বারাণসী, 8 জানুয়ারি: 22 জানুয়ারি রাম জন্মভূমি অযোধ্যায় প্রাণ প্রতিষ্ঠা হবে রামলালার ৷ তারই অপেক্ষায় এখন দেশজুড়ে ৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজের হাতে রামলালার মূর্তি নিয়ে গিয়ে গর্ভগৃহে স্থাপন করবেন । পুজোর জন্য কাশী থেকে যাচ্ছেন 50 জন ব্রাহ্মণ ৷ দেখে নিন অনুষ্ঠানের সূচি ৷
রামলালার সঙ্গে কতোটা সময় থাকবেন মোদি: রামলালার মূর্তি স্থাপনের জন্য সময় ধার্য করা হয়েছে মাত্র 84 সেকেন্ড। এমন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পুজো মণ্ডপ থেকে গর্ভগৃহের 300 মিটার দূরত্ব 25 সেকেন্ডের মধ্যে হেঁটে যাবেন এবং রামলালাকে গর্ভগৃহে স্থাপন করবেন। কিন্তু এত কম সময়ে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার কাজ কী করে সম্পন্ন হবে, তা জানতে চায় সবাই । এই প্রসঙ্গে ইটিভি ভারতের সঙ্গে কথা বললেন পণ্ডিত লক্ষ্মীকান্ত দীক্ষিত এবং তাঁর ছেলে পণ্ডিত সুনীল দীক্ষিত ৷ তাঁরা পুরো পুজোর অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করবেন ৷
পুজোর জন্য বরাদ্দ সময়: কাশীর ব্রাহ্মণরা জানিয়েছেন, পুজো ও প্রাণ প্রতিষ্ঠা প্রক্রিয়া 40 মিনিটের মধ্যে সম্পন্ন হবে ৷ তবে গর্ভগৃহে মূর্তি প্রতিষ্ঠার জন্য শুধুমাত্র 84 সেকেন্ডের সময় পাওয়া যাবে, যা ভারতের উন্নতির জন্য সর্বোত্তম । অতএব এই 84 সেকেন্ডের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রামলালাকে গর্ভগৃহে নিয়ে যাবেন এবং ষোড়শপচার পুজোর মধ্য দিয়ে মূর্তিটি স্থাপন সম্পন্ন হবে ।
প্রাণ প্রতিষ্ঠায় এতজন ব্রাহ্মণ থাকবেন
এই পুজোর জন্য কাশী থেকে 50 জন পণ্ডিত যাচ্ছেন অযোধ্যায় ৷ যার মধ্যে পাঁচজন পণ্ডিত কুণ্ড প্রস্তুত করতে দু'দিন আগে অযোধ্যায় পৌঁছে যাবেন ৷ পাঁচজন বাদে বাকি পণ্ডিতরা 14 এবং 15 তারিখে কাশী থেকে অযোধ্যায় চলে যাবেন । এই গোটা পুজো প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেবেন 85 বছর বয়সি পণ্ডিত লক্ষ্মীকান্ত দীক্ষিত ৷ বাবাকে সাহায্য করতে ছেলে পণ্ডিত সুনীল দীক্ষিতও উপস্থিত থাকবেন সেখানে। পণ্ডিত সুনীল লক্ষ্মীকান্ত দীক্ষিত এই পুরো প্রক্রিয়া সম্পর্কে এবং কীভাবে 84-সেকেন্ডের শুভ সময়ে প্রধানমন্ত্রী মোদী পূজা করবেন সে সম্পর্কে বলেছিলেন যে যে কোনও
এইভাবে শুরু হবে প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠান
প্রথমে ধ্যান দিয়ে পুজোর শুরু হবে । ভগবান রামের ধ্যান করা হবে । তাকে ফুল দেওয়া হবে । এরপর প্রভুর আসনে ফুল দেওয়া হবে । রামলালার পা ধোয়ার পর তাকে জল দেওয়া হবে ৷ তারপর আগুনের পাত্রে জল দেওয়ার পর মুখে জল দেওয়া হবে । একটি শিশুর জন্মের পর যেমন মধু দেওয়া হয়, ঠিক সেভাবেই ভগবান রামকে মধু দেওয়া হবে । এরপর তিনি স্নান করবেন । তারপর প্রভুর ষোড়শপচার পুজো সম্পন্ন হবে । প্রায় 20 মিনিটের মধ্যে এই পুজা শেষ হবে । 84 সেকেন্ডের পুজোটি প্রধানমন্ত্রী একটি প্রতীকী পুজো হিসেবে পালন করবেন ।
প্রাণ প্রতিষ্ঠার শুভ মহরত
পন্ডিত সুনীল দীক্ষিত জানান, স্থাপনা পুজোর জন্য 84 সেকেন্ডের শুভ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে, যা অভিজিৎ মুহুর্ত । এই মুহুর্ত 12:29 মিনিট 8 সেকেন্ড থেকে শুরু হবে ৷ 12:30 মিনিট 32 সেকেন্ড পর্যন্ত চলবে । এই শুভ সময়টি নির্ধারণ করেছেন বারাণসীর জ্যোতিষী পণ্ডিত গণেশ্বর শাস্ত্রী দ্রাবিড় । এই মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীর আগমনের পর তাঁর হাতেই ভগবান রামলালা স্থাপিত হবে ৷ এই সময়ের মধ্যে স্থাপনের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ।
রামলালাকে হাতে নিয়ে পুজোয় অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রথমে রাম মন্দিরে পৌঁছবেন এবং তারপরেই পুজো শুরু হবে । ইতিমধ্যে পুজোর প্রক্রিয়া চলছে । প্রায় 20 মিনিটের পুজো শেষ করার পরে প্রধানমন্ত্রী মোদি ভগবান রামকে হাতে নিয়ে গর্ভগৃহে প্রবেশ করবেন । এর আগে 17 তারিখ ভগবান রামের বড় মূর্তি স্থাপনের কাজ শেষ হয়ে যাবে ।
এই মন্ত্রে ভগবান রামের প্রাণ প্রতিষ্ঠা হবে
22 জানুয়ারি 84 সেকেন্ডের এই বিশেষ মুহুর্তে প্রধানমন্ত্রী ভগবান রামের শিশু রূপ নিয়ে গর্ভগৃহে যাবেন এবং তারপরে ওম ব্রহ্মা বিষ্ণু প্রতিষ্ঠার বিশেষ মন্ত্র উচ্চারণ করবেন । মহেশ্বরঃ ঋষিভ্যো নমঃ শিরসি । ঋগ্যজুঃ সমাচ্ছন্দেভ্যো নমঃ মুখে । প্রাণশক্তিয় নমঃ হৃদয়ায়...মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে 84 সেকেন্ডে রামলালার প্রতিষ্ঠা সম্পন্ন হবে ।
প্রাণ প্রতিষ্ঠার শুভ মহরত এই জন্য গুরুত্বপূর্ণ
পণ্ডিত লক্ষ্মীকান্ত দীক্ষিত বলেছেন, "84 সেকেন্ডের মুহরত খুব ছোট । এই শুভ সময়টি ভারতের অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে । তাই এই শুভ সময়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির হাত ধরে রামলালাকে স্থাপনের কাজটি করতে হবে ।" পণ্ডিত সুনীল দীক্ষিতের কথায়, 17 জানুয়ারি থেকে পুজো প্রক্রিয়া শুরু হবে ৷ তবে ভগবান রামলালার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রায় 40 মিনিটের পুজো 22 জানুয়ারি শেষ হবে । প্রথম পুজো শুরুর পর চলবে হবন ইত্যাদি । প্রধানমন্ত্রীর আগমনের পরে মূর্তি স্থাপন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে ৷ এরপরে 20 মিনিটের জন্য পুনরায় পুজো হবে ৷ তারপর মহা আরতি করা হবে, যা গর্ভগৃহে প্রভু রামের প্রতিষ্ঠার পরে প্রথম মহা আরতি হবে।
আরও পড়ুন: