্ছায় অন্য সম্প্রদায়ের একটি ছেলেকে বিয়ে করেছিলেন । এই কারণে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে বিয়ের বিরোধিতা করা হয় । 24 বছর বয়সি যুবতী 3 নভেম্বর একটি সন্তানের জন্ম দেন । কিন্তু কিডনির সমস্যার কারণে বানুর হাসপাতাল তাঁকে পিজিআইতে রেফার করে । এরপর তাঁকে নেহেরু হাসপাতালের তৃতীয় তলায় গাইনি ওয়ার্ডে ভরতি করা হয় । যুবতীকে হত্যা করার জন্য একটি ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল ৷ এটিকে অনার কিলিং মামলা হিসেবে বিবেচনা করে পুলিশ তদন্তে নামে ।
15 নভেম্বর যুবতী হাসপাতালের ওয়ার্ডে ছিলেন ৷ তখন লাল কুর্তা এবং নীল জিন্স পরিহিত একজন অচেনা মহিলা পরে এসে বলেন কিডনির ডাক্তার একটি ইনজেকশন দিয়েছেন । সেটা রোগীকে দিতে হবে ৷ এই বলে জসপ্রীত কৌর রোগীকে একটি ইনজেকশন দিয়ে দেয় । এরপরই স্বাস্থ্যকর্মীদের সন্দেহ হয় যে জসপ্রীত নার্স নন । তাঁর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি তাড়াহুড়ো করে চলে যান ৷ এই ঘটনার সামান্য পর থেকেই রোগীর স্বাস্থ্যের অবনতি হতে থাকে । এরপর যুবতীকে আইসিইউতে ভরতি করা হয় ।
চণ্ডীগড়ের এসএসপি কানওয়ারদীপ কৌর জানান, যুবতীর স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ার পরে সেক্টর 11 থানায় অভিযোগ দায়ের হয় ৷ পুলিশ পাতিয়ালার রাজপুরের বাসিন্দা জিতেন্দ্র কৌরের অভিযোগে এক অজ্ঞাত পরিচয় মহিলার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে । 15 নভেম্বর থেকে পুলিশ পিজিআই হাসপাতালের সমস্ত সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে । এরপর ওই ভুয়ো নার্সের খোঁজ মেলে। তদন্তের সময় চণ্ডীগড় পুলিশ বুঝতে পারে যে এটি অনার কিলিং মামলা। যুবতীর ভাই তাঁকে হত্যার চেষ্টা করেছিলেন । এমতাবস্থায় যুবতীর ভাই ও আত্মীয়-সহ আরও একজনকে গ্রেফতার করা হয় ।
আরও পড়ুন: