পুনে, 25 জানুয়ারি: গণআত্মহনন নয়, বরং প্রাণঘাতী প্রতিশোধের শিকার হয়েছিলেন একই পরিবারের সাতজন সদস্য ! মহারাষ্ট্রের পুনের একটি ঘটনায় সামনে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য ৷ পুলিশের দাবি, শুধুমাত্র প্রতিশোধ নিতেই একই পরিবারের সাতজন সদস্যকে ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে ! এবং সেই ভয়াবহ অপরাধ ঘটিয়েছেন মৃতদেরই ঘনিষ্ঠ আত্মীয়রা !
গত ছ'দিন ধরে পুণের দৌণ্ড তালুকের পরগাঁও এলাকার ভিমা নদীতে একের পর এক মৃতদেহ ভেসে আসে ! সব মিলিয়ে মোট সাতটি দেহ উদ্ধার করে পুণে জেলা গ্রামীণ পুলিশ (Pune District Rural Police) ৷ পরে জানা যায়, মৃতরা সকলেই একই পরিবারের সদস্য ছিলেন ৷ প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়, এটি গণআত্মহত্যার ঘটনা ৷ নির্দিষ্ট ধারায় অভিযোগ দায়ের করে শুরু হয় তদন্ত ৷ আর তাতেই সামনে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য ৷ জানা যায়, নিহতদের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়রাই প্রতিশোধ নিতে তাঁদের খুন করেছেন (Pune Revenge Killing)!
আরও পড়ুন: স্ত্রী-সন্তানদের গলার নলি কেটে খুন করে আত্মঘাতী চিকিৎসক !
স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ ধৃতরা নিহতদের আত্মীয় ৷ এই ঘটনায় এক মহিলাও যুক্ত রয়েছেন বলে অভিযোগ ৷ কিন্তু, আপাতত তিনি পলাতক ৷ তাঁর খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে ৷
পুলিশের পেশ করা তথ্য অনুসারে, এই ঘটনায় নিহতরা হলেন, মোহন উত্তম পাওয়ার (45), তাঁর স্ত্রী সঙ্গীতা ওরফে শাহাবাই মোহন পাওয়ার (40), এই দম্পতির মেয়ে রানি শ্য়াম ফলভরে (24), রানির স্বামী শ্য়াম পণ্ডিত ফলভরে (28) এবং রানি ও শ্যামের তিন সন্তান, যথাক্রমে রিতেশ ওরফে ভাইয়া শ্যাম ফলভরে (7), ছোটু শ্য়াম ফলভরে (5) ও কুশনা শ্যাম ফলভরে (3) ৷ নিহতদের মধ্যে প্রথম দু'জন খামগাঁওয়ের বাসিন্দা ছিলেন ৷ বাকিদের বাড়ি ওসমানাবাদ জেলার ওয়াশি তালুকের হাতোলা এলাকায় ৷ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, 18 জানুয়ারি থেকে 24 জানুয়ারি পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে এই সাতজনের দেহ নদী থেকে উদ্ধার করা হয় ৷
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, প্রয়াত মোহন পাওয়ারের এক আত্মীয় মাস কয়েক আগে পথ দুর্ঘটনায় মারা যান ৷ কিন্তু, তাঁর পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, ওই যুবককে খুন করা হয়েছিল এবং তা করেছিলেন পাওয়ার পরিবারের সদস্যরা ! আর তার জেরেই মোহন ও তাঁর গোটা পরিবারকে খতম করে দেওয়া হয় ! রেয়াত করা হয়নি তিন শিশুকেও !
অন্যদিকে, বেশ কিছু সময় আগে মোহন পাওয়ারের ছেলে এক বধূকে নিয়ে পালিয়ে যান ৷ তার জেরে যথেষ্ট অপমান সহ্য করতে হয় এই পরিবারটিকে ৷ তাই প্রাথমিকভাবে পুলিশের মনে হয়েছিল, সেই ঘটনার জেরেই অপমানে গণআত্মহত্যার পথ বেছে নেন পাওয়ার পরিবারের সদস্যরা ৷ কিন্তু, নিজেদের সেই তত্ত্ব ইতিমধ্য়েই খারিজ করে দিয়েছে পুলিশ ৷ এখনও ঘটনার তদন্ত চলছে ৷