নয়াদিল্লি, 16 জানুয়ারি: ভারত-সহ এশিয়ার অনেক দেশে থাবা বসিয়েছে প্রাণঘাতী নিপা ভাইরাস ৷ এবার এই ভাইরাসের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য প্রথম মানব ভ্যাকসিনের পরীক্ষা শুরু করলেন যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা ৷ 18 থেকে 55 বছর বয়সি 51 জনের মধ্যে ChAdOx1 NipahB ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে হবে ৷ আগামী 18 মাস ধরে চলবে এই ট্রায়াল ৷ যার নেতৃত্বে থাকবে অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন গ্রুপ ৷ নিপা ভাইরাস একটি মারাত্মক রোগ ৷ এটি প্রায় 75 শতাংশ মানুষের ক্ষেত্রে গুরুতর হতে পারে বলে গবেষকরা জানাচ্ছেন ।
সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, বাংলাদেশ এবং ভারত-সহ এশিয়ার দেশগুলিতে নিপা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে ৷ সম্প্রতি গত বছরের সেপ্টেম্বরে কেরলে নিপা ভাইরাসে আক্রান্তের হদিশ মিলেছে ৷ গবেষকদের মতে, নিপা ভাইরাস বাদুড়ের থেকে ছড়ায় এবং সংক্রামিত প্রাণীর যেমন শূকর বা ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি থেকে সংক্রামিত হতে পারে ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে ভাইরাসটির উপর গুরুত্ব আরোপ করেছে এবং জরুরি গবেষণার প্রয়োজন বলে জানানো হয়েছে ৷ হু বলেছে, এই ভাইরাস প্যারামাইক্সোভাইরাসের একই পরিবারের অন্তর্গত হামের মতো আরও সুপরিচিত প্যাথোজেনের অংশ । মালেশিয়া এবং সিঙ্গাপুরে 25 বছর আগে নিপা ভাইরাসের প্রথম প্রাদুর্ভাব দেখা গিয়েছিল ৷ তবে বর্তমানে এই ভাইরাসের জন্য কোনও অনুমোদিত ভ্যাকসিন বা চিকিৎসা নেই । অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের নফিল্ড মেডিসিন বিভাগের প্রধান তদন্তকারী ব্রায়ান অ্যাঙ্গাস বলেছেন,"নিপা ভাইরাস প্রথম 1998 সালে শনাক্ত করা হয়েছিল এবং 25 বছর ধরে বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্প্রদায়ে এখনও এই মারাত্মক রোগের জন্য কোনও অনুমোদিত ভ্যাকসিন বা চিকিৎসা নেই ৷"
তিনি জানান, উচ্চ মৃত্যুর হার এবং নিপা ভাইরাসে সংক্রমণের প্রকৃতির কারণে রোগটিকে একটি অগ্রাধিকার মহামারী প্যাথোজেন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে ৷ এই ভ্যাকসিন ট্রায়াল স্থানীয় প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধ করতে পারে ৷ বিশ্বকে ভবিষ্যত বৈশ্বিক মহামারীর জন্য প্রস্তুত করতে সহায়তা করার পাশাপাশি এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হবে । সিইপিআই-এর ভ্যাকসিন গবেষণা ও উন্নয়নের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক এবং ট্রায়ালের অর্থদানকারী ইন-কিউ ইউন বলেছেন, নিপা মহামারি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, এর ফ্রুট ব্যাট হোস্ট দুই বিলিয়নেরও বেশি লোকের বাড়িতে পাওয়া যায় । এই ট্রায়ালটি প্রাণঘাতী ভাইরাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেওয়ার প্রচেষ্টায় এক ধাপ এগিয়েছে । অর্জিত জ্ঞান অন্যান্য প্যারামিক্সোভাইরাস প্রতিরোধ ব্যবস্থার বিকাশকেও জানাতে পারে ৷"
আরও পড়ুন: