নিজামাবাদ (তেলাঙ্গানা), 31 অগস্ট: প্রেমিকের সাহায্যে 6 বছরের শিশুকন্য়াকে খুনের অভিযোগ উঠল মায়ের বিরুদ্ধে (Mother Killed Daughter) ! ঘটনাটি ঘটেছে তেলাঙ্গানার (Telangana) নিজামাবাদ এলাকায় ৷ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত বালিকার নাম নাগলক্ষ্মী ৷ পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, তাকে নিজামাবাদ (Nizamabad) রেলস্টেশনে খুন করে চিন্নাপুরের জঙ্গলে (Chinnapur Forest) ফেলে দেওয়া হয় ৷
এখনও পর্যন্ত যতটুকু জানা গিয়েছে, সেই অনুসারে, খুনে অভিযুক্ত মহিলার নাম দুর্গাভবানী ৷ তাঁর স্বামীর নাম গুরুনাথম ৷ এই দম্পতি বিজয়ওয়াড়ার বাসিন্দা ৷ তাঁদের দুই সন্তান ৷ বড় মেয়ে নাগলক্ষ্মী এবং ছোট মেয়ে গীতামাধবী ৷ তার বয়স মাত্র 14 মাস ৷ আগে গুরুনাথম রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন ৷ কিন্তু, স্ত্রীর আপত্তিতে সেই কাজ ছেড়ে দেন তিনি ৷ বদলে অটো চালিয়ে রোজগার শুরু করেন ৷ গত 14 জুলাই সকালেও অন্য়ান্য দিনের মতো অটো নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান গুরুনাথম ৷ কিন্তু, দুপুরে বাড়িতে খেতে এসে তিনি দেখেন, তাঁর দুই মেয়ে ও স্ত্রী কোথাও নেই ! গুরুনাথমের দাবি, অনেক খুঁজেও স্ত্রী ও দুই সন্তানের কোনও হদিশ পাননি তিনি ৷ যার জেরে স্থানীয় ভবানীপুরম থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন ৷
আরও পড়ুন: শোপিয়ানে এনকাউন্টারে মৃত 3 লস্কর জঙ্গি, উদ্ধার অস্ত্র-বিস্ফোরক
পরবর্তীতে পুলিশ জানতে পারে, দুই মেয়েকে নিয়ে নিজামাবাদে চলে এসেছেন দুর্গাভবানী ৷ প্রথম কয়েকদিন সরকারি হাসপাতাল, বাসস্ট্য়ান্ড এবং রেল স্টেশনে আশ্রয় নেন তিনি ৷ এই স্টেশনেই ধ্য়ারাঙ্গুলা শ্রীনু নামে এক যুবকের সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর ৷ ওই যুবক কোল্লুরের বাসিন্দা ৷ পুলিশের দাবি, আলাপের পরই শ্রীনুর সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন দুর্গাভবানী ৷ পরবর্তীতে তাঁর মনে হয়, নাগলক্ষ্মী বেঁচে থাকলে তিনি এই সম্পর্ক বজায় রাখতে পারবেন না ৷ শুধুমাত্র সেই আশংকা থেকেই 6 বছরের ফুটফুটে মেয়েকে নিজের হাতে খুন করেন দুর্গাভবানী ! তারপর প্রেমিকের সাহায্য়ে নিজেই নাগলক্ষ্মীর দেহ জঙ্গলে ফেলে দিয়ে আসেন ৷ ঘটনাটি ঘটে গত 22 অগস্ট ৷
এর পরদিন মাকে ফোন করেন দুর্গাভবানী ৷ জানান, তাঁর টাকার খুব প্রয়োজন ৷ এদিকে, শাশুড়ির থেকে সব ঘটনা জানতে পারেন গুরুনাথম ৷ সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই যুবক ৷ দুর্গাভবানীর মোবাইল নম্বর ট্র্য়াক করে নিজামাবাদ রেল স্টেশন থেকে তাঁকে পাকড়াও করা হয় ৷ এই ঘটনা ঘটে গত 28 অগস্ট ৷ স্ত্রীর কাছে বড় মেয়েকে দেখতে না-পেয়ে তার সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে শুরু করেন গুরুনাথম ৷ পুলিশও দুর্গাভবানীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ৷
প্রথমে দুর্গাভবানী দাবি করেন, তাঁদের বড় মেয়ের শরীর ভালো ছিল না ৷ তাই তাকে এক আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি ৷ একইসঙ্গে, প্রেমিক শ্রীনুকেই সেই আত্মীয় বলে পরিচয় দেন ওই গৃহবধূ ! আর তাতেই সন্দেহ হয় গুরুনাথমের ৷ কারণ, এত দিন দুর্গাভবানীর এমন কোনও আত্মীয়ের কথা তাঁর জানা ছিল না ৷ এরপর ফের পুলিশের দ্বারস্থ হন গুরুনাথম ৷ পুলিশ দুর্গাভবানী ও তাঁর প্রেমিক শ্রীনুকে গ্রেফতার করে ৷ তাঁদের জেরা করতেই সামনে আসে খুনের ঘটনা ৷